বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ে নানা পরিকল্পনা নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। এর অংশ হিসেবে নগরের বিভিন্ন ‘বিলবোর্ড’ ও সাইনবোর্ডে বিদ্যুৎ ব্যবহার কমিয়ে আনা এবং সরকারি বিধি-বিধানের বাইরে চসিকের যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী গাড়ি ব্যবহার করছেন তাদের গাড়ি ব্যবহার থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। গতকাল সোমবার টাইগারপাসস্থ নগর ভবনের অস্থায়ী কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চসিকের বিভিন্ন স্থায়ী কমিটির সভার সিদ্ধান্ত ও অগ্রগতি পর্যালোচনা বিষয়ক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চসিকের যে সমস্ত কর্মকর্তা সরকারি বিধি বিধান অনুযায়ী গাড়ি ব্যবহার করতে পারবেন তাদের গাড়ি নিশ্চিত করা হবে। তবে যারা বিধিবিধানের বাইরে গাড়ি ব্যবহার করছেন তাদের গাড়ি দেয়া হবে না। এছাড়া ও জ্বালানি ব্যবহারের সাশ্রয়ী হওয়াসহ যেসব যানবাহন মেরামত যোগ্য তার তালিকা করে মেরামতের ব্যবস্থা করা এবং গাড়ি মেরামত করলেও ব্যবহারের উপযুক্ত নয় তা নিলামে বিক্রির জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সৌন্দর্যবর্ধন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত : সভায় সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য চসিক যে সকল প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে সেইসব চুক্তির মেয়াদ উর্ত্তীণ হলে তাদের চুক্তি বাতিল বলে গন্য করা ও সৌন্দর্য বর্ধনের নামে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে সৌন্দর্য হানি করেছে সেগুলো ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার লক্ষ্য অর্জনে কন্টেইনার সংখ্যা আরো বৃদ্ধি করা, নতুন কন্টেনার মুভার ক্রয় করা, ত্রুটিযুক্ত আবর্জনাবাহী গাড়ি দ্রুত মেরামত ও রং করে ব্যবহারের উপযোগী করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া পরিচ্ছন্ন বিভাগের বিগত ৬ মাসের বিভিন্ন কার্যক্রমের খতিয়ান ওয়ার্ড ওয়ারী আগামী এক মাসের মধ্য মেয়র বরাবরে উপস্থাপন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মেয়র যা বললেন : সভায় সিটি মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, নগরে যে সব বিলবোর্ড টাঙানো হয়েছে তা সিটি কর্পোরেশনের অনুমোদিত কীনা তা ক্ষতিয়ে দেখতে হবে। মেয়র বিলবোর্ডগুলোতে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যবহার হয় তা কমিয়ে আনাসহ সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পঁচিশ শতাংশ বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশনা দেন। তিনি বলেন, সিটি কর্পোরেশনের কার্যপরিচালনায় মিতব্যয়ী হতে হবে। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ ব্যবহার্য্য বিভিন্ন খাতে ব্যয় সংকোচন ও সাশ্রয়ী হওয়া সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, করোনার ধকল সামলে না উঠতেই ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে বিশ্বব্যাপী যে সংকট তৈরি হয়েছে। এই সংকট সমাধানের জন্য শুধুমাত্র স্বল্প মেয়াদী উদ্যোগ নিলে হবে না, প্রয়োজন দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা।
মেয়র সৌন্দর্যবর্ধনের নামে নগরের যেসব অপরিকল্পিত কাজ করা হয়েছে তা পরিহার করে নতুন উদ্যোগে নগরের সৌন্দর্যবর্ধনের উপর পরিকল্পনা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দেন।
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কাউন্সিলর মোবারক আলী, অধ্যাপক মো. ইসমাইল, ওয়াসিম উদ্দিন চৌধুরী, আব্দুস সালাম মাসুম, আব্দুল বারেক, মো. শাহেদ ইকবাল বাবু, গোলাম মোহাম্মদ জোবায়ের, সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার, ভারপ্রাপ্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মুহাম্মদ আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. আকবর আলী।