কক্সবাজারে সরকারি প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণে দালালদের সাথে যোগসাজশ এবং ক্ষমতার অপব্যবহার করে এক জনের ক্ষতিপূরণের টাকা অন্যজনকে দিয়ে দিতে সহযোগিতার অভিযোগে খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার অতিরিক্ত ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (এএলও) বিজয় কুমার সিংহকে গ্রেপ্তার করেছে দুদক। গতকাল সোমবার দুপুরে জিইসি মোড় এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। বিজয় কুমার সিংহ খাগড়াছড়িতে বদলি হওয়ার আগে কঙবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত ছিলেন। একই মামলায় এই পর্যন্ত ১০জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্ত তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক শরীফ উদ্দিন। এরআগে গত দুই মার্চ ওই মামলায় কঙবাজারের আলোচিত ইদ্রিস সিআইপি ও অ্যাডভোকেট নুরুল হককে গ্রেপ্তার করা হয়। ইদ্রিস সিআইপি বর্তমানে দুদকের রিমান্ডে রয়েছেন।
চট্টগ্রাম আদালতে দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী ছানোয়ার আহমদ লাভলু দৈনিক আজাদীকে জানান, কঙবাজারের সংশ্লিষ্ট বিচারিক আদালতে পাঠানোর জন্য ধৃত আসামি বিজয় কুমার সিংহকে সোমবার বিকেলে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম সারোয়ার জাহানের আদালতে উপস্থাপন করা হলে বিচারক তাকে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতকে জানিয়েছেন, এর আগে গ্রেপ্তার হওয়া দালাল সালাহ উদ্দিন ও কমর উদ্দিন ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে বিজয় কুমার সিংহকে কমিশন প্রদান করতেন বলে জানিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সোমবার আদালতকে জানিয়েছেন, কঙবাজারে পিবিআই (পুলিশ অব ইনভেস্টিগেশন) অফিস নির্মাণ প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণ মামলায় (এলএ মামলা নং-০৪/২০১৮-১৯) একে অপরের যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহারপূর্বক আসামি বিজয় কুমার সিংহ ২০৩০৭ দাগে ফিল্ড বুক ও অধিগ্রহণের আওতাভুক্ত না হওয়া সত্ত্বেও জাল দলিল ও খতিয়ান তৈরি করে টিপু সুলতানকে ০.০৩৫২ একর জায়গার বিপরীতে ১ কোটি ৫৬ লক্ষ ১ হাজার ৬৫৩ টাকা ২৩ পয়সা, জিনাত রেহেনাকে ০.০৪৪১ একর জায়গার বিপরীতে ৮৬ লক্ষ ৭১ হাজার ১৬২ টাকা ৮৮ পয়সা, বেলায়েত হোসেনকে ০.০৫ একর জায়গার বিপরীতে ১ কোটি ৮ লক্ষ ৫০ হাজার ৫১৪ টাকা ৮ পয়সা, স্থগিত খতিয়ান ব্যবহার করে গ্রেপ্তার হওয়া মোহাম্মদ ইদ্রিছকে অবকাঠামোর বিপরীতে ৩১ লক্ষ ২৫ হাজার ৬৫৫ টাকা ৮ পয়সা, গোলাম মওলাকে ০.০২৬৫ একর জায়গার বিপরীতে ৬৫ লক্ষ ২১ হাজার ৪৮৭ টাকা ৩৯ পয়সাসহ মোট ৪ কোটি ৪৭ লক্ষ ৭০ হাজার ৪৭২ টাকা ৬৬ পয়সা পরিশোধ করার অবৈধ সহযোগিতা করেছেন।