‘বড় হয়ে গেছি’ বলে চলে গেল নাঈম

ক্লিনারের হাতে গাড়ি

| বৃহস্পতিবার , ২৫ নভেম্বর, ২০২১ at ১১:১৫ পূর্বাহ্ণ

বাবার কাছে কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বেরিয়ে আর ফেরা হল না নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থী নাঈম হাসানের। গতকাল বুধবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে গুলিস্তান হল মার্কেটের সামনে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ময়লার ট্রাকের ধাক্কায় প্রাণ হারান ১৭ বছরের এই তরুণ। নটর ডেম কলেজে তিনি উচ্চ মাধ্যমিকে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। কামরাঙ্গীরচর ঝাউলাহাটিতে নিজ বাড়িতে তিনি পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। দুই ভাইয়ের মধ্যে নাঈম ছিলেন ছোট। খবর বিডিনিউজের।
ডিএসসিসির পরিবহন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে চাপা দেওয়া ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) সেই ময়লার গাড়ির চালক রাসেল (২৬) আসলে কর্পোরেশনের নিয়োগপ্রাপ্ত কোনো চালক নন। তিনি একসময় ডিএসসিসির ক্লিনার হিসেবে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে চাকরি করতেন। এখন তার সেই ক্লিনারের চাকরিটিও নেই। তিন বছর আগে রাসেল যখন ক্লিনার হিসেবে কাজ করতেন, তখন তিনি কর্পোরেশনের ময়লার গাড়ি চালাতেন। এরপর তার চাকরি চলে গেলেও গাড়ি চালানো বন্ধ হয়নি।
নাঈমের মৃত্যুর খবর শুনে হাসপাতালে ছুটে আসেন বাবা শাহ আলম। ছেলের লাশের সামনে দাঁড়িয়ে বিলাপ করে তিনি বলছিলেন, বাবা আর নটর ডেমে যাবে না! চলে গেল আমাকে ছেড়ে! আজ সকালেও আমাকে বলছিল, বাবা কলেজে যাইতে আর টাকা দেওয়া লাগবে না, আমি তো বড় হয়ে গেছি। সহপাঠী নিহত হওয়ার পর ঢাকার গুলিস্তানে সড়ক অবরোধ করেন নটর ডেম কলেজের শিক্ষার্থীরা। পরে বিকাল ৫টার দিকে শিক্ষকরা এসে নিয়ে যান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকদের কথায় অবরোধ তুলে নেওয়ার আগে তারা নিহত সহপাঠী নাঈম হাসানের পরিবারের ভরণপোষণের দাবি জানান।
পল্টন থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন বলেন, রাস্তা পার হওয়ার সময় ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের একটি ময়লার গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর আহত হয়েছিলেন নাঈম। এ ঘটনায় সিটি করপোরেশনের ওই গাড়ি চালককে আটক করে গাড়িটি জব্দ করা হয়েছে।
এদিকে এই দুর্ঘটনা তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআদালতে মামুনুলের মুখোমুখি ঝর্ণা
পরবর্তী নিবন্ধমাঠ ছাড়ছেন না আওয়ামী লীগের চার বিদ্রোহী