কাপ্তাই উপজেলার লোকালয়ে বন্য হাতির বিচরণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। প্রায় প্রতিদিন বন্যহাতি উপজেলার কোথাও না কোথাও হানা দিচ্ছে। বন্যহাতির আক্রমণের শিকার হয়ে কাপ্তাইয়ে গত এক মাসে ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। একজন মারাত্মক আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। সর্বশেষ গতকাল বন্যহাতি উপজেলার কাপ্তাই শিল্প এলাকায় আক্রমণ চালায়। বন্যহাতির তাণ্ডবে বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএফআইডিসি) এর আবাসিক এলাকার ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
বিএফআইডিসি কাপ্তাই ইউনিটের মহাব্যবস্থাপক তীর্থ জিৎ রায় বলেন, বন্যহাতি তার আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়ে কয়েকটি ঘর বাড়ি এবং অন্যান্য স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি করে। বিএন স্কুল এন্ড কলেজের উপাধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর আলম জানান, কাপ্তাই নৌবাহিনী সড়কের উপর বন্যহাতি ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকছে। সন্ধ্যার পর চলাচল বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। কাপ্তাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ আজাদীকে বলেন, গত ২ বছরে কাপ্তাইয়ে বন্যহাতির আক্রমণের শিকার হয়ে কমপক্ষে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। লোকালয়ে বন্যহাতির বিচরণের কারণে মানুষের স্বাভাবিক চলাচল প্রায় থমকে পড়েছে। বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. আবু সুফিয়ান বন্যহাতির আক্রমণের শিকার হয়ে সমপ্রতি অংশেহ্লা মারমা (১৪) নামক এক স্কুল ছাত্রের মর্মান্তিক মৃত্যু হয় বলে জানান। এছাড়াও হাতির আক্রমণে চাইসুই অং মারমা (৫৪) নামক এক ব্যক্তি মারাত্মক আহত হন বলে জানান। সর্বশেষ হাতির দল বাংলাদেশ বনশিল্প উন্নয়ন কর্পোরেশনের বিভিন্ন স্থাপনার ব্যাপক ক্ষতি করে বলেও তিনি জানান। বন্যহাতির আক্রমণে কেউ মারা গেলে নিয়ম অনুযায়ী তাকে ৩ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবার সরকারি নিয়ম রয়েছে। আহত ব্যক্তি এবং সম্পদ ক্ষতি হলেও নিয়ম অনুযায়ী ক্ষতি পূরণের ব্যবস্থা রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বন্য হাতি কিন্তু লোকালয়ে যাচ্ছে না। বন্যহাতি তার নিজস্ব এলাকাতেই বিচরণ করছে। কিন্তু মানুষ বন্য হাতির আবাস স্থলে এসে বসতি গড়ে তুলেছে বলে তিনি জানান। বন্য হাতি এখন খাবারের সঙ্কটে ভুগছে। একটি হাতি দৈনিক প্রায় সাড়ে তিন মন খাবার খায়। প্রচুর পরিমাণে পানি খায়। কিন্তু বনে হাতির খাবার পাওয়া যাচ্ছে না বলেও তিনি জানান।