বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী বলেছেন, চট্টগ্রামের কেএফডি জুট মিলস লিমিটেডের উৎপাদিত পাটপণ্য বিদেশে রপ্তানি শুরুর মাধ্যমে পাটখাত আবার পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশন (বিজেএমসি) মিলসমূহ বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হওয়া এসব মিলে নতুন করে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে রাঙ্গুনিয়ায় কেএফডি জুট মিলস লিমিটেডের মিলটি বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় লিজ পাওয়া প্রতিষ্ঠান ইউনিটেক্স জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের উৎপাদন কার্যক্রম পরিদর্শনকালে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামের কেএফডি জুট মিলস লিমিটেডকে ইউনিটেক্স জুট ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের কাছে ভাড়াভিত্তিক ইজারা দেওয়া হয়। কেএফডি জুট মিলটি বর্তমানে ৪০০ শ্রমিকের মাধ্যমে দৈনিক গড়ে ১০ টন পাটপণ্য উৎপাদন করছে। ইউনিটেক্স জুট ইন্ডাস্ট্রিজ এ পর্যন্ত ১৩০ টন পাটজাতপণ্য ভিয়েতনাম, তিউনিশিয়া ও চীনে রপ্তানি করছে। এছাড়াও প্রায় ৬০০ টন পাটপণ্যের অর্ডার শিপমেন্টের অপেক্ষায় আছে। ইউনিটেক্স জুট ইন্ডাস্ট্রিজ আরো দুটি উৎপাদন ইউনিট আধুনিকায়নের মাধ্যমে চালু করতে যাচ্ছে। ফলে প্রচলিত ও বহুমুখী পাটপণ্য মিলে দৈনিক গড়ে ১০০ টন পণ্য উৎপাদন করা সম্ভব হবে। আশা করছি, এখানে ৩৫০০ লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
পরিদর্শন শেষে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী মিল প্রাঙ্গনে আয়োজিত সুধী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন। এসময় তিনি বলেন, ইজারা দেওয়া সরকারি পাটকল কেমন চলছে দেখতে এসেছি। বেসরকারি উদ্যোক্তারা পাটের ভবিষ্যৎ কার্যক্রম এগিয়ে নিতে পারবে কিনা সেটাই প্রত্যক্ষ করলাম। এখানে বেশ কর্মচাঞ্চল্য দেখছি। শ্রমিকদের কানে কানে জানতে চেয়েছি তারা কেমন আছে। মালিক শ্রমিক মিলে মিল চালালে, মালিকবান্ধব শ্রমিক ও শ্রমিকবান্ধব মালিক হলে মিল ভালো চলে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বলেন, পাকিস্তান আমলে পাট ছিল প্রধান আয়ের উৎস, পাটের সুদিন ফিরছে, পাটের সুতা তৈরি হচ্ছে। পাট রপ্তানির সব আয় ডলারে হবে, শতভাগ ভ্যালু অ্যাডিশন হবে। কৃষক যখন পাট রোপণ করছে, সেটি একেকটি ডলার। পাটকড়ির চারকোল রপ্তানি করছি। পাট ও পাটকড়ি দুটি রপ্তানি হচ্ছে। তিনি বলেন, কারখানার প্রতি ভালোবাসা থাকলে উন্নতি হবে। মেশিনকে ভালোবাসতে হবে, শ্রমিককে ভালোবাসতে হবে। মেশিন মায়ের সমান, মেশিনকে আদর করতে হবে। একটি বেয়ারিং ভাঙলে দ্রুত না বদলালে পুরো মেশিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে নিরবচ্ছিন্ন উৎপাদন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, বস্ত্র ও পাট সচিব মো. আব্দুর রউফ, ইউনিটেক্স গ্রুপের সিএফও মো. আরিফ, জিনেস কো অর্ডিনেটর সাকিব আহমেদ সিদ্দিকী, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদার, ইউপি চেয়ারম্যান জহির আহমদ চৌধুরীসহ ইউনিটেক্স গ্রুপের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।