চট্টগ্রাম চেম্বারের সাথে ভারতের দিল্লির কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির (সিআইআই) মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বিকেলে আগ্রাবাদ ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে আয়োজিত সভায় ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সিআইআই’র পরিচালক অমিত কুমার। অনুষ্ঠানে চেম্বারের পক্ষে চট্টগ্রামের ব্যবসা ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম সম্পর্কিত একটি এবং ভারতীয় প্রতিনিধিদলের পক্ষে ক্লাস্টার ডেভেলাপমেন্ট ও এমএসএমই সাপোর্টের উপর দুটি আলাদা তথ্যচিত্র উপস্থাপন করা হয়।
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্প্রতি ভারত সফরে সিআইআই’র সাথে অনুষ্ঠিত সভায় এসএমই এবং অ্যাগ্রো প্রোডাক্টস ক্লাস্টার গ্রোথ ত্বরান্বিত করতে পারস্পরিক সহযোগিতার উপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করেন। চট্টগ্রাম চেম্বারে সিআইআই’র সফর এসএমই এবং অ্যাগ্রো প্রোডাক্টস ক্লাস্টার গ্রোথের প্রেক্ষাপটে উভয় দেশের ব্যবসায়ীদের মাঝে নতুন মাত্রার সম্পর্ক স্থাপন করবে। চট্টগ্রামকে রিজিওনাল ট্রেড এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ডেস্টিনেশনে রূপান্তরিত করতে বর্তমান সরকারের উদ্যোগে এ অঞ্চলে অবকাঠামো উন্নয়নের বিপ্লব সাধিত হচ্ছে। মাহবুবুল আলম ভারতে অনুষ্ঠিত বিভিন্ন এঙিবিশনে বাংলাদেশের এসএমই শিল্পের জন্য ডেডিকেটেড স্পেস রাখাসহ বেসরকারি খাতে দেশের সর্ববৃহৎ চট্টগ্রাম আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় ভারতীয় ব্যবসায়ীদের অংশগ্রহণের জন্য সিআইআই’র প্রতিনিধিদলকে আহ্বান জানান। কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক অমিত কুমার বলেন, দুই দেশের মধ্যে এসএমই খাতে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে এই সফর। এর মাধ্যমে প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার মাধ্যমে উৎপাদন বাড়ানো এবং ম্যানুফ্যাকচারিং ব্যয় কমানোর উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি। ভবিষ্যতে এ ধরনের অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে উভয়দেশের এসএমই ও অ্যাগ্রো খাতকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন অমিত কুমার।
ভারতের সহকারী হাইকমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন বলেন, বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা ভারতসহ এই অঞ্চলের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পারস্পরিক সহযোগিতা ও নির্ভরশীলতা উভয় দেশের জন্যই দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা প্রদান করবে। বাংলাদেশ ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম রপ্তানি গন্তব্য এবং স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণ কমপ্রেহেন্সিভ ইকোনমিক পার্টনারশীপ এ্যাগ্রিমেন্ট (সেপা)’র ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। তিনি বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশসমূহের কানেক্টিভিটি বৃদ্ধির উপর গুরুত্বারোপ করেন। এছাড়া চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ব্যবহারের জন্য চুক্তি দ্রুত বাস্তবায়নের আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের সদস্য সুরেন্দ্র শ্রীভাস্তাভা, সিদ্দিক আখতার, চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক অঞ্জন শেখর দাশ, চেম্বারের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ওমর হাজ্জাজ ও সাবেক পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, বিডা’র পরিচালক মোয়াজ্জেম হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক আশিফুল আলম, রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরোর সহকারী পরিচালক মোর্শেদুল হক, উইম্যান চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি’র সিনিয়র সহ-সভাপতি আবিদা মোস্তফা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজাউল করিম, ইউনিভার্সাল এগ্রো কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী মো. টিপু সুলতান শিকদার বক্তব্য রাখেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক মো. অহীদ সিরাজ চৌধুরী স্বপন এবং সংশ্লিষ্ট খাতের সেক্টরের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। এর আগে সকালে সিআইআই’র পরিচালক অমিত কুমারের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দলের সদস্যরা নগরীর কালুরঘাটে অবস্থিত বিসিক শিল্পনগরে কয়েকটি এসএমই প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।