বিপিএলের নবাগত দল দুর্দান্ত ঢাকা। আর তাদের দুর্দান্ত শুরুতে পাত্তাই পেলো না বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। বিপিএলের দশম আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে চার বারের চ্যাম্পিয়নদের ৪ উইকেটে হারিয়েছে ঢাকা। এদিনে শুরুতে কুমিল্লাকে ১৪৩ রানে থামিয়ে দেয় তারা। জবাবে খেলতে নেমে ৩ বল আগেই ৫ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় মোসাদ্দেক হোসেনের দল। গ্যালারি ভর্তি দর্শকের সামনে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি কুমিল্লার। দলটির নতুন অধিনায়ক লিটন দাস প্রথম ম্যাচটা স্মরণীয় করতে পারেননি। ১৬ বলে ১৩ রান করে শ্রীলংকার চতুরঙ্গা ডি সিলভার বলে ক্যাচ দেন তিনি। এরপর বড় এক জুটি পায় কুমিল্লা। তাওহীদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে কুমিল্লাকে তিনবার অধিনায়ক হিসেবে চ্যাম্পিয়ন করা ইমরুল কায়েস দলের হয়ে হাল ধরেন। ইমরুল হাফ সেঞ্চুরি তোলেন। সঙ্গে হৃদয়ের ব্যাটে বড় স্বপ্নই দেখছিল কুমিল্লা। কিন্তু হুট করেই ছন্দপতন হয় দলটি। দুজনের ১০৭ রানের জুটি ভাঙে ১৯তম ওভারে এসে। তাসকিন আহমেদের বলে ক্যাচ দেন তাওহীদ হৃদয়। ওই ওভারেই তিনি ফেরান ইমরুলকেও। দুই সেট ব্যাটারকে ফিরিয়ে দেওয়ার পর শেষ ওভার করতে আসেন শরিফুল ইসলাম। শুরুটা ভালো হয়নি তারও। প্রথম বলে কোনো রান না দিলেও পরের দুটিতেই ছক্কা হজম করেন তিনি। কিন্তু চতুর্থ বলে এসে খুশদিল শাহ ক্যাচ দেন শর্ট থার্ডম্যানে দাঁড়ানো তাসকিনের হাতে। এরপর টানা দুই বলে ক্যাচ তুলে দেন রোস্টন চেজ ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। বিপিএলের ইতিহাসে সপ্তম হ্যাটট্রিক হয়ে যায় শরিফুলের। লড়াই করার পুঁজি নিয়েও শেষ অবধি সেটি করতে পারেনি কুমিল্লা। মুশফিক হাসানের প্রথম তিন বল থেকেই দুই ছক্কা ও এক চারে ১৬ রান করে ফেলেন নাঈম শেখ। পাওয়ার প্লের ছয় ওভারে ৬০ রান করে ঢাকা, তখনও কোনো উইকেট হারায়নি। সেটি যতক্ষণে হারায়, ততক্ষণে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণের অনেকটাই চলে এসেছে তাদের হাতে। প্রথম ৯ ওভারেই ৭৭ রান তুলে ফেলা ঢাকার সামনে শেষ ১১ ওভারের দরকার ছিল আরও ৭৭ রান। মাঝে ৫ উইকেট হারালেও শেষ পর্যন্ত জয় পেতে কষ্ট হয়নি ঢাকার। ১৩তম ওভারে নাঈম শেখ ক্যাচ দেন তানভীর আহমেদের বলে। ৩ চার ও ৩ ছক্কার ইনিংসে ৪০ বলে ৫২ রান করেন নাঈম। আরেক ওপেনার দানুস্কা গুনাথিলাকা, তিনিও আউট হন তানভীরের বলে। ব্যাট হাতে গুনাথিলাকা ৪১ রান করলেও বলে খেলে ফেলেন ৪২টি। ১৬তম ওভারে মোস্তাফিজুর রহমানের প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে দেন ঢাকার ইরফান শুক্কুর। কিন্তু মিড অনে তার কাচ ফেলে দেন ফিল্ডার। ওই ওভারেই ক্রুসপুল (৫) বিদায় নেন উপরে তুলে মারতে গিয়ে। দৌড়ে এসে ক্যাচ নেন উইকেটকিপার লিটন। পরের দুই ওভারে মাত্র ১৩ রান নিতে পারেন সাইফ হাসান ও ইরফান শুক্কুর। ১৯তম ওভারে সাইফ হাসান (৭) কে বিদায় করেন খুশদিল। ওভারে ৯ রান আসে। ফলে শেষ ওভারে মাত্র ৪ রানের লক্ষ্য দাঁড়ায় ঢাকার সামনে। প্রথম বলেই ঢাকার অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেনকে রান আউটের সুযোগ ছিল বোলার মোস্তাফিজের সামনে। কিন্তু বল সময়মতো স্ট্যাম্পে লাগাতে পারেনি মোস্তাফিজ। শেষ ওভারের প্রথম বলে লেগ বাই থেকে ১টি রান পায় ঢাকা। পরের বলেই অবশ্য ইরফানের (২৪) উইকেট তুলে নেন মোস্তাফিজ। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। তৃতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে ঢাকার জয় নিশ্চিত করেন চতুরঙ্গা ডি সিলভা। এর আগে বিপিএলের দশম আসরের প্রথম দিনে দর্শকদের সাড়া ছিল বেশ ভালো।
টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। এরপর বেলুন উড়ানো হয়, স্মোক কালার বোম ফাটানো হয়। মিনিট দশেকের সাদামাটা আয়োজনে শুরু হয় বিপিএল।