বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজী বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে ‘ভাসা আউলিয়া জুয়েলার্স’এর দোকান করতেন কালীপুর ইউনিয়নের সুনীল ধরের পুত্র বিটু ধর।
গ্রাহকের বন্ধক রাখা স্বর্ণ না দিয়ে আত্মগোপন করার অভিযোগে বাঁশখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বিটু ধর এবং আরো ৪ জনের বিরুদ্ধে যারা স্বর্ণ ফেরত দেওয়ার নামে বার বার সময় নিয়েছিলেন।
আজ বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকালে বাঁশখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাহারছড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য আজিজ আহমদ চৌধুরী। তিনি বন্ধক রেখেছিলেন ২ ভরি সাড়ে ১৪ আনা স্বর্ণ।
জানা যায়, বাহারছড়া ইউনয়নের বশির উল্লাহ মিয়াজী বাজারে দীর্ঘ সময় ধরে ‘ভাসা আউলিয়া জুয়েলার্স’-এর দোকান করতেন কালীপুর ইউনিয়নের বিটু ধর। বিটু ধরের পাশাপাশি তার অপর দুই ভাই টিটু ধর ও মিন্টু ধর এ দোকানে বসে কার্যক্রম চালাতেন।
এলাকার জনগণ প্রয়োজনে তাদের দোকানে স্বর্ণ বন্ধক রেখে বিভিন্ন সময় প্রয়োজনীয় কাজ সমাধা করতেন।
করোনাকালে দোকান বন্ধ থাকায় দোকান মালিকের দেখা না পাওয়ায় বিটু ধরের বাড়ি কালীপুর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডে যায় স্বর্ণ বন্ধকদাতারা।
তাদের বিটু ধর জানান, তাদের স্বর্ণগুলো অন্য দোকানে বন্ধক রাখা হয়েছে। জুন মাসে সেই দোকান থেকে এনে তাদের দিয়ে দেয়া হবে।
এ কথা বলে বিটু স্বর্ণ বন্ধকদাতাদের শান্তনা দিলেও জুনের পর থেকে তিনি উধাও হয়ে যান।
স্বর্ণ বন্ধকদাতাদের বিটু ধরের অপর দুই ভাই টিটু ধর ও মিন্টু ধর এবং স্থানীয় অনিল ধর ও ভোলা ধর সময় নিলেও কোনো সুরাহা করতে না পারায় অবশেষে আজ বৃহস্পতিবার বিকালে বাঁশখালী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন বাহারছড়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য স্বর্ণ বন্ধকদাতা আজিজ আহমদ চৌধুরী।
আজিজ আহমদ বলেন, “আমি ৬০ হাজার টাকায় স্বর্ণ বন্ধক রেখে তা ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য ৩০ হাজার টাকা প্রদান করি। জুনে আমাকে স্বর্ণ দেবে বলে। পরে দেখি তার দোকানের সব মালামাল গোপনে সরিয়ে ফেলা হয়েছে। পরিবারের লোকজনের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো সুরাহা করতে পারছে না, বার বার সময় নিচ্ছে। বাধ্য হয়ে প্রশাসনের কাছে আশ্রয় নিলাম।”
মোহাম্মদ লোকমান নামে অপর স্বর্ণ বন্ধকদাতা বলেন, “আমি ২ ভরি ২ আনা ৬০ হাজার টাকায় বন্ধক রাখি। তা ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য ৭৫ হাজার টাকা জমা দিই কিন্তু যখন স্বর্ণ ফেরত দেওয়ার কথা সেই সময় দেখি দোকানের মালামালসহ বিটু ধর উধাও হয়ে যায়।”
লোকমান জানান, তার মতো আরো শত শত লোক আছে যাদের স্বর্ণ সেখানে বন্ধক আছে।
বশির উল্লাহ মিয়াজী বাজারে ফার্মেসির মালিক আবু তৈয়ব বলেন, “আমার ৪ ভরি স্বর্ণ বন্ধক রয়েছে তার কাছে। টাকা নিয়ে গিয়ে দেখি দোকান বন্ধ, মালামাল নেই। এখানকার অনেকে তার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করলেও তারা কোনো সুরাহা করছে না, বার বার সময় ক্ষেপণ করছে। স্বর্ণের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় স্বর্ণগুলো নিয়ে পালিয়ে গেছে প্রতারণা করে। আমরা প্রশাসনের কাছে তার বিচার দাবি করছি।”
এদিকে এ ব্যাপারে জানার জন্য ‘ভাসা আউলিয়া জুয়েলার্স’-এর মালিক বিটু ধরের গ্রাহকদের কাছে দেওয়া মোবাইল ফোন নম্বরে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে বাঁশখালী থানার দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন বৃহস্পতিবার বিকালে একটি অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করেন।