করোনা সংক্রমণের চলতি গতি-প্রকৃতি দেখে সামনে করুণ অবস্থার শঙ্কা প্রকাশ করেছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তার মধ্যেই সরকার কোরবানির ঈদের কারণে লকডাউন তুলে নেওয়ায় পরিস্থিতি জটিল রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কিত এখন তারা।
গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. মো. রোবেদ আমিন নিয়মিত বুলেটিনে বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করে, এই বিধি-নিষেধ শিথিল করা সাপেক্ষে আমাদের সংক্রমণ বৃদ্ধি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
গত কয়েকদিনের মতো এদিনও ১২ হাজারের বেশি কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়েছে দেশে, মারা গেছে দুই শতাধিক। জুলাইয়ের শুরু থেকে আক্রান্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড হচ্ছে। করোনা মহামারীর বছর গড়ানোর পর এখনই বাংলাদেশ সবচেয়ে বিপর্যস্ত অবস্থা মোকাবেলা করছে। খবর বিডিনিউজের।
ভারতে উদ্ভূত করোনা ভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের স্থানীয় সংক্রমণ ঘটার পর গত মার্চের শেষ ভাগ থেকে দেশে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। ডা. রোবেদ আমিন গত ১১ জুলাই বলেছিলেন, সংক্রমণ এখনও বেড়েই চলেছে। অনেক মানুষ মারা যাচ্ছে, হাসপাতালের সমস্ত খালি বেড পূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে যদি আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারি, পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ হয়ে যাবে। তখন সবাই মিলে বিপদে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকবে।
সেই এক সপ্তাহের মধ্যেই ১৫ জুলাই থেকে নয় দিনের জন্য মহামারীর সব ধরনের বিধি-নিষেধ তুলে নিয়েছে সরকার। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি লকডাউন তুলে নেওয়ার বিপক্ষে ছিল।
কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ একদিন আগে বলেন, লকডাউনটা এখন এভাবে উঠিয়ে দিলে সবাই তো আবারও রাস্তাঘাটে বেরুবে, অফিস-আদালতে যাবে, গণপরিবহনে চড়বে, বাজারে যাবে। সব মিলিয়ে তো যত বেশি মানুষের মেলামেশা হবে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানা হবে না, সংক্রমণ তত বেশি বেড়ে যাবে। সেজন্য ঝুঁকিটা তো থেকেই যাচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর জোর দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।