এক সময় খবরের কাগজে প্রায়ই দেখতাম, জাকাতের লুঙ্গি কিংবা শাড়ি নিতে যেয়ে মানুষের ভিড়ে পায়ের তলায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারাত অনেক মানুষ। যে দেশে মাত্র একশ টাকা দামের একটা লুঙ্গি কিংবা তিনশ টাকা দামের একটা শাড়ি নিতে যেয়ে মানুষ নিজের জীবন বিপন্ন করে, তখন ভয় ছিল, মাত্র এক বছরের মধ্যে দশ কোটি লোককে আক্রান্ত করা এবং বিশ লক্ষাধিক মানুষের প্রাণ হরণ করা করোনা ভাইরাসের একমাত্র পরীক্ষিত প্রতিষেধক, করোনার টিকা নিতে যেয়ে না জানি কী হাল হয়। অথচ আমি নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারি না যখন দেখি, সেই দেশে এই প্রাণ রক্ষাকারী টিকা নেয়ার জন্য মানুষ খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না! কোনো এক কেন্দ্রে নাকি দুইশ জন নিবন্ধন করলেও প্রথম দিন একজন মানুষও টিকা নিতে হাজির হয়নি! আবার কোনো কোনো স্থানে জনপ্রতিনিধিরা প্রাইজ বন্ড, ফুল, শাড়ি ইত্যাদি উপঢৌকন দিয়ে মানুষকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করছে! কিন্তু কেন? যেখানে দুর্নাম আছে, বাঙালি মাগনা পেলে আলকাতরাও খায়, সেখানে এমন গুরুত্বপূর্ণ একটা ঔষধ মাগনা পেয়েও বাঙালি কেন নিতে চাইছে না? বাঙালি মাগনা পেলে যেমন আলকাতরা খায়, হুজুগে তেমন আরও বেশি মাতাল হয়। আমার খুব কষ্ট হয়, যখন দেখি, কিছু নীতি বিবর্জিত রাজনীতিবিদ শুধু মাত্র রাজনৈতিক বিরোধের জন্য সারা পৃথিবী জুড়ে চলা এই জীবন রক্ষাকারী প্রয়াস নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়। আমার খুব ঘৃণা হয়, যখন দেখি, কিছু বিবেক বিবর্জিত মানুষ ফেসবুকে, ইউটিউবে করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে ইচ্ছেমত গুজব ছড়ায়। আমার খুব লজ্জা হয় যখন দেখি, আমার দেশের তথাকথিত শিক্ষিত মানুষেরা সেই গুজবকে শুধু নিজেরাই বিশ্বাস করে না, চোখ বন্ধ করে সেই গুজব ফরোয়ার্ড করে অন্যকেও প্রভাবিত করার চেষ্টা করে।