চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা ও স্থায়ী বহিষ্কারের আশ্বাস দিয়েছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার।
আজ মঙ্গলবার (২০ জুন) দুপুরে চবির প্রশাসনিক ভবনের সামনে প্রতিবাদী মানববন্ধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন তিনি।
এর আগে দুপুর ১টা থেকে চবি’র বঙ্গবন্ধু চত্ত্বরের সামনে মানববন্ধন করে চবি সাংবাদিক সমিতি।
সংগঠনের প্রচার, প্রকাশনা ও দপ্তর সম্পাদক মোহাম্মদ আজহারের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন চবিসাসের সাবেক সভাপতি সৈয়দ বাইজিদ ইমন, ইমরান হোসাইন।
বর্তমান সভাপতি মাহবুব এ রহমান, সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম, নবাব আব্দুর রহমান ও সমিতির সদস্য মারজান আক্তার।
মানববন্ধন থেকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়ে চবিসাস সভাপতি মাহবুব এ রহমান বলেন, “চবিতে সাংবাদিকদের উপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা নতুন নয়। বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হওয়ায় ছাত্রলীগ দিনে দিনে আরও বর্বর হয়ে উঠছে। একজন কিডনি রোগীর ওপর এমন বর্বরোচিত হামলার বিচার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিশ্চিত না করলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।”
চবিসাস সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু বলেন, “চাকসু’র অবর্তমানে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকরা শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করছে। সেই সাংবাদিকরাই যদি ক্যাম্পাসে অনিরাপদ হয়, তাহলে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউই নিরাপদ নয়। এর আগেও সাংবাদিক মারজান আক্তারের উপর হামলার ঘটনায় বিচার নিশ্চিত করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের জন্য লজ্জাজনক।”
তিনি আরও বলেন, “সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদ একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। যারা দেশের জন্য জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেছে, আজ তাদের সন্তানরাই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপদ না। তাই সাংবাদিকদের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।”
মানববন্ধন শেষে চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার বলেন, “আমার শিক্ষার্থীর ওপর হামলা হয়েছে। আমি এর বিচার করবই। দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নিবো। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর অথবা নিরাপত্তা প্রধান বাদী হয়ে মামলা করবেন এবং জড়িতদের স্থায়ী বহিষ্কার করা হবে।”
এর আগে গতকাল সোমবার (১৯ জুন) রাতে চবিসাস-এর সদস্য সাংবাদিক দোস্ত মোহাম্মদের ওপর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বর্বরোচিত হামলা হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে চবিসাস।
আজ মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে চবিসাস সভাপতি মাহবুব এ রহমান ও সাধারণ সম্পাদক ইমাম ইমু এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
অভিযুক্তরা হলেন শাখা ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক খালেদ মাসুদ ও উপ-দপ্তর সম্পাদক আরাফাত রায়হানসহ ১০-১২ জন ছাত্রলীগ কর্মী।
অভিযুক্ত চবি ছাত্রলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী খালেদ মাসুদ এর আগে ২০২১ সালেও শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কৃত হয়েছিলেন।
মানববন্ধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।