সৌর বিদ্যুৎ এর ব্যবহার বৃদ্ধি করুন

রূপম চক্রবর্ত্তী | সোমবার , ২৭ জুন, ২০২২ at ৫:২৩ পূর্বাহ্ণ

রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ এবং করোনার কারণে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যে আর্থিক সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তার থেকে অবশ্যই আমাদের উঠে আসতে হবে। জ্বালানি তেলের সংকট নিরসনের জন্য পরিবেশবান্ধব জ্বালানির উৎপাদন ও ব্যবহারে গ্রহণ করার মাধ্যমে সরকারের নেওয়া কর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে জৈব গ্যাস এবং সৌরশক্তির ব্যবহারের পাশাপাশি জ্বালানি সাশ্রয়ে উদ্বুদ্ধ করার চিন্তা নিয়েই আমাদের চলতে হবে। বর্তমানে কয়লা, তেল, গ্যাস ও পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি দৃশ্যমান। যার কারণে প্রতি বছর আমাদের দেশকে জ্বালানি তেল বাবদ প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় করতে হচ্ছে। এখন থেকে আমাদের মাথায় রাখতে হবে যদি আমরা বিদ্যুৎ কম অপচয় করি তাহলে আমরা কম জ্বালানি তেল কিনলে হবে যার প্রেক্ষিতে আমাদের দেশের আর্থিক সচ্ছলতা আসবে। বিদ্যুৎ এর অপচয় রোধ করার অনুপ্রেরণা দেওয়ার পাশাপাশি নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনে সহায়তা করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানির উৎসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনা রয়েছে সৌরশক্তি থেকে উৎপন্ন বিদ্যুতের। সূর্যরশ্মির আলো ও তাপকে ব্যবহার করা হচ্ছে বিদ্যুৎ উৎপাদনে।

এর ফটোইলেকট্রিক ইফেক্টকে কাজে লাগিয়ে ফটোভোল্টাইক কোষের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করার পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয় গত শতাব্দীতে। ১৯৮০ সালের দিকে উদ্ভাবিত এই প্রক্রিয়া ব্যবহার করে সূর্যের তাপকে কন্সেন্ট্রেটেড সোলার পাওয়ারে রূপান্তরিত করে পানিকে বাষ্প ও বাষ্প দিয়ে টারবাইন ঘুরিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের কৌশল এখন অনেক জনপ্রিয়। বোরো ধানের জন্য পানি সেচের দরকার হয়। ডিজেল এবং বিদ্যুৎ এর সাহায্যে পানি উত্তোলন করা হয়। এক্ষেত্রে যদি সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের সাহায্য পানি সেচের ব্যবস্থা করা হয় তাহলে অনেক জ্বালানির সাশ্রয় হবে। সৌর শক্তি একটি পরিচ্ছন্ন শক্তি। এটি বিকাশ ও ব্যবহার পরিবেশকে দূষিত করে না, প্রতি বছর পৃথিবীর পৃষ্ঠদেশে পৌঁছে যে সৌর বিকিরণ তা ১৩০ ট্রিলিয়ন টন কয়লার সমান হয়, যা বিশ্বে বৃহত্তম শক্তি হিসেবে উপগণিত হচ্ছে।

ভৌগোলিক সীমাবদ্ধতা ছাড়াই পৃথিবীতে সূর্যালোক জ্বলছে, ভূমি বা সমুদ্রের উপরে, উচ্চ পর্বত বা দ্বীপগুলি সর্বত্রই উন্নত এবং ব্যবহারযোগ্য, সংগ্রহ করা সহজ, এবং শোষণ ও পরিবহনের কোনো প্রয়োজন নেই। বর্তমানে জার্মানির ব্যবহৃত মোট জ্বালানির প্রায় ৩০ শতাংশ জোগান দেয় নবায়নযোগ্য সৌর ও বায়ুশক্তি।

জলবায়ু পরিবর্তন আর পরিবেশ নিয়ে উদ্বিগ্ন পুরো বিশ্ব। একদিকে উন্নত বিশ্বের কার্বন নির্গমণ অব্যাহত। আর অন্যদিকে দরিদ্র জাতিগোষ্ঠীর দুর্ভোগ আর ঝুঁকি। তবে এর বাইরেও নেওয়া হচ্ছে কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ। বিভিন্ন ইতিবাচক পদক্ষেপ দেশের জ্বালানি সমস্যার অনেক সমাধান করবে বলে মনে করছি। বাসাবাড়ি, শিল্প-কারখানার অব্যবহৃত ছাদে সোলার সিস্টেম স্থাপনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করা হচ্ছে। ছাদে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপন করা হলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষেত্রে নবায়নযোগ্য জ্বালানির অবদান বৃদ্ধি পাবে। প্রত্যেক ফ্ল্যাট বাড়ির ছাদে যেন সোলার সিস্টেমে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় তার জন্য ফ্ল্যাট মালিকদের মধ্যে উৎসাহ সৃষ্টি করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসড়ক দুর্ভোগ থেকে পরিত্রাণ চায় পিএমখালীবাসী
পরবর্তী নিবন্ধবর্ষাকথন