বিএনপিসহ যেসব দল নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনে রয়েছে, তারা মত পাল্টে ভোটে আসতে চাইলে এবং সেই আগ্রহের কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানালে আলোচনা করে সুযোগ তৈরির সম্ভাবনার কথা বলেছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। নির্বাচন কমিশনার রাশেদা সুলতানা গতকাল সোমবার নির্বাচন ভবনে নিজের দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, নিশ্চয় আমরা আলোচনা করব। সিদ্ধান্ত নেব। উনারা সিদ্ধান্ত নিলে, আসতে চাইলে অবশ্যই আমরা ওয়েলকাম করব। কখনোই চাইব না যে উনারা আসতে চেয়েছেন, আমরা ফিরায়ে দেব–এটা হবে না। খবর বিডিনিউজের।
আগামী ৭ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। সেই সূচি অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া যাবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত, বাছাই হবে ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর। তার তিন সপ্তাহ পর হবে ভোটগ্রহণ। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের পর ১৮ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ হবে। সেক্ষেত্রে মনোনয়নপত্র জমার জন্য ১৪ দিন সময় দেওয়া হয়েছে এবং প্রচারের জন্য ১৯ দিন সময় রয়েছে। ভোটের ৪৮ ঘণ্টা আগে প্রচার শেষ করতে হয়। অর্থাৎ ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত ভোটের প্রচার চালানোর সুযোগ থাকবে।
তফসিল ঘোষণার পর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলেও বিএনপি এবং সমমনা দলগুলো হরতাল–অবরোধের মতো কর্মসূচিতে রয়েছে। তাদের দাবি, বর্তমান সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে এবং নির্বাচন হতে হবে নির্দলীয় সরকারের অধীনে।
দেরিতে হলেও বিএনপি যদি ভোটে ফিরতে চায়, তাদের জন্য তফসিল পরিবর্তনের কথা ইসি বিবেচনা করবে কিনা, তা জানতে চেয়েছিলেন একজন সাংবাদিক। জবাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে রাশেদা সুলতানা বলেন, দেখেন, যদি ফিরতে চায়, আমার জানামতে পূর্বেও উনারা একটু পরেই এসেছিলেন এবং সুযোগটা পেয়েছিলেন। উনারা যদি ফিরতে চান, কীভাবে কী করা যাবে, নিশ্চয় আমরা আলোচনা করব। সিদ্ধান্ত নেব। উনারা সিদ্ধান্ত নিলে, আসতে চাইলে অবশ্যই আমরা ওয়েলকাম করব।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, উনারা যদি আসেন আমরা কমিশনাররা বসব। আইন–কানুন দেখব। তারপর যেটা সিদ্ধান্ত হয়, অগ্রিম কিছু বলতে পারব না। এলে তো বিবেচনা করবই। অবশ্যই করব। আমরা তো চাই সব দল এসে একটা সুন্দর নির্বাচন হোক।
২০১৮ সালের নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ওই নির্বাচনে কিন্তু উনাদের জন্য একটু স্পেস তৈরি করা হয়েছিল। যেভাবে আইনে আছে, সেভাবেই করা হবে। আমি ডিটেইল আর কিছু বলব না।… উনারা এলে আমরা ওয়েলকাম করব। এটার জন্য আইন অনুযায়ী যেভাবে পথ সৃষ্টি করতে হবে, সেভাবে করব। কিন্তু আগেই বলব না।
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর গত করবর্ষের আয়কর রিটার্ন দাখিলেরও শেষ দিন। সে কারণে তফসিল পুনঃনির্ধারণের দাবি জানিয়েছে সংসদের প্রধান বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। এ বিষয়ে রাশেদা সুলতানা বলেন, এই বিষয়টাতে আমরা কিছুই বলব না। অগ্রিম বলার সময় এখনো আসে নাই। যখন আসবে, যেটা হবে সেটাই বলব। পরিস্থিতি যখন আসবে, পরিস্থিতি দেখে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের সুযোগ এখনও আছে বলে মনে করেন তিনি।