আসন্ন বর্ষাকে সামনে রেখে নগরের খাল নালা থেকে উত্তোনের পর মাটি স্থানান্তরের জন্য সাড়ে ৫৮ লাখ টাকায় পাঁচটি ডাম্প ট্রাক ভাড়া নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এ বিষয়ে ই–জিপি’র (ইলেক্ট্রনিক গর্ভমেন্ট প্রকিউরমেন্ট) মাধ্যমে দরপত্র আহবানে ফাইল বা নথি অনুমোদন হয়। এতে স্বাক্ষর করেন সিটি মেয়র ও প্রধান নির্বাহীও। তবে অনুমোদিত ওই নথিতে ‘ই–জিপি’ কেটে দিয়ে ‘অফ লাইন’ লিখে দেন যান্ত্রিক শাখার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো.আকবর আলী। এমনকি ই–টেন্ডারের পরিবর্তে তিনটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে অফলাইনে দরপত্রও আহ্বান করেন তিনি।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর গতকাল ওই তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো.আকবর আলীকে কারণ দর্শানো নোটিশ দেয়া হয়। এতে স্বাক্ষর করেন চসিকের প্রধান প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম।
নোটিশে বলা হয়, চসিকের আওতাধীন বিভিন্ন খাল, নালা–নর্দমা থেকে মাটি বা আবর্জনা উত্তোলন কাজের জন্য ই–জিপি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৩ কিউবিক মিটার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন দুইটি স্কেভেটর এবং খাল, নালা–নর্দমা থেকে মাটি স্থানান্তরের জন্য ৫ টন ধারণ ক্ষমতা ডাম্প ট্রাক ভাড়া নেয়ার নথি অনুমোদিত হয়। উভয় নথিতে ই–জিপি কেটে অফললাইন লিখে দেন এবং তিনটি পত্রিকায় অফলাইনে এ দরপত্র আহবান করেন। যা সিটি কর্পোরেশন শৃক্সখলার পরিপন্থি এবং অপরাধ। এ বিষয়ে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা তিন কার্যদিবসের মধ্যে জানানোর জন্য প্রকৌশলী মো. আকবর আলীকে নির্দেশনা দেয়া হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য আকবর আলীকে মোবাইল ফোনে কল দিলেও রিসিভ করেননি। জানা গেছে, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ডাম্প ট্রাক ভাড়ার বিষয়ে নথি অনুমোদন হয়। ওই নথিতে উল্লেখ করা হয়, স্থানীয় বাজার দর অনুযায়ী একটি ডাম্প ট্রাকের ভাড়া প্রতিদিন ৮ কর্মঘণ্টা হিসেবে ১৩ হাজার টাকা। ওই হিসেবে ৯০ দিনের জন্য পাঁচটি ডাম্প ট্রাকের ভাড়া (ভ্যাট, ট্যাক্স ও আয়করসহ) সাড়ে ৫৮ লাখ টাকা।
এদিকে ই–জিপির পরিবর্তে অফলাইনে গত ৩ মার্চ দরপত্র আহবান করা হয়। এতে দুইটি স্কেভেটর ভাড়ার জন্য নিরাপত্তা জামানত চাওয়া হয় ৭০ হাজার টাকা। ওই হিসেবে স্কেভেটর এর প্রাক্কলন আরো ২৫ থেকে ৩০ লাখ টাকা হতে পারে বলে জানান চসিকের এক প্রকৌশলী।
উল্লেখ্য,পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬ এর ধারা ৬৭ এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা ২০০৮ এর বিধি–১২৮ অনুসরণে প্রণীত এবং জারীকৃত ইলেকট্রনিক গভর্নমেন্ট প্রকিউরমেন্ট (ই–জিপি) নির্দেশমালা’ মেনে সরকারী তহবিলের অর্থ দ্বারা যে কোনো পণ্য, কার্য বা সেবা ক্রয়ের ক্ষেত্রে ই–জিপি পদ্ধতি ব্যবহারে সরকারি নির্দেশনা রয়েছে।