আশা জাগিয়েও হারল পাকিস্তান

ক্রীড়া প্রতিবেদক | শনিবার , ২১ অক্টোবর, ২০২৩ at ৫:১১ পূর্বাহ্ণ

অস্ট্রেলিয়ার বিশাল রানের চাপায় পড়েও আশা জাগিয়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠলো না তারা। অস্ট্রেলিয়ান বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও পাকিস্তানি মিডল অর্ডারদের ব্যর্থতায় পাকিস্তানকে ৬২ রানে হারালো অস্ট্রেলিয়া। অস্ট্রেলিয়ার ৩৬৭ রানের জবাবে পাকিস্তান ৩০৫ রানেই থেমে যায়। অথচ শুরুটা দারুণ করেছিল পাকিস্তানের দুই ওপেনার আবদুল্লাহ শফিক ও ইমাম উল হক। ১২৭ বলে ১৩৪ রান তুলে দেন এ দু’জন। অবশেষে শফিকের আউটে ভাঙ্গে এই জুটি। মার্কাস স্টয়নিসকে পুল করতে গিয়ে সহজ ক্যাচ তুলে দেন শফিক। ৬১ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলেন এই পাকিস্তানি ওপেনার। আরেক ওপেনার ইমাম উল হককেও শিকার করেন স্টয়নিস। ৭১ বলে ইমাম করেন ৭০। দুই সেট ব্যাটার ফেরার পর বাবর আজমের ওপর ভরসা ছিল। কিন্তু অ্যাডাম জাম্পার নিচু হয়ে যাওয়া বল পুল খেলতে গিয়ে কামিন্সের দারুণ এক ক্যাচ হয়েছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। বাবর আজমের আউটের পর পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেন মোহাম্মদ রিজওয়ান ও সৌদ শাকিল। ৪৮ বলে ৫৭ রানের একটি জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটসম্যান। যখন মনে হচ্ছিল উইকেটে টিকে গেছেন তারা ঠিক তখনই আঘাত হানেন প্যাট কামিন্স। কামিন্সের একটি বাউন্সার পুল করতে গিয়ে স্টয়নিসের হাতে ধরা পড়েন এই বাঁ হাতি ব্যাটসম্যান। ২৩২ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ক্রিজে আসেন ইফতিখার আহমেদ। ৩৭ তম ওভারে কামিন্সের এক ওভারে ২টি ছক্কা হাকান এই ইফতিখার। ধুমধারাক্কা ব্যাটিং করা ইফতিখারকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন জাম্পা। জাম্পার বল পায়ে লাগলে আম্পায়ার নট আউটের সিদ্ধান্ত দেন। অস্ট্রেলিয়া রিভিউ নিলে দেখা যায়, বল আগে প্যাডে লেগে ব্যাটে লেগেছে এবং স্ট্যাম্পেই আঘাত হেনেছে। ২০ বলে ২৬ রান করে দলকে ২৬৯ রানে রেখেই বিদায় নেন ইফতিখার। আরেক প্রান্তে আগলে ছিলেন রিজওয়ান। কিন্তু তিনিও ইফতিখারের আউটের পর বেশিক্ষণ স্থায়ী হননি। সেই জাম্পার একটি দুর্দান্ত ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়ে বিদায় নেন। ৪০ বলে ৪৬ রান করেছিলেন রিজওয়ান। কার্যত তখনই শেষ হয়ে যায় পাকিস্তানের ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা। মোহাম্মদ নাওয়াজের ১৬ বলে ১৪ রান কেবল হারের ব্যবধানই কমিয়েছে পাকিস্তানের। তিনিও জাম্পার বলে স্টাম্পড আউট হন। শেষ পর্যন্ত ৪৫.৩ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ৩০৫ রান করে পাকিস্তান।

অস্ট্রেলিয়ার হয়ে জাম্পা ৪টি, স্টয়নিস ও কামিন্স ২টি, হাজেলউড ও স্টার্ক ১টি করে উইকেট পান। বেঙ্গালুরুতে টস জিতে অস্ট্রেলিয়াকে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ জানানোই যেন কাল হয়েছে পাকিস্তানি অধিনায়ক বাবর আজমের। ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নার আর মিচেল মার্শের ওপেনিং জুটি ভাঙতেই ঘাম ঝরে পাকিস্তানি বোলারদের। তাদের জোড়া সেঞ্চুরিতে ভর করে ৯ উইকেটে ৩৬৭ রানের বড় পুঁজি গড়ে অস্ট্রেলিয়া। ওপেনিংয়ে ৩৩.৪ ওভারে ২৫৯ রান পেয়ে যায় অস্ট্রেলিয়া। মারকুটে ব্যাটিংয়ের সঙ্গে জোড়া সেঞ্চুরিও তুলে নেন মিচেল মার্শ আর ডেভিড ওয়ার্নার। এই ম্যারাথন ওপেনিং জুটিটি ভাঙেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। শর্ট ফাইন লেগে উসামা মীরের হাতে ক্যাচ দেন মার্শ। ১০৮ বলে ১২১ রানের ইনিংসে ১০টি বাউন্ডারি আর ৯টি ছক্কা হাঁকান মার্শ। এটি তার ক্যারিয়ারসেরা ইনিংসও। বিধ্বংসী ওপেনিং জুটি ভাঙার পরের বলে আরও একটি উইকেট তুলে নেন শাহিন আফ্রিদি। মিডঅনে তুলে মারতে গিয়ে বাবর আজমের ক্যাচ হন গ্লেন ম্যাঙওয়েল (১ বলে ০)। শেষের দিকে দুর্দান্ত বোলিং পাকিস্তানের, আরেক ব্যাটিং স্তম্ভ স্টিভেন স্মিথকেও থিতু হতে দেননি উসামা মীর। লেগস্পিন বলে ফিরতি ক্যাচ বানিয়ে ফেরান ডানহাতি এই ব্যাটারকে ()। অল্প সময়ের মধ্যে ৩টি উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২১তম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া ওয়ার্নার তার ইনিংসটি বড় করেছেন বেশ। ৪৩তম ওভারে এসে অবশেষে এই বিধ্বংসী ব্যাটারকে সাজঘরের পথ দেখান হারিস রউফ। তবে ওয়ার্নার ততক্ষণে দেড়শ পেরিয়ে তার ব্যক্তিগত সংগ্রহকে নিয়ে যান ১৬৩ রানে। ১২৪ বলের মারকুটে ইনিংসে ১৪ বাউন্ডারির সঙ্গে ৯টি ছক্কা হাঁকান এই ওপেনার। পাকিস্তানের সবচেয়ে সফল বোলার শাহিন শাহ আফ্রিদি। ১০ ওভারে ৫৪ রান দিয়ে একাই নেন ৫টি উইকেট। ৩ উইকেট শিকার হারিস রউফের। ম্যাচ সেরা হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ডেভিড ওয়ার্নার। অস্ট্রেলিয়া এবং পাকিস্তান চার খেলা শেষে চার পয়েন্ট পেয়েছে। দুটি দলেরই ২টি করে জয় এবং ২টি করে হার আছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডেঙ্গু আক্রান্ত ছাড়াল আড়াই লাখ
পরবর্তী নিবন্ধএক বছর আগের চড়ের প্রতিশোধ নিতে হামলা