৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে থাকছে না আর লিখিত পরীক্ষা

আজ থেকে নতুন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন শুরু মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা জারি

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ৯ নভেম্বর, ২০২৩ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণিতে আর লিখিত পরীক্ষা হচ্ছে না, আজ থেকে নয়া পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বা মূল্যায়ন শুরু হচ্ছে। নয়া এই মূল্যায়ন পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের তিন ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে না, শ্রেণি কক্ষে তাদের আচার আচরণসহ বিভিন্ন বিষয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন হবে। সরকারিবেসরকারি সব স্কুলে এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। মূল্যায়ন টুলস ও নির্দেশনা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে হবে। এই মূল্যায়নের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের ফলাফল প্রদান করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর এই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করেছে।

সূত্র জানিয়েছে, নতুন শিক্ষাক্রমে ৬ষ্ট ও ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষা দিতে হবে কি হবে না তা নিয়ে কিছুটা বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। কোন কোন স্কুলে লিখিত পরীক্ষা হবে বলে জানায় শিক্ষার্থীদের। কিন্তু অবশেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করে বলা হয়েছে নয়া শিক্ষাক্রমে এই দুই শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোন লিখিত পরীক্ষা নেয়া যাবে না। মূল্যায়ন টুলস ও নির্দেশনা অনুসারে মূল্যায়ন সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট দেয়া হবে। বিষয়টি সব শিক্ষা কর্মকর্তা ও প্রধান শিক্ষকদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে দৈনিক আজাদীর সাথে আলাপকালে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা জানান, ষষ্ঠসপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নে গতানুগতিক ধারা থাকছে না। কোন লিখিত পরীক্ষা হবে না। তবে মূল্যায়ন টুলস ও নির্দেশনা অনুসরণ করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করতে হবে। শ্রেণিকক্ষের আচরণ, বাড়ি থেকে করে আনা কাজ, কিংবা গ্রুপ স্টাডির মাধ্যমে করা প্রজেক্টের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। ‘ত্রিকোন’, ‘বৃত্ত’ এবং ‘বর্গ’ এই তিনটি চিহ্নের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। ‘ত্রিকোন’ দিয়ে ভালো, ‘বৃত্ত’ দিয়ে মাঝারী এবং ‘বর্গ’ মার্কস দিয়ে খারাপ ফলাফল বুঝায়। কোন শিক্ষার্থী তিনটি বিষয়ে ‘বর্গ’ পেলে তাকে পরবর্তী শ্রেণিতে প্রমোশন দেয়া হবে না।

প্রতিজন শিক্ষকের ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাপস দেয়া হয়েছে। সেখানে প্রতিদিনই শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করা হবে। সংশ্লিষ্ট শিক্ষক ক্লাস শেষে ওনার আইডিতে ঢুকে প্রতিজন ছাত্রকে উপরোক্ত তিনটির যে কোন একটি মার্কস প্রদান করবেন। শিক্ষকের দেয়া এই মার্কস ন্যাশনাল সার্ভারে যুক্ত হবে।

তিনি বলেন, গতানুগতিক পরীক্ষা ছিল শুধুমাত্র শিক্ষার্থীর স্মৃতিশক্তির মূল্যায়ন। তবে নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীর সার্বিক দক্ষতা, অর্জিত জ্ঞান ও পারদর্শিতার মূল্যায়ন হবে। এ মূল্যায়ন পরীক্ষার থেকে বেশি গ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করে শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, বিষয়টি নতুন বলে শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদের বুঝতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয় এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে অনেক বড় ধরণের পরিবর্তন আনবে বলে মন্তব্য করেন।

নয়া শিক্ষাক্রমে এখন ৬ষ্ঠ ও ৭ম শ্রেণির মূল্যায়নে লিখিত পরীক্ষা থাকছে না। আগামী বছর থেকে ৮ম ও ৯ম শ্রেণিতেও একই পদ্ধতি চালু করা হবে। প্রাথমিকের বিভিন্ন পর্যায়েও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডি তৈরির কার্যক্রম চলছে। সব কাজ শেষ হলে একজন শিক্ষার্থীর সব প্রয়োজনীয় তথ্যই ইউনিক আইডিতে চলে যাবে। ওই শিক্ষার্থী প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পর্যায় পর্যন্ত কোন শ্রেণিতে কেমন ছিল তা এই ইউনিক আইডির মাধ্যমে সারাজীবন সংরক্ষিত থাকবে বলেও সূত্র জানিয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপলিনেট হাউস পদ্ধতিতে বিষমুক্ত সবজি চাষ
পরবর্তী নিবন্ধটানেলে গতি পাচ্ছে ব্যবসা