৭০টি মিটার গেজ ইঞ্জিন ক্রয় থেকে সরে আসছে রেলওয়ে

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ১২ আগস্ট, ২০২২ at ৬:৪২ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশ রেলওয়ে ২ হাজার ৩৭৩ কোটি টাকায় দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি থেকে ৭০টি মিটার গেজ ইঞ্জিন ক্রয় প্রকল্প থেকে সরে আসছে। ২০১১ সালের ১০ জুলাই রেল কর্তৃপক্ষ ইঞ্জিন ক্রয়ের এই বৃহৎ প্রকল্পটি গ্রহণ করেছিল। দীর্ঘ প্রায় ১১ বছর পর এই প্রকল্পটি বাতিল করছে রেল কর্তৃপক্ষ। প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, ৭০টি ইঞ্জিন ক্রয়ে অনেক টাকার দরকার। তাছাড়া এই মুহূর্তে ডলার সংকটের কথাটি বিবেচনা করে এতো বড় প্রকল্প থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি থেকে ইতোমধ্যে কেনা ইঞ্জিনগুলোর মান নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এ সব কিছু মিলে রেল কর্তৃপক্ষ এই প্রকল্পে আর যাচ্ছে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, রেলওয়ের ইতিহাসে নতুন ইঞ্জিন ক্রয়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রকল্প ছিল এটি। ইতোপূর্বে এক সাথে এতগুলো ইঞ্জিন ক্রয়ের আর কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এই ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ের ৭০টি মিটার গেজ ডিজেল ইলেক্ট্রিক লোকোমোটিভ সংগ্রহ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আহমেদ মাহবুব চৌধুরী আজাদীকে জানান, যখন প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছিল, তখন লোকোমোটিভের (ইঞ্জিনের) অনেক সংকট ছিল। এখন বেশ কিছু ইঞ্জিন এসেছে। ইঞ্জিনের সংকট আগের থেকে অনেকটা কমেছে। তাছাড়া এই মুহূর্তে ডলারের সংকট রয়েছে। ৭০টি ইঞ্জিন ক্রয়ে অনেক টাকার দরকার। তাছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি থেকে ইতোমধ্যে যে সব ইঞ্জিন দেশে এসেছে সেগুলোর মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সব কিছু মিলে উপরের সিদ্ধান্তে প্রকল্পটি এখন আর এগোচ্ছে না।
রেল ভবনের সংশ্লিষ্ট এক প্রকৌশলী গতকাল আজাদীকে জানান, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের জন্য গত তিন বছরে দক্ষিণ কোরিয়ার হুন্দাই রোটেম কোম্পানি থেকে দুই দফায় ২০টি মিটার গেজ ইঞ্জিন ক্রয় করা হয়েছে। যার মধ্যে ১০টি ইঞ্জিনের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। পূর্বাঞ্চলের মেকানিক্যাল বিভাগ থেকে জানা গেছে, বর্তমানে পূর্বাঞ্চলে মিটার গেজ ইঞ্জিন সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। পূর্বাঞ্চল রেলওয়েতে মোট ১৫০টি ইঞ্জিন রয়েছে। এই ১৫০টি ইঞ্জিনের মধ্যে ১০৩টির মেয়াদ অতিক্রম হয়েছে অনেক আগেই। ইঞ্জিনের ইকোনমিক লাইফ ২০ বছর। ১০৩টি ইঞ্জিনের ওই সময় পেরিয়ে গেছে। ৪৭টি ইঞ্জিনের মেয়াদ ২০ বছরের কাছাকাছি।
পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগ থেকে জানা গেছে, ডেমু ছাড়া অন্য সব ধরনের ট্রেন পরিচালনার জন্য প্রতিদিন গড়ে ১১১টি ইঞ্জিন প্রয়োজন। কিন্তু এর বিপরীতে যান্ত্রিক প্রকৌশল বিভাগ থেকে পরিবহন বিভাগকে প্রতিদিন গড়ে ১০৩টি ইঞ্জিন সরবরাহ করা হচ্ছে। এ অবস্থা চলছে প্রায় দুই বছর ধরে। অর্থাৎ প্রতিদিনই গড়ে সাত-আটটি ইঞ্জিনের সংকট থাকছে। ইঞ্জিন সংকটের কারণে গত দুই বছর ধরে চট্টগ্রাম-দোহাজারী রুটে লোকাল ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
উল্লেখ্য, ৭০টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেক্ট্রিক লোকোমোটিভ সংগ্রহ প্রকল্পের মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০১১ সালের ১০ জুলাই থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে শিল্পাঞ্চলে কোন এলাকায় কোন দিন ছুটি
পরবর্তী নিবন্ধপোশাকে আশাকে বঙ্গবন্ধু