ডাচদের রেকর্ড ব্যবধানে হারালো অস্ট্রেলিয়া

বিশ্বকাপে দ্রুততম সেঞ্চুরি ম্যাক্সওয়েলের

ক্রীড়া প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার , ২৬ অক্টোবর, ২০২৩ at ৭:০৫ পূর্বাহ্ণ

বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকাকে থামিয়ে দিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল নেদারল্যান্ডস। আশা করা হয়েছিল অস্ট্রেলিয়াকেও কিছু একটা হয়তো করে বসবে। না, তা হয়নি। উল্টো নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বকাপ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পরাজয়ের লজ্জা পেতে হয়েছে নেদারল্যান্ডকে। অজিদের কাছে ডাচরা হেরেছে ৩০৯ রানে।

৪০০ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা খুব একটা মন্দ হয়নি ডাচদের। দুই ওপেনার ম্যাক্স ও’ ডড এবং বিক্রমজিৎ সিং শুরু করেন ভালোভাবেই। ৪ ওভারে রান উঠেছিল ৭ এর ওপরে। তবে অতটুকুই ছিল। ৫ম ওভারে ম্যাক্সকে সরাসরি বোল্ড করে ধ্বংসযজ্ঞের শুরু করেন মিচেল স্টার্ক। ৯ রান আর এক ওভার পর আবার উইকেটের পতন। ম্যাক্সওয়েলের দুর্দান্ত রানআউটে সাজঘরে ফেরেন বিক্রমজিৎ। ১০ রান পর আরও একবার উইকেটের পতন। এবার অধিনায়ক কলিন অ্যাকারম্যান ফিরে যান জশ হ্যাজেলউডের বলে লেগ বিফোরের শিকার হয়ে। আর ৫৩ রানে নির্ভরযোগ্য বাস ডি লিড আউট হলে ডাচদের পরাজয় হয়ে যায় সময়ের ব্যাপার। ৫৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ম্যাচে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি নেদার‌্যলান্ডকে।

সাইব্যান্ড অ্যাঙ্গেলব্রাখট, তেজা নিদামানুরু কেউই টিকতে পারেননি এমন বোলিং তোপের সামনে। ৮৪ থেকে ৯০ এই ৬ রান তুলতেই শেষ ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে ডাচরা। মাঝে হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন লেগস্পিনার অ্যাডাম জাম্পা। যদিও শেষ পর্যন্ত হতাশই হতে হয়েছে তাকে। ডাচদের ইনিংসে বিক্রমজিৎ সিং ছাড়া ২০ এর বেশি রান করতে পারেননি কেউই। শেষ পর্যন্ত মাত্র ৯০ রানেই অলআউট হয়ে ৩০৯ রানের পরাজয় বরণ করতে হয় তাদের। এটি বিশ্বকাপের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, এবং ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে ৩য় সর্বোচ্চ ব্যবধানে পরাজয়। এর আগে দিল্লিতে টস জিতে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ওয়ার্নারম্যাক্সওয়েলের রেকর্ডরাঙা সেঞ্চুরিতে ভর করে নির্ধারিত ওভার শেষে ৮ উইকেটে ৩৯৯ রানের পাহাড় গড়ে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। শুরুটা ভালো ছিল না অস্ট্রেলিয়ার। দলীয় ২৮ রানেই প্রথম উইকেট হারায় তারা। ব্যক্তিগত ৯ রানে ভ্যান বেইকের শিকার হন পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান ওপেনার মিচেল মার্শ। দ্রুত উইকেট হারানোর ধাক্কা সামলে ডেভিড ওয়ার্নার এবং স্টিভেন স্মিথের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় অস্ট্রেলিয়া। স্টিভ স্মিথ ৬৮ বলে ব্যক্তিগত ৭১ রানে ফিরলেও অন্য প্রান্তে ঝড় তোলেন ওয়ার্নার। পাকিস্তানের বিপক্ষে রেকর্ড ১৬৩ রানের পর নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষেও তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছালেন অজি এই তারকা ওপেনার। মাত্র ৯১ বলে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২২ তম সেঞ্চুরি তুলে নেন। সেঞ্চুরির পথে একাধিক রেকর্ডও গড়েছেন ওয়ার্নার। চতুর্থ অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেটার হিসেবে বিশ্বকাপে টানা সেঞ্চুরি পেলেন তারকা এই ওপেনার। অবশ্য সেঞ্চুরির পর বেশিক্ষণ ক্রিজে থিতু হতে পারেননি ওয়ার্নার। লগান ভ্যান ভিকের বলে আরিয়ান দত্তের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরার আগে করেছেন ৯৩ বলে ১০৪ রান। ওয়ার্নারের বিদায়ের পর সব আলো কেড়ে নেন ম্যাক্সওয়েল। একের পর এক চারছয়ে ডাচ বোলারদের দুঃস্বপ্নই উপহার দিয়েছেন তিনি। ইনিংসের একেবারে শেষ দিকে ৪০ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন ম্যাক্সওয়েল। বাস ডি লিডের বলে ছক্কা মেরে করেন বিশ্বকাপের নতুন রেকর্ড। ভেঙ্গে দেন এইডেন মার্করামের রেকর্ডকেও। চলতি বিশ্বকাপে শ্রীলংকার বিরুদ্ধে এই দিল্লিতেই ৪৯ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন মার্করাম। তবে সেই রেকর্ড টিকলো কেবল ১৮ দিন। ম্যাক্সি ঝড়ে শেষ ১০ ওভারে অস্ট্রেলিয়া তুলে নেয় ১৩১ রান। ডাচদের বিপক্ষে শেষ পর্যন্ত ৩৯৯ রান জমা করে অজিরা। ম্যাচ সেরা হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার গ্লেন ম্যাক্সওয়েল।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপ্রেমিকার সাথে ঝগড়া, ট্রেনের নিচে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
পরবর্তী নিবন্ধ৪৫ কোটি টাকায় চার লেন হচ্ছে শেখ হাসিনা সড়ক