১৫ সেনা কর্মকর্তা কারাগারে

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা

| বৃহস্পতিবার , ২৩ অক্টোবর, ২০২৫ at ৬:১৮ পূর্বাহ্ণ

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুমের দুই মামলা ও জুলাইআগস্টে রামপুরায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক মামলায় ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল১। গুমের মামলা দুটি হলো টিএফআই সেলে নির্যাতন এবং জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে নির্যাতন। এদিকে এই তিন মামলার পলাতক আসামিদের ট্রাইব্যুনালে হাজির হতে একটি বাংলা ও একটি ইংরেজি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে গুমের দুই মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য ২০ নভেম্বর ও রামপুরায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পরবর্তী শুনানির জন্য ৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেছেন বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল১। এই ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য বিচারক হলেন মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী। খবর বাসস ও বিডিনিউজের।

ট্রাইব্যুনালে গতকাল বুধবার প্রসিকিউশনের পক্ষে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম শুনানি করেন। আসামি পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এম সারোয়ার হোসেন। এর আগে গতকাল সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ জেলের একটি বিশেষ প্রিজন ভ্যানে করে সাধারণ পোশাকে ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। সেনা কর্মকর্তাদের ট্রাইব্যুনালে আনার প্রেক্ষাপটে ট্রাইব্যুনাল ঘিরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়।

আওয়ামী লীগের শাসনামলে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পৃথক দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল তারিক আহমেদ সিদ্দিকী ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পাঁচ মহাপরিচালকসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে গত ৮ অক্টোবর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল১। এছাড়া ওইদিন ট্রাইব্যুনাল জুলাইআগস্টে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিজিবি কর্মকর্তা রেদোয়ানুল ইসলাম ও মো. রাফাত বিন আলম মুনসহ চারজনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নেয়। সেই সাথে এই তিন মামলায় পরোয়ানাভুক্ত আসামিদের ২২ অক্টোবর ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেয় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল১।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির পর ১১ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে ১৫ জন কর্মরত সেনা কর্মকর্তাকে হেফাজতে নেওয়ার কথা জানায় সেনাবাহিনী। এদিকে গ্রেপ্তার ১৫ সেনা কর্মকর্তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘোষিত ঢাকা সেনানিবাসের সাবজেলে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আসামি পক্ষের আইনজীবী। অন্যদিকে এসব আসাসিকে গ্রেপ্তার ও ট্রাইব্যুনালে হাজির করার বিষয়ে সেনাবাহিনীর সম্পূর্ণ সহযোগিতা পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

যাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ হয়েছে তাদের মধ্যে দশজন র‌্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টারোগেশন (টিএফআই) সেলে আটকে রেখে নির্যাতনের মামলা আসামি। তারা হলেন র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, র‌্যাবের সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল, র‌্যাবের সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (এখন অবসরকালীন ছুটিতে), র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপস) কর্নেল কে এম আজাদ ও র‌্যাবের সাবেক পরিচালক (ইন্টেলিজেন্স উইং) কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম। তিনজন সেনাবাহিনীর জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে (জেআইসি) আটকে রেখে নির্যাতনের মামলা আসামি। তারা হলেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিক ও ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক (সিটিআইবি) মেজর জেনারেল শেখ মো.সারওয়ার হোসেন। বাকি দুজন একসময় বিজিবিতে দায়িত্বরত ছিলেন। জুলাই অভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরাবনশ্রীতে ২৮ জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি তারা। তারা হলেন বিজিবির সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ রেদোয়ানুল ইসলাম ও বিজিবির সাবেক কর্মকর্তা মেজর রাফাত বিন আলম মুন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসাব-জেল কারা কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে, খাবার সাক্ষাৎ বিধি অনুযায়ী : আইজি প্রিজন
পরবর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা