একইভাবে হঠাৎকরে চলে গেলেন তিনি, আমাদের অত্যন্ত ঘনিষ্টজন চক্ষুবিজ্ঞানের চিকিৎসক, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চক্ষু বিভাগের প্রধান ডা. মাসুদ পাভেজ (৫৮)। মাসুদভাইয়ের এ অকালপ্রয়াণ বিনামেঘে বজ্রপাতের মতো। আকস্মিক এ মৃত্যুর ধাক্কা সবচে বেশি আঘাত হেনেছে তাঁর জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা ৮৩বছর বয়সী অশীতিপর বাবা ডা এখলাছ উদ্দিনের ওপর। সন্তানের এমন অকালমৃত্যু কোনো বাবার পক্ষে মেনে নেয়া অসম্ভব। কিছুদিন আগে হারিয়েছেন সহধর্মিনী রহিমা আক্তারকে। পুত্রহারার বেদনা সহ্য করার মতো শক্তি যেন তাঁর থাকে- স্রষ্টার কাছে সেই প্রার্থনা করছি। মুঠোফোনে ডা. এখলাছ কাকার সাথে প্রায় নিয়মিত কথা হয় আমার। গত ২০ এপ্রিল ছিল তাঁর ৮৩তম জন্মদিন। তাঁর জন্মদিনকে ঘিরে আমার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেজন্যে কাকা ফোনে আমাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। এ মুহূর্তে এখলাছ কাকাকে সান্ত্বনা দেয়ার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। বাবার মতো ডা. মাসুদ পারভেজও একজন সহজ-সরল সাদামনের মানুষ। আগাগোড়াই একজন নিরেট ভদ্রলোক। আত্মগরিমা ও অহঙ্কার বলতে কিছুই নেই। এখলাছ কাকাকে কখনো চিকিৎসা ফি দিতে পারিনি। ঠিক তেমনি তাঁর চিকিৎসকপুত্র মাসুদভাইকেও দেওয়া সম্ভব হয়নি। সীতাকুণ্ড কলেজ রোডে মাসুদভাইকে মঙ্গলবার ও শুক্রবারে আর দেখা যাবে না। চক্ষুরোগীরা পাবে না আর তাঁর চিকিৎসাসেবা। তাঁর মৃত্যুতে সীতাকুণ্ডবাসী হারালো তাদের এক কৃতীসন্তানকে, মেডিকেল শিক্ষার্থীরা হারালো তাদের প্রিয় মেধাবী শিক্ষককে আর চক্ষুরোগীরা হারালো তাদের একজন ভালো চিকিৎসককে।