বিশ্বে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে। মানুষের মৃত্যু হারের চেয়ে জন্মহার বেশি হওয়ায় বৈশ্বিক জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উইকিপিডিয়ার তথ্য থেকে জানা যায় ১৯৯৯ খ্রিস্টাব্দে বিশ্বে জনসংখ্যার পরিমাণ ছিল ৬বিলিয়ন। কিন্তু ২০২০ খ্রিস্টাব্দে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭.৮ বিলিয়ন। অর্থাৎ ২১ বছরের ব্যবধানে জনসংখ্যা বেড়েছে ১.৮ বিলিয়ন। ২০৫০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ১১বিলিয়ন অতিক্রম করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওয়াল্ডোমিটারের একটি জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যা ১৬৫ মিলিয়ন। দেশের প্রতিবর্গ কিলোমিটারে ১১০৬ জন বাস করে। এ বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত বাসস্থান। অন্যদিকে বাসস্থানের কারণেই প্রতিদিনই নষ্ট হচ্ছে শত শত হেক্টর কৃষিজমি। প্রধান কারণগুলো হচ্ছে আবাসন তৈরি এবং ইট ভাটার জন্য মাটি সংগ্রহ করা। পৃথিবীর আধুনিক রাস্ট্রসমূহে বহুতল ভবন নির্মাণে কংক্রিট, এলুমিনিয়াম সীট, প্লাস্টিক, কাচ, ফাইবার স্টীল ইত্যাদি ধাতব বস্তুর ব্যাপক ব্যবহার হয়ে থাকলেও বাংলাদেশসহ অনেক উন্নয়নশীল ও স্বল্পোন্নত দেশে প্রধানত ইটের ব্যবহার বহু মাত্রায় পরিলক্ষিত হচ্ছে। আর ইট তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার উপাদান মাটি ও বৃক্ষসমূহ। ইট তৈরিতে নষ্ট হচ্ছে শত শত একর ফসলি জমি এবং প্রকৃতির মূল্যবান গাছগাছালি। ইটের অত্যাবশকীয় প্রয়োজনীয়তা থাকলেও নিয়মনীতি না মানার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশ আর পরিবেশ দূষণের কারণে দেখা দেয় শ্বাসপ্রশ্বাস জনিত জঠিলতাসহ মানুষের স্বাস্থ্যগত সমস্যা, নষ্ট হচ্ছে জীববৈচিত্র্য, কৃষিজমি, উর্বর মাটি ও বায়ু। পরিবেশ অধিদপ্তরের সমীক্ষা মতে বর্তমানে সারাদেশে মোট ইট ভাটার সংখ্যা আট হাজারেরও অধিক। এগুলোর মধ্যে ২৫১৩টির পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই। দেশের সংবিধিবদ্ধ আইন অনুযায়ী পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়া কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যায় না। উপরন্তু ইটভাটায় জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি গ্রহণের বিধিবদ্ধ শর্ত মতে ২ হাজার ৮৩৭টি ইটভাটা সেই প্রযুক্তি গ্রহণ করেনি। ২০১৯ খ্রিস্টাব্দের নভেম্বর মাসের শেষের দিকে পরিবেশ অধিদপ্তর ৩ হাজারেরও বেশি অবৈধ ইটভাটার একটি তালিকা করেছিল যা সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছিল। পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী ৩হাজারের বেশি অবৈধ ইটভাটার মধ্যে ১২টি প্রধান শহরেই রয়েছে ১হাজার ২৪৬টি যার মধ্যে ঢাকা এবং আশেপাশের পাঁচ জেলায় রয়েছে ৫৫৯টি। গত কয়েক বছরে ঢাকাসহ সারাদেশে মাত্র ৭৩৭টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করা হয়েছে। এখনো চালু থাকা ২৬৩টি ইটভাটা মারাত্মকভাবে দূষণ ছড়াচ্ছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের গবেষণায় জানা গেছে ঢাকার বায়ু দূষণের উৎসগুলোর মধ্যে ইটভাটার ক্ষতির কারণ ৫৮শতাংশ। দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ২০১০ ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ অনুযায়ী বসতি এলাকা, পাহাড়, বন ও জলাভূমির এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা নির্মাণ করা যাবে না। এমনকি কৃষি জমিতেও ইটভাটা স্থাপন বৈধ হিসেবে গণ্য হবে না।
দেশের ইটভাটাগুলোর মধ্যে ৬০ শতাংশই অবৈধ ইটভাটা। এসব ইটভাটা পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে চালু রয়েছে। ২০২২ খ্রিস্টাব্দে সংসদের প্রশ্নোত্তর পর্বে তদানিন্তন পরিবেশ প্রতিমন্ত্রীর উদ্ধৃতি মতে দেশে তখন ইটভাটার সংখ্যা ছিল ৭হাজার ৮৮১টি। এর মধ্যে ৩ হাজার ২৪৮টি বৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছিল। বাকি ৪ হাজার ৬৩৩টি ইটভাটা পরিবেশগত ছাড়পত্র ছাড়াই অবৈধভাবে পরিচালিত হচ্ছিল। মন্ত্রীর দেওয়া তথ্যমতে ইটভাটাগুলোর মধ্যে বৈধ ৪১.২ শতাংশ এবং অবৈধ ৫৮.৮ শতাংশ। ২০১৯–২০২২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ১ হাজার ৭৭২টি অভিযান পরিচালনা করে ৩ হাজার ৩৭টি ইটভাটা থেকে ৭৭কোটি ৬২লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। এছাড়া ৯৬০টি ইটভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল এবং ৮০জন লোককে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
ইটভাটায় জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে কাঠ যা প্রতিবছর বাংলাদেশের ইটভাটাগুলোতে ২৫% জ্বালানি সরবরাহ করে থাকে। পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট করে বৃক্ষ নিধন। কাঠ পোড়ানোর ফলে একদিকে নষ্ট হচ্ছে অনেক বৃক্ষ, অন্যদিকে নষ্ট হচ্ছে বনজঙ্গলে বসবাসকারী জীবজন্তুর জীবন ও আবাসন। একটি দেশের সামগ্রিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মোট ভূমির ২৫ শতাংশ বনভূমি থাকা দরকার। দুঃখের বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশে আছে ১১শতাংশ এবং সেটির আয়তনও দিন দিন কমে আসছে। জাতিসংঘের খাদ্য বিষয়ক সংস্থা(FAO) এর মতে এর পেছনের প্রধান কারণ হচ্ছে ইটভাটায় কাঠ পোড়ানো। অতিরিক্ত কয়লা বা কাঠ পোড়ানোর ফলে নির্গত হচ্ছে ধূলিকণা, পার্টিকুলেট কার্বন, কার্বন মনোক্সাইড, সালফার এবং নাইট্রোজেন অক্সাইড সমূহ যা চোখ, ফুসফুস এবং শ্বাসনালীতে মারাত্মক ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। ইউএনডিপি’এর তথ্যমতে বাংলাদেশে ১০০০০০ইট প্রস্তুত করতে ২০টন কয়লা পোড়ানো হয় যেখানে চীন ৭.৮ থেকে ৮টন কয়লা ব্যবহার করে একই পরিমাণ ইট প্রস্তুত করে।
বাংলাদেশে গ্রীনহাউজ গ্যাস উৎপাদনের সর্ববৃহৎ উৎস হলো ইটভাটা। ইটভাটায় প্রতিবছর কয়লার ব্যবহার ৪.৭৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন, কাঠের ব্যবহার ১.৯ মেট্রিক টন, মাটির ব্যবহার ২৮৪০ মিলিয়ন সি এফ টি, কার্বণ নিঃসরণ ১১.৫৯ মিলিয়ন টন যার কারণে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি পায়। নরওয়ে ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ঘওখট এর সহযোগিতায় পরিবেশ দফতরের গবেষণায় উঠে এসেছে শুষ্ক মৌসুমে ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটা দায়ী ৫৮ ভাগ। বায়ুতে ক্ষতিকর উপাদান চগ (পার্টিকুলেট ম্যাটার) ২.৫ এর অন্যতম উৎস ইটভাটা। ‘ইন্সটিটিউট অব হেলথ এন্ড ইভ্যালুয়েট’ এবং ‘হেলথ ইফেক্ট ইন্সটিটিউট’ বোস্টনের গবেষণা অনুযায়ী পার্টিকুলেট ম্যাটার ২.৫ হচ্ছে ক্ষতিকর বস্তুকণা যা অতি সহজেই শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে আমাদের ফুসফুসে চলে যায় যেটি অনেক মৃত্যুর জন্য দায়ী। গবেষকদের ধারণা মতে এই ক্ষতিকর বস্তুকণা ঢাকায় ১লক্ষের বেশি লোকের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এদিকে বেপরোয়া ভাবে ইটভাটা তৈরির কারণে জমির অবস্থাও নাজুক। ইটভাটা তৈরির কাজে ফসলী জমি ব্যবহার করা হয় যারফলে আবাদি জমি সংকুচিত হয়ে আসছে। আবার ইটভাটার সৃষ্ট তাপের কারণে আশেপাশের এলাকায় ফসল উৎপাদন ব্যাপকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। ফসলী জমিতে ইটভাটা তৈরি ও জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি দিয়ে ইট বানানোর ফলে জমি উৎপাদন ক্ষমতা হারাচ্ছে। পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ মাটি ইট তৈরিতে ব্যবহৃত হচ্ছে বিধায় মাটির পৃষ্ঠ থেকে গভীরে পুষ্টির উপাদান ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন জমি যেভাবে তার উৎপাদনশীলতা হারাচ্ছে সে হিসেবে মাটি পুড়িয়ে ইট বানানো বন্ধ না করলে ২০৪০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে প্রায় পাঁচ কোটি মানুষ খাদ্য ঘাটতির মুখোমুখি হবে। এছাড়া কার্বণ–ডাই–অক্সাইড গ্যাস বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণ হওয়াতে অসময়ে বন্যা, আকস্মিক ভারী বৃষ্টি এবং খরার কারণে ফসল নির্ধারিত সময়ে ঘরে তুলার পূর্বেই নষ্ট হয়ে যায়। সালফার এবং নাইট্রোজেনের অক্সাইডসমূহ এসিড বৃষ্টির জন্য দায়ী যারফলে ফসল হানি ও নদীর মাছ মরে যাচ্ছে। ইটভাটার কারণে আশেপাশের এলাকায় পাখিসহ অন্যান্য প্রাণীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাচ্ছে। পরিবেশের ভারসাম্য ও পরিবেশ দূষণ রোধ করতে সনাতন পদ্ধতিতে ইট উৎপাদন বন্ধ করে আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ইট উৎপাদন খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন দেশ আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে ইট উৎপাদন শুরু করেছে। বাংলাদেশও স্বল্প পরিসরে আধুনিক প্রযুক্তিতে ইট উৎপাদন শুরু করেছে। ইউএনডিপি’ এর সহায়তায় বাংলাদেশ উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে ইট উৎপাদন শুরু করেছে। এতে পরিবেশ সুরক্ষায় অটো উৎপাদনে আসছে পরিবেশ বান্ধব আধুনিক মেশিন। সর্বক্ষেত্রে হাইব্রিড হফম্যান কিলন, জিডজ্যাগ কিলন, ভার্টিক্যাল স্যাফট ব্রিক কিলন এবং টানেল কিলন মেশিনের ব্যবহার সুনিশ্চিত হলে ইটভাটা থেকে নির্গত ধোঁয়া ও এরসাথে সম্পৃক্ত পরিবেশ দূষণ কমানোর মাধ্যমে কর্মরত শ্রমিকদের কর্ম পরিবেশ ও স্বাস্থ্যের উন্নতি সাধন সম্ভব হবে। ভারতে একটি গবেষণায় দেখা গেছে পাঁচটি বিভিন্ন পদ্ধতির ইট তৈরির উন্নত প্রযুক্তির মধ্যে জিগ–জ্যাগ ও ভার্টিক্যাল স্যাফট ব্রিক ক্লিন পদ্ধতিতে কার্বণ–মনোক্সাইড এবং পার্টিকুলেটেড বস্তু নিঃসরণ ৬০–৭০শতাংশ কমানো সম্ভব। তবে ইউএনডিপ্থির তথ্য অনুযায়ী জিগজ্যাগ ক্লিন ৮০শতাংশ দূষণ কমাতে সক্ষম। এমতাবস্থায় পরিবেশ রক্ষার প্রয়োজনে সনাতন পদ্ধতিতে ইট উৎপাদন বন্ধ করে আধুনিক পদ্ধতিতে ইট উৎপাদনের কোনো বিকল্প নেই। মাটির উপরের অংশের ব্যবহার বন্ধ করণ, কাঠ কয়লার ব্যবহার কমিয়ে বনভূমি নিধণরোধ ও বায়ু দূষণ কমানোর জন্য সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। সরকারি, বেসরকারি সকল প্রতিষ্ঠান এবং সর্বোপরি দেশের জনগণকে উদ্যোগী হতে হবে যাতে ইটভাটা নির্মাণে সরকারের ইটভাটা আইন ২০১৩ যথাযথভাবে মেনে চলা হয়।
অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃজনে ইটভাটার অবদান অনস্বীকার্য। বাংলাদেশের জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। বিপুল জনগোষ্ঠীর এদেশে মানুষের বাসস্থান ও কর্মসংস্থানের বিষয়টি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সম্মুখে চলে আসে। কিন্তু বিদ্যমান ইটভাটা গুলোর পরিবেশ দূষণ স্বাস্থ্যঝুঁকি কতটা বাড়িয়ে দিচ্ছে সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া খুবই জরুরি। পরিবেশ ও স্বাস্থ্যগত দিক বিবেচনায় এনে ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনায় একটি সুনির্দিষ্ট নীতিমালা থাকা প্রয়োজন। ইটভাটা গুলোকে লোকালয় কিংবা আবাসিক এলাকা থেকে ৮/১০ কিলোমিটার দূরে স্থাপন করা প্রয়োজন। কৃষি ফসল উৎপাদনে ব্যবহৃত মাঠ থেকে কমপক্ষে ১০কি.মি. দূরে ইটভাটা স্থাপন করতে হবে। ইট তৈরিতে ব্যবহৃত মাটি কৃষি জমি থেকে সংগ্রহ না করে পরিত্যক্ত কোনো জায়গা থেকে সংগ্রহ করতে হবে। খোলা মাঠে চিমনি পদ্ধতির পরিবর্তে টানেল পদ্ধতিতে ইট উৎপাদনে আগ্রহী হতে হবে। ইটভাটার বায়ুতে দূষণের পরিমাণ যথানিয়মে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। ইটভাটার সৃষ্ট বর্জ্যসমূহ যাতে পানি এবং জলাশয়ে না মিশে সে ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।
সরকারি, বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠান এবং সর্বোপরি দেশের জনগণকে সচেতনতার সাথে ইটভাটার দূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সরকার ইটভাটা তৈরি ও ইটভাটা নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১৩ প্রণয়ন করে থাকলেও অসাধু ইটভাটা নির্মাণকারী ব্যক্তিবর্গ এখনো এ আইনের প্রতি পুরোপুরি শ্রদ্ধাশীল হতে পারেনি। জেলা প্রশাসকের লাইসেন্স বা অনুমতি ছাড়া ইটভাটা স্থাপন করা যাবেনা মর্মে সিদ্ধান্ত থাকা সত্বেও আইনের প্রতি বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে যত্রতত্র ইটভাটা স্থাপন করে ইটভাটা মালিকরা জেলা প্রশাসকের অনুমোদনের বিষয়টিকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। পরিবেশ দূষণ রোধকল্পে দেশের প্রতিটি জেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অবৈধ ইটভাটাগুলোর বিরুদ্ধে অভিন্ন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে যাতে ‘ইটের পরে ইট মাঝে মানুষ কীট’ এর অনিয়ন্ত্রিত দূষণ থেকে মানুষের জীবন বাঁচে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পায় এবং প্রকৃতি ফুলে–ফসলে, বৃক্ষে লতায় সুশোভিত থেকে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদের জীবন রক্ষায় সহায়ক হতে পারে। পরিবেশ দূষণ নয়, জীবনের স্বার্থে, সুষ্ঠুভাবে– সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার লক্ষ্যে প্রকৃতির সৌন্দর্য রক্ষায় আমাদেরকে যত্নশীল হতে হবে। কাজেই ইটভাটা নির্মাণ যেন পরিবেশ দূষণের কারণ না হয়, সে ব্যাপারে সরকারসহ সকল স্তরের জনগণকে সচেতন থাকতে হবে। ইটভাটা স্বাস্থ্য ক্ষতি ও পরিবেশ দূষণের কারণ না হোক।
লেখক : শিক্ষাবিদ, সংগঠক, প্রাবন্ধিক ও প্রাক্তন অধ্যক্ষ, রাংগুনিয়া সরকারি কলেজ।