মিথেন গ্যাস থেকেই মগবাজারে বিস্ফোরণ : তদন্ত কমিটি

হেলে পড়েছে পাশের ভবন ।। তিন জনের দেহের ৯০ শতাংশ দগ্ধ

আজাদী ডেস্ক | বুধবার , ৩০ জুন, ২০২১ at ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ

রাজধানীর মগবাজার এলাকায় ভবন বিস্ফোরণের ঘটনাটি মিথেন গ্যাস থেকে ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশের সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার ও তদন্ত কমিটির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এ কথা জানান। তিনি বলেন, গ্যাস ডিটেক্টর মেশিন ঘটনাস্থলে ১২-১৩ শতাংশ মিথেন গ্যাসের উপস্থিতি পেয়েছে। প্রাথমিকভাবে অনুমান করছি এখানে ভেতরেই কোনো গ্যাস চেম্বারে জমা হওয়া গ্যাস বাতাসের সংস্পর্শে এসে এক্সপ্লোসিভ মিকচার তৈরি করেছিল। এ কারণে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ঘটেছে। এখন আমরা গ্যাসের রুট (পথ) খুঁজে বের করা চেষ্টা করছি। কি কারণে এই বিস্ফোরণ ঘটেছে পরবর্তীতে তদন্ত শেষে তা বিস্তারিত জানানো হবে।
এমন ভয়াবহ বিস্ফোরণে ভবনের কোথাও পুড়ে যাওয়ার কোনো ছাপ নেই কেন? সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা একটি টেকনিক্যাল টার্ম। তবে কিছু না পোড়ার কারণ হচ্ছে, জমে থাকা গ্যাস যেদিকে ফাঁকা পাবে, সেদিক দিয়ে বেরিয়ে যাবে। আপনারা দেখেছেন, সামনের দিক দিয়ে অনেকটা ফাঁকা জায়গা রয়েছে, যে কারণে বিস্ফোরণের ওয়েভ সেদিক দিয়ে বেরিয়ে গেছে বলে অনুমান করছি। যদি বদ্ধ থাকতো তবে, হয়তো গ্যাস ওপরে উঠতো।
এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবুল বাশার বলেছেন, বিস্ফোরণস্থলের পূর্ব পাশের দোতলা ভবনটি হেলে পড়েছে বলে জানিয়েছে কারিগরি কমিটি। তিনি জানিয়েছেন, ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠা ভবনটিকে ঘিরে ভ্রাম্যমাণ নিরাপত্তা বেষ্টনী তৈরি করা হবে। একই সঙ্গে বিপদজনক ব্যানার টাঙিয়ে দেওয়া হবে।
কারিগরি কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এর মালিককে ভবনটি ভেঙে ফেলতে বলা হবে। আতঙ্ক জাগানো এই বিস্ফোরণে হতাহতের ঘটনায় ‘অবহেলার’ অভিযোগ এনে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা হয়েছে। গতকাল সকালে রমনা থানার এসআই রেজাউল করিম বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার সাজ্জাদুর রহমান জানান।
অপরদিকে বিস্ফোরণে দগ্ধ তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। মো. নুরুন্নবী (৩৫), ইমরান হোসেন (২৫) ও মো. রাসেল (২১) নামে এই তিনজনই ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আইসিইউতে রয়েছেন। ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, আইসিইউতে থাকা এই তিনজনের শরীরের ৯০ শতাংশই দগ্ধ। বলতে গেলে তারা এখন জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন। যেকোন মুহূর্তে খারাপ কিছু ঘটতে পারে।
বার্ন ইনস্টিটিউটে সাধারণ বেডে ভর্তি আছেন মো. জাফর আহামেদ (৬১) ও আবুল কালাম কালু (৩৩) নামে দুজন। তাদের সম্পর্কে সামন্ত লাল সেন বলেন, তাদের অবস্থা আগের মতো থাকলেও আশঙ্কাজনক নয়। তাদের চিকিৎসা চলছে। রিকভারি হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবেড়েই চলেছে সংক্রমণ
পরবর্তী নিবন্ধচবিতে চাঁদা না পেয়ে নির্মাণকাজ বন্ধের অভিযোগ ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে