২৮ বছরেও পূর্ণ দায়িত্বে আসেনি কেউ

চবির রেজিস্ট্রার পদ

চবি প্রতিনিধি | বৃহস্পতিবার , ২০ অক্টোবর, ২০২২ at ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) কর্মকর্তাদের সর্বোচ্চ পদ হলো রেজিস্ট্রার পদ। এই পদটি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক সমমানের। বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে অধ্যাপক সমমানের ব্যক্তিরা আবেদন করে পূর্ণকালীন দায়িত্ব হিসেবে এ পদে আসেন ও নির্ধারিত সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করে থাকেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর নিয়োগ, পদোন্নতি ও ছুটিসহ যাবতীয় সব সিদ্ধান্ত হয় রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষরে। কিন্তু চবির রেজিস্ট্রার পদে প্রায় ২৮ বছরেও পূর্ণ দায়িত্বে কেউ আসেনি। ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারি থেকেই চলছে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে। মেয়াদকাল এক বছর হলেও কেউ টানা দুই-তিন বছরেরও অধিক দায়িত্ব পালন করছেন।

কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগ্য কাউকে না পেয়ে শিক্ষকদের মধ্যে থেকে একজন ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দিয়ে চলছে রেজিস্ট্রারের কাজ। একাডেমিক দায়িত্বের পাশাপাশি বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে তিনি সেটা পালন করে থাকেন। জানা যায়, বেশ কয়েকবার বিজ্ঞাপন দিলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। যার কারণে ভারপ্রাপ্ত দিয়ে চালানো যেন রীতিতে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রশাসনিক দায়িত্বে যারাই আসেন, তাদের পছন্দের ভিত্তিতে কাউকে ভারপ্রাপ্ত করে নেন।

জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকর্তাদের পদমর্যাদা শুরু হয় সেকশন অফিসার দিয়ে। এরপর ক্রমান্বয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার হন। সিনিয়র শিক্ষকদের মধ্য থেকে বা ডেপুটি রেজিস্ট্রারদের মধ্যে বয়োজ্যেষ্ঠের কেউ যোগ্যতার ভিত্তিতে রেজিস্ট্রার নির্বাচিত হওয়ার নিয়ম রয়েছে। এটার মেয়াদকাল সাধারণত এক বছর হয়ে থাকে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৪ সালের মার্চ থেকে ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত আবদুর রশীদ পূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন এই পদে। এরপর আর কেউ পূর্ণ দায়িত্বে আসেনি। কর্মকর্তাদের মধ্যে সর্বশেষ ২০১৮ সালের এপ্রিল থেকে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন কে এম নুর আহমদ। এরপর থেকে এই পদে দায়িত্বে আছেন প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান। দুই বছরের জন্য তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য প্রফেসর ড. আবুল মনছুর আজাদীকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার তো অনেক বড় পদ। রেজিস্ট্রারের হাত ধরেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের সিদ্ধান্ত হয়ে থাকে। আমরা ছুটির জন্যও রেজিস্ট্রারের কাছে আবেদন করি। তিনি বলেন, আসলে আমাদের বিদ্যমান কর্মকর্তা যারা আছেন, তাদের মধ্যে এই পদের যোগ্য কাউকে তেমন পাওয়া যায় না। সর্বশেষ নুর আহমদ সাহেব দায়িত্বে ছিলেন। আবার বিজ্ঞাপন দিলেও তেমন কেউ আবেদন করে না। কারণ, অধ্যাপকরা চান না শিক্ষকতা ছেড়ে এখানে পূর্ণ দায়িত্বে আসতে। যদিও এটা অনেক বড় ও সম্মানের পদ। যার কারণে দীর্ঘদিন এটা এভাবে চলে আসছে।

বর্তমান ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রফেসর এস এম মনিরুল হাসান আজাদীকে বলেন, এই পদে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। কবে দেওয়া হয়েছে, কবে ভাইভা হবে সেটা উপাচার্য জানেন। আমি নিজেও এই পদে থাকতে চাই না। আমি শিক্ষকতায় ফিরে যেতে চাই।

এই ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারকে বেশ কয়েকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করে সাড়া পাওয়া যায়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবারইয়ারহাট মেয়রের বিরুদ্ধে মামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ, পুরাতন মহাসড়ক অচল
পরবর্তী নিবন্ধবে-টার্মিনাল প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তি সই