ভারত থেকে বয়ে আসা চেঙ্গি অববাহিকায় গড়ে উঠেছে খাগড়াছড়ি শহর। কয়েক দশকে পাল্টে গেছে শহরের গরীবি হাল। নানামুখী উন্নয়ন প্রকল্প নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধি করেছে। ১৯৮৪ সালে খাগড়াছড়ি পৌরসভা ঘোষণা করা হয়। ২০০৫ সালে ১৮ এপ্রিল এটি ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভায় উত্তীর্ণ হয়। বর্তমানে সরকারি বরাদ্দ বৃদ্ধির সাথে সঙ্গতি রেখে নাগরিক সেবা নিশ্চিত একটি বড় চ্যালেঞ্জ। নানা বাস্তবতায় খাগড়াছড়ি পৌরসভার ‘মেয়র’ পদটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। মেয়র নির্বাচন নিয়ে খাগড়াছড়িতে আওয়ামী রাজনীতিতে বিভক্তির ঘটনাও ঘটেছে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত পৌর নির্বাচনে দলীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে গিয়ে মেয়র পদে নির্বাচন করেন বর্তমান মেয়র রফিকুল আলম। নির্বাচনে রফিকুল আলম জয়ী হলেও খাগড়াছড়ি আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। একাদশ সংসদ নির্বাচনে কেন্দ্রের হস্তক্ষেপে সেই বিরোধে নিষ্পত্তি হয়। গত এক দশকে টানা দুইবার বিজয়ী হয়ে খাগড়াছড়ি পৌরসভার মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে রফিকুল আলম। এবারও হ্যাটট্রিক জয়ের প্রত্যাশা নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন তিনি। জেলা আ.লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সদস্য মো: রফিকুল আলম দলীয়ভাবে মনোনয়ন না পাওয়ার পর ‘স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচন করছেন বলে দাবি করেছেন তিনি। তিনি বলেন, আমি জেলা আওয়ামীলীগের কাছে দলীয় মনেনানয়ন পেতে আবেদন করেনি। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি ডেকে নিয়ে আমাকে দলীয় প্রার্থী হিসেবে প্যানেলে নাম দিয়েছিলেন। তাই তিনি, দলীয় মনোনয়নপত্র কিনেছিলেন মাত্র। পৌরবাসীর অনুরোধে তৃতীয়বারেরর মত তিনি নাগরিক কমিটির ব্যানারে এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।
এদিকে আওয়ামী লীগের হয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্মলেন্দু চৌধুরী। বিএনপির ধানের শীর্ষ প্রতীক নিয়ে মাঠে রয়েছেন যুবদল নেতা ইব্রাহীম খলিল। তাই এবারের পৌর নির্বাচনের লড়াই হবে প্রকট। দলীয় মনোনয়ন না পেয়েও গত দুইবার নির্বাচিত মেয়র রফিক নির্বাচনে ‘বড় ফ্যাক্টর’। রফিকুলকে ঠেকাতে মরিয়া আওয়ামী লীগ। দলটির কাছে পৌর নির্বাচন এখন ‘প্রেস্টিজ’ ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।
কারণ এবার রফিকুলের সাথে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জেলা আ.লীগের অন্যতম শীর্ষনেতা দলের সাধারণ সম্পাদক। তাই এবার দলীয় প্রার্থীকে জয়ী করতে আওয়ামী শিবিরে নানা সমীকরণ চলছে।