১৮ বছর পর আজ সম্মেলন

আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগ

আনোয়ারা প্রতিনিধি | শনিবার , ১০ ডিসেম্বর, ২০২২ at ৭:৪৫ পূর্বাহ্ণ

দীর্ঘ ১৮ বছর পর আজ শনিবার অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। সংসদ নির্বাচনের আগে ক্ষমতাসীন দলের এই কমিটিকে ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে রয়েছে ব্যাপক আগ্রহ। আগের কমিটি বহাল থাকছে নাকি নতুন কেউ দায়িত্ব পাচ্ছেন তা নিয়ে চলছে আলোচনা। আজ উপজেলা সদরে আনোয়ারা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দুপুর ২ টা থেকে অনুষ্ঠিত হবে এই সম্মেলন। সম্মেলন ঘিরে উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে তোরণ নির্মাণ, পোস্টার সাঁটানো ও মাইকিং করা হয়েছে। সম্মেলন স্থলে ৮ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী বসার পেন্ডেল তৈরি করা হয়েছে।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন ভূমিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি। সম্মেলন উদ্বোধন করবেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দীন আহমেদ এম.পি। আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম.এ.মান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এম.এ.মালেকের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখবেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী
কমিটির উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি, প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভী এমপি, চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম। প্রধান বক্তা থাকবেন দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান। এছাড়া কেন্দ্রীয়, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী, সিনিয়র সহ সভাপতি এসএম আলমগীর চৌধুরী, আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ভিপি জাফর উদ্দীনের নাম আলোচনায় রয়েছে। বর্তমান সাধারণ সম্পাদক এম এ মালেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সহ সম্পাদক নোয়াব আলী, সুগ্রীব মজুমদার দোলন, শ্রমিক লীগের সভাপতি জসীম উদ্দীন চৌধুরী ও সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইয়াছিন হিরুর নাম শোনা যাচ্ছে সাধারণ সম্পাদক পদে। তবে দলের আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, মূল নেতৃত্বে পরিবর্তন নাও হতে পারে। সেক্ষেত্রে বহাল থাকবেন বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সম্মেলনকে ঘিরে দলের নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। তবে সভাপতি-সম্পাদক পদে প্রার্থিতার বিষয়ে কোনো নেতা মুখ খুলতে নারাজ। সবাই আস্থা রাখছেন ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এম.পির ওপর।
এদিকে সম্মেলনের সফলতা নিয়ে গতকাল দুপুরে আনোয়ারা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য রাখেন আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক এম. এ. মান্নান, সাধারণ সম্পাদক এম. এ. মালেক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সহ সম্পাদক ফজলুল করিম চৌধুরী বাবুল, নোয়াব আলী, সুগ্রীব মজুমদার দোলন, কলিম উদ্দিন, এম এ কাইয়ুম শাহ্‌, অসীম কুমার দেব, নজরুল ইসলাম বকুল প্রমুখ।
এর আগে সম্মেলন সফল করতে উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি এস এম আলমগীর চৌধুরীকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি ও পাঁচটি উপ কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি প্রায় এক মাস ধরে একটি সুশৃংখল সম্মেলন আয়োজনে কাজ করেছে। এছাড়া সম্মেলন প্রস্তুতির নানাদিক তদারকিতে ছিলেন ভূমিমন্ত্রীর একান্ত সহকারী সচিব রিদওয়ানুল করিম চৌধুরী সায়েম, উপজেলা সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এম এ মালেক। ইতিপূর্বে গত ২৯ জুলাই এই সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও পরে তা স্থগিত করা হয়। পরবর্তীতে ১০ ডিসেম্বর সম্মেলনের নতুন তারিখ নির্ধারিত হয়।
দীর্ঘ ১৮ বছর পর সম্মেলনের আয়োজন হওয়ায় নেতাকর্মীরা চাঙা। তাদের দাবি -আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ত্যাগীরা নেতৃত্বে আসুক। উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি অধ্যাপক এম এ মান্নান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক এম. এ. মালেক সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে বলেন, আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপির দিক নির্দেশনায় দলের সাংগঠনিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে তৃণমূল পর্যায়ে সুসংগঠিত করেছি। সকলের সহযোগিতায় একটি সফল সম্মেলন উপহার দিব ইনশাআল্লাহ।
সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক এস এম আলমগীর চৌধুরী জানান, সম্মেলনে উপজেলার ১১ ইউনিয়নের ৮ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী উপস্থিত থাকবেন। সম্মেলন সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০০৪ সালের ১১ এপ্রিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সর্বশেষ সম্মেলন হয়। সেই সম্মেলনে বাহাউদ্দিন খালেক শাহজীকে সভাপতি ও কাজী মোজাম্মেল হককে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর কাজী মোজাম্মেল হককে সভাপতি ও অধ্যাপক এমএ মান্নান চৌধুরীকে সাধারণ সম্পাদক, সর্বশেষ অধ্যাপক এমএ মান্নান চৌধুরীকে সভাপতি ও এমএ মালেককে সাধারণ সম্পাদক করে দুইটি কমিটি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ সম্মেলন ছাড়া অনুমোদন দেয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধপ্রাথমিকের বৃত্তি পরীক্ষা ২৯ ডিসেম্বর