দেশে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একদিনে আরও ১০২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখন পর্যন্ত এটিই একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু। এ নিয়ে টানা তিন দিন দৈনিক শতাধিক মানুষের মৃত্যু হলো। গত ২৪ ঘণ্টায় ১০২ জন নিয়ে মোট মৃত্যু হলো ১০ হাজার ৩৮৫ জনের। এর আগে শনি ও শুক্রবার ১০১ জন করে মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এদিকে, চলতি এপ্রিল মাসে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে ১৩৩৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর গত তিন দিনে মৃত্যু হলো মোট ৩শ ৪ জনের। গত তিন দিনের মৃত্যুহার বিবেচনা করলে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে প্রতি ১৫ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। আর এপ্রিল মাসের মৃত্যুহার বিবেচনা করলে কোভিড আক্রান্ত হয়ে এই মাসে প্রতি ১৮ মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে। খবর বিডিনিউজ ও বিবিসি বাংলার।
গত ৩১ মার্চ ৫২ জনের মৃত্যুর খবর দেয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এরপর থেকে দৈনিক মৃত্যু ৫০-এর নিচে নামেনি। গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩ হাজার ৬৯৮ জন নতুন রোগী শনাক্তের খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ নিয়ে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭ লাখ ১৮ হাজার ৯৫০ জনে দাঁড়াল। খবর বিডিনিউজের।
সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউয়ে গত কয়েক দিন ধরে দিনে ৬ হাজারের বেশি রোগী শনাক্ত হয়ে আসছিল। এর মধ্যে গত ৭ এপ্রিল রেকর্ড ৭ হাজার ৬২৬ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছিল। গত ২৪ ঘণ্টায় সেরে উঠেছেন ৬ হাজার ১২১ জন। তাদের নিয়ে সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ১৪ হাজার ৯৩৬ জন।
দেশে করোনার প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছর ৮ মার্চ। তা ছয় লাখ পেরিয়ে যায় গত ২৯ মার্চ। প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছরের ১৮ মার্চ প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। এ বছর ৩১ মার্চ তা নয় হাজার ছাড়িয়ে যায়। এরপর মাত্র ১৫ দিনে আরও এক হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হলো। জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় বিশ্বে শনাক্তের দিক থেকে ৩৩তম স্থানে আছে বাংলাদেশ। মৃতের সংখ্যায় রয়েছে ৩৮তম অবস্থানে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ২৫৭টি ল্যাবে ১৯ হাজার ৪০৪টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৫১ লাখ ৭০ হাজার ৬৭টি নমুনা। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ০৬ শতাংশ। এ পর্যন্ত মোট শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৫৩ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
গত একদিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ৫৯ জন পুরুষ আর নারী ৪৩ জন। তাদের ৯৭ জন হাসপাতালে এবং ৫ জন বাড়িতে মারা গেছেন। তাদের মধ্যে ৬৩ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি, ২৩ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছর, ১৪ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং ২ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ছিল। মৃতদের মধ্যে ৬৮ জন ঢাকা বিভাগের, ২২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৩ রাজশাহী বিভাগের, ১ জন খুলনা বিভাগের এবং ৪ জন করে বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন।