২০৩০ সালের মধ্যেই ক্যান্সারের টিকা!

| মঙ্গলবার , ১৮ অক্টোবর, ২০২২ at ৫:১৪ পূর্বাহ্ণ

তুর্কী বংশোদ্ভুত জার্মান বিজ্ঞানী দম্পতি উগুর শাহিন এবং ওজলেম তুরেসি এবার ক্যান্সারের টিকা উদ্ভাবনের সম্ভাবনার কথা জানিয়ে বিশ্বকে আশার আলো দেখিয়েছেন।
এই দম্পতির নেতৃত্বেই জার্মানির প্রতিষ্ঠান বায়োএনটেক করোনাভাইরাসের টিকা আবিষ্কার করে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ফাইজারের সঙ্গে মিলে কোভিড-১৯ টিকা বাজারে আনে। বায়োএনটেক যে প্রযুক্তিতে কোভিড টিকা তৈরি করেছে সেই একই প্রযুক্তি এবার মানবদেহে ক্যান্সার সৃষ্টিকারী কোষ ধ্বংস করতে পুনরায় ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা। বলেছেন, বর্তমান দশকের শেষদিকেই ক্যান্সারের টিকা মানুষের হাতে পৌঁছাতে পারে। খবর বিডিনিউজের।
শাহিন-তুরেসি দম্পতি বায়োএনটেকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ফাইজারের সঙ্গে মিলে বায়োএনটেক যুগান্তকারী এমআরএনএ প্রযুক্তিতে কোভিড টিকা তৈরি করে। তারা বলেছেন, তারা এমন কিছু সাফল্য পেয়েছেন, যা আগামী বছরগুলোতে ক্যান্সারের টিকা উদ্ভাবনে তাদের আশা বাড়িয়ে দিয়েছে। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অধ্যাপক তুরেসি এমআরএনএ প্রযুক্তি পুনরায় ব্যবহার করে কীভাবে ক্যান্সারের টিকা উদ্ভাবন করা সম্ভব তা ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেছেন, এ প্রযুক্তি কিছুটা ভিন্নভাবে ব্যবহার করে তারা দেখেছেন, সেটি করোনাভাইরাসকে আক্রমণ করার পরিবর্তে ক্যান্সার কোষকে আক্রমণ করার জন্য দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে উদ্বুদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছে। এমআরএনএ প্রযুক্তি নির্ভর এই ক্যান্সারের টিকা কবে নাগাদ মানুষের হাতে পৌঁছাতে পারে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা ২০৩০ সালের আগেই মানুষের হাতে পৌঁছাবে।
কোভিড-১৯ মহামারী শুরুর আগে থেকেই ক্যান্সারের টিকা উদ্ভাবনে এমআরএনএ প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছিল বায়োএনটেক। কিন্তু বিশ্বজুড়ে মহামারীর কারণে তখন করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে টিকা উদ্ভাবনেই তাদেরকে অগ্রাধিকার দিতে হয়েছিল। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির তৈরি ক্যান্সারের বেশ কয়েকটি টিকার ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে বলে জানায় ‘দ্য গার্ডিয়ান’ পত্রিকা।
তুরেসি বলেন, ফাইজার/বায়োএনটেকের কোভিড টিকা নিয়ে কাজ এবং সাফল্য তাদের ক্যান্সারের টিকা নিয়ে কাজকে সহায়তা করছে। জার্মান প্রতিষ্ঠানটি অন্ত্রের ক্যান্সার, মেলানোমা এবং অন্যান্য ধরনের ক্যান্সার নিয়ে কাজ করছে। যদিও এখনও সামনে তাদের আরও কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। তুরেসি বলেন, মহামারীর মধ্যে তারা শিখেছেন কীভাবে আরও দ্রুত এমআরএনএ প্রযুক্তির টিকা তৈরি করা যায়। ওই সময়েই আমরা আরো ভালোভাবে বুঝতে পেরেছি কীভাবে মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এমআরএনএ প্রযুক্তিতে সাড়া দেয়। দ্রুত কোভিড টিকার উন্নয়ন এবং স্বল্প সময়ের মধ্যে সেগুলো মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া ওষুধ নিয়ন্ত্রকদের কীভাবে টিকার অনুমোদন নিয়ে কাজ করতে হয় তা শিখতেও সহায়তা করেছে। এটি নিশ্চিতভাবেই ক্যান্সারের টিকা নিয়ে আমাদের কাজকে আরও উন্নত করেছে। তারপরও ক্যান্সারের টিকার কাজ নিয়ে খুবই সতর্ক থাকতে চান তুরেসি। তিনি বলেন, বিজ্ঞানী হিসেবে আমরা সব সময়ই একথা বলা নিয়ে দ্বিধায় ভুগি যে, আমরা ক্যান্সারের প্রতিষেধক পেয়ে গেছি। আমরা বেশ কিছু সাফল্য পেয়েছি এবং এর ভিত্তিতে আমরা কাজ চালিয়ে যাব।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএসএমই ও অ্যাগ্রো খাতকে এগিয়ে নেয়ার প্রত্যয়
পরবর্তী নিবন্ধপ্রথম প্রস্তুতি ম্যাচেই হতাশা