বিয়ের ৪ মাসের মাথায় চন্দনাইশে গৃহবধূর আত্মহত্যা

চন্দনাইশ প্রতিনিধি | সোমবার , ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৭:২৮ অপরাহ্ণ

চন্দনাইশে মুনতাহিনা (২০) নামে এক গৃহবধূ বিয়ের মাত্র ৪ মাসের মাথায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। গতকাল রবিবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে শ্বশুরবাড়ির নিজ শয়ন কক্ষে সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস লাগান তিনি।

খবর পেয়ে চন্দনাইশ থানা পুলিশ আজ সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা ১১টার সময় ঝুলন্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে। মুনতাহিনা একটি খাতায় ১০ পৃষ্ঠা জুড়ে চিরকুট লিখলেও তার মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি। চিরকুটে তিনি সবার কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

স্থানীয়ভাবে জানা যায়, উপজেলার বরকল ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড পাঠানদন্ডি এলাকার প্রবাসী সাজ্জাদ হোসেন ইমনের সাথে পটিয়া উপজেলার আশিয়া ইউনিয়নের জহিরুল হকের মেয়ে মুনতাহিনার সাথে ৪ মাস আগে সামাজিকভাবে বিয়ে হয়।

বিয়ের ২ মাসের মাথায় প্রবাসে নিজ কর্মস্থলে ফিরে যান সাজ্জাদ। সাজ্জাদের পিতা মোহাম্মদ ওসমানও থাকেন প্রবাসে। সেই সূত্রে মুনতাহিনা ও তার শাশুড়ি মমতাজ বেগম (৫৫) ছাড়া বাড়িতে কেউ থাকত না।

সম্প্রতি মুনতাহিনা পটিয়ার বাবার বাড়িতে বেড়াতে যায়। ঘটনার দিন রবিবার দুপুরে তিনি বাবার বাড়ি থেকে বরকলের পাঠানদন্ডির শ্বশুরবাড়িতে আসেন। রাতে যথারীতি শুয়ে পড়েন মুনতাহিনা ও তার বৃদ্ধা শাশুড়ি। রাতের যেকোনো সময় তিনি শয়ন কক্ষের সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না বেঁধে গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়েন।

সকালে বিষয়টি পরিবারের লোকজন স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানকে জানালে তিনি চন্দনাইশ থানা পুলিশকে অবহিত করেন।

তিনি জানান, সাজ্জাদ বিয়ে করেছে মাত্র ৪ মাস আগে। বিয়ের ২ মাসের মাথায় সে প্রবাসে নিজ কর্মস্থলে চলে যায়। সেখানে তার পিতা মোহাম্মদ ওসমানও থাকেন। বাড়িতে থাকেন শুধু তার বৃদ্ধ মা মমতাজ বেগম ও স্ত্রী মুনতাহিনা। খবর পেয়ে সকাল ১১টার দিকে চন্দনাইশ থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে।

চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন জানান, গৃহবধূ মুনতাহিনা মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল। তিনি একটি খাতায় ১০ পৃষ্ঠার চিরকুটে লিখেছেন তার কিছুই মনে থাকে না, সবকিছু ভুলে যান, তিনি কারো বোঝা ও সমস্যা হয়ে থাকতে চান না, সবাই তাকে পছন্দ করলেও তিনি কাউকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না। সবাই তাকে যেন মাফ করে দেয় এই জাতীয় ১০ পাতার একটি চিরকুট লিখে যান তিনি।

ওসি জানান, তার স্বামী, শ্বশুর প্রবাসে থাকেন। বাড়িতে শুধু তার শাশুড়ি ও তিনি থাকতেন। ধারণা করা হচ্ছে মানসিকভাবে ডিপ্রেসানে ভুগছিলেন তিনি। আজ সোমবার বেলা ১১টায় তার মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়।

এ ব্যাপারে চন্দনাইশ থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করা হয়েছে বলেও জানান ওসি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবান্দরবানে গোলাগুলিতে নিহত কেএনএফ সদস্যের মরদেহ হস্তান্তর
পরবর্তী নিবন্ধচবি উপাচার্যের দপ্তরে ভাঙচুর, শাটল ট্রেন বন্ধ করল ছাত্রলীগ