গুরুতর অপরাধ নয় এমন আসামির ক্ষেত্রে প্রবেশন বিধি অনুসরণের নির্দেশ

পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট কনফারেন্স

আজাদী প্রতিবেদন | রবিবার , ১৩ মার্চ, ২০২২ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

‘পূর্বের মামলা নেই এবং কোনো গুরুতর অপরাধে অভিযুক্ত নয়’ এমন আসামির ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটদের দ্য প্রবেশন অব অফেন্ডারস অ্যাক্ট ১৯৬০-এর বিধানাবলী অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম। গতকাল শনিবার সকালে আদালতের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ ম্যাজিস্ট্রেট কনফারেন্সে তিনি এ নির্দেশ দেন।
মো. রবিউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কনফারেন্সে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মুহাম্মদ আবদুল হালিম, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের স্পেশাল মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) তাহমিনা আফরোজ চৌধুরী, চসিকের স্পেশাল ম্যাজিস্ট্রেট (যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ) মনীষা মহাজন, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমান ও সারোয়ার জাহান। জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়া উদ্দিন। পুলিশের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন এডিসি (প্রসিকিউশন) মো. কামরুল হাসান, এডিসি (ক্রাইম) মো. জহিরুল ইসলাম, সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. কামরুল হাসান ও নগরীর সকল থানার অফিসার ইনচার্জ।
কনফারেন্সে পিবিআইয়ের (চট্টমেট্রো) পক্ষে এডিশনাল এসপি মো. জুনায়েত কাউছার, র‌্যাব-৭ এর পক্ষে এডিশনাল এসপি মো. আবুল খায়ের ফকির, সিআইডির পক্ষে সহকারী পরিচালক আব্দুছ ছালাম মিয়া, সিনিয়র জেল সুপার মো. শফিকুল ইসলাম খান, চমেক হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আবদুল মন্নান, ফরেনসিক মেডিসিনের প্রভাষক ডা. এস কে ধর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (মেট্রো) সহকারী পরিচালক মোমেন মন্ডল ও প্রবেশন অফিসার পারুমা বেগম উপস্থিত ছিলেন।
কনফারেন্সের শুরুতে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. রবিউল আলম বিগত সভার সিদ্ধান্তসমূহ বাস্তবায়নের অগ্রগতি তুলে ধরে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারাধীন মামলাসমূহের সুষ্ঠু বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালনের জন্য ম্যাজিস্ট্রেট ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিভিন্ন ধরনের দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
তিনি বলেন, ফৌজদারী কার্যবিধি ১৮৯৮-এর ৬১ ধারা মোতাবেক যাতায়াতের সময় বাদ দিয়ে সর্বোচ্চ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে উপস্থাপন করতে হবে। জালিয়াতির মামলাগুলোতে দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ৪৬৩ এবং ৪৬৪ ধারার উপাদান আকৃষ্ট করে কিনা তা সঠিকভাবে দেখতে হবে। মানবদেহে আঘাত সংক্রান্ত অপরাধসমূহে মূল ভিকটিমকে যাতে সাক্ষী করা হয়, সঠিক ধারায় যেন মামলা লিপি করা হয় এবং বিভিন্ন পরোয়ানা জারির ক্ষেত্রে আরো তৎপর হওয়ার জন্য তিনি বিভিন্ন থানা থেকে আগত অফিসার ইনচার্জদের নির্দেশনা প্রদান করেন।
চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দ্রুততা ও দক্ষতার সাথে আইনের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিল, যথাসময়ে মামলার সাক্ষী উপস্থাপন নিশ্চিত করে তাদের নিরাপত্তা বিধান করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে কার্যকর ভূমিকা পালনের অনুরোধ করেন।
কনফারেন্সে উপস্থিত ম্যাজিস্ট্রেটগণ মামলার সাথে জব্দতালিকা প্রেরণ, খসড়া মানচিত্রে ঘটনাস্থল সুনির্দিষ্টকরণ, সাক্ষীর ১৬১ ধারার জবানবন্দি লিপিবদ্ধের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন, সাক্ষীর ওয়ারেন্টের প্রতিবেদন প্রেরণের ওপর জোর দেন। এ সময় ম্যাজিস্ট্রেটগণ যথাসময়ে সাক্ষী উপস্থাপনে পুলিশ বিভাগ ও স্বাস্থ্য বিভাগের ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে সাক্ষীর উপস্থিতি পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং মামলা নিষ্পত্তির হার বৃদ্ধি পাওয়ায়, বিশেষত পুরাতন মামলা অধিক হারে নিষ্পত্তি হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন। এছাড়া বক্তারা দ্রুত গ্রেপ্তারী পরোয়ানা তামিল ও সমন জারীর ব্যবস্থা গ্রহণ, তদন্ত কার্যে বিদ্যমান সমস্যা সমাধান, তদন্তে দীর্ঘসূত্রতা পরিহার, হয়রানি বন্ধ, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট ও ডাক্তারি সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন, নকলখানা হতে স্বল্পতম সময়ে নকল সরবরাহের ব্যবস্থা করা, মামলার আলামত সংরক্ষণ ও সঠিক নিয়মে নিষ্পত্তি, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি ও নিষ্পত্তিকৃত নথি দ্রুত রেকর্ডরুমে প্রেরণ, আদালত ও বিচার সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ নানা বিষয়ে তাদের মতামতসমূহ কনফারেন্সে তুলে ধরেন। গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে অভিযোগপত্র দেয়ার আগে পাবলিক প্রসিকিউটরের মতামত নেয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেন মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর। অন্যদিকে সঠিক ধারায় মামলা রুজু এবং তদন্তের ক্ষেত্রে আরো যত্নবান হওয়ার জন্য বলেন আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমসজিদে হামলা, শিশুসহ মৃত ৮০ অভিযোগ রাশিয়ার বিরুদ্ধে
পরবর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে ১৫ উপজেলায় করোনায় নতুন আক্রান্ত নেই, শহরে ৩ জন