পেপারলেস ট্রেডের অংশ হিসেবে গত দুই বছর আগে চট্টগ্রাম কাস্টমসে ই–অকশন (অনলাইন নিলাম) কার্যক্রম চালু করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এই দুই বছরের মধ্যে ই–অকশন হয়েছে মাত্র ৪টি। অন্যদিকে ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে এই সময়ের মাসে অন্তত দুটি করে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিডাররা (নিলামে অংশগ্রহণকারী) বলছেন, ই–অকশনে সব কিছু অনলাইনে হওয়ার কথা থাকলেও এখনো ম্যানুয়াল পদ্ধতির মতো কাগজপত্র নিয়ে দৌঁড়াদৌঁড়ি করতে হচ্ছে। কেবল দরপত্র ড্রপিংটা (জমা দেয়া) অনলাইনে হচ্ছে। ফলে ই–অকশন ব্যবস্থায় অনেক বিডাররা আগ্রহ পাচ্ছেন না। বেশিরভাগই এখন ম্যানুয়াল পদ্ধতিতেই স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছেন।
কাস্টমসের নিলাম শাখা সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২০ সালের ২৭ ও ২৮ অক্টোবর ১৬ লট বিভিন্ন ধরণের পণ্য নিলামে তোলার মাধ্যমে ই–অকশনের যাত্রা শুরু হয়। এরপর ২০২১ সালের ১৯ ও ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় ২০ লট পেঁয়াজ নিলামে তোলা হয়। পরবর্তীতে গত বছরেরর ৩ ও ৪ নভেম্বর কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা বিলাসবহুল ১১২ লট গাড়ি তোলা হয়। সর্বশেষ গত ১২ ও ১৩ জুন দ্বিতীয় দফায় কার্নেট ডি প্যাসেজ বা শুল্কমুক্ত সুবিধায় আসা ১০৮টি গাড়ি পুনরায় নিলামে তুলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ফজলুল আমিন নামের এক বিডার জানান, ই–অকশন নিয়ে অনেক বিডারদের মধ্যে বিভ্রান্তি রয়েছে। এই ভয়ে অনেকে ই–অকশনে অংশ নিতে চান না। এছাড়া ই–অকশনে দরপত্র জমা দেয়ার পরেও দেখা যাচ্ছে, ঘুরে ফিরে আবারও ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে বাকি কাজ সম্পন্ন করতে হচ্ছে। তাই আমরা ই–অকশনের কোনো ধরনের সুফল পাচ্ছি না। উল্টো ভোগান্তির সম্মুখিন হচ্ছি। জানতে চাইলে চট্টগ্রাম কাস্টমস নিলাম ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ ইয়াকুব চৌধুরী দৈনিক আজাদীকে বলেন, ম্যানুয়াল পদ্ধতির নিলামে আমরা দরপত্রের সাথে পে–অর্ডারও জমা দিয়ে থাকি। কিন্তু ই–অকশনে কাস্টমসের ওয়েবসাইটে পে–অর্ডারের নম্বর, ব্যাংকের নাম ও টাকার অংক উল্লেখ করতে হচ্ছে। এখন কেউ যদি সর্বোচ্চ বিড করার পরে কোনো পণ্য ই–অকশনে পেয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে তিনি যদি পে–অর্ডার জমা না দেন, সেক্ষেত্রে পুরো নিলাম পক্রিয়াই বাধাগ্রস্ত হবে। এক্ষেত্রে কাস্টমস হয়তো আইনগত ব্যবস্থা নেবে, এতে সাধারণ বিডারদের ভোগান্তি পোহাতে তবে এটি নিশ্চিতভাবে আমরা বলতে পারি। এ বিষয়ে জানার জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমসের উপ–কমিশনার (নিলাম শাখা) আলী রেজা হায়দারকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।