১৪ শতাংশ আকার বাড়িয়ে এডিপি অনুমোদন

সর্বোচ্চ বরাদ্দ পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে

| বুধবার , ১৯ মে, ২০২১ at ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ২৫ হাজার ৩২৪ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) অনুমোদন দিয়েছে সরকার, যা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির চেয়ে ১৪ শতাংশ বেশি। গতকাল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) সভায় আগামী অর্থবছরে দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য নতুন এই এডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এতে সভাপতিত্ব করেন। এনইসি বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, সভায় মূল এডিপির পাশাপাশি স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা বা করপোরেশনের জন্য প্রায় ১১ হাজার ৪৬৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বরাদ্দ অনুমোদন করা হয়েছে। সব মিলে এডিপির আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৩৬ হাজার ৭৯৩ কোটি ৯ লাখ টাকা। খবর বিডিনিউজের।
চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার এডিপি অনুমোদন দিয়েছিল সরকার। পরে তা থেকে ৭ হাজার ৫০২ কোটি টাকা কমিয়ে এক লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকায় সংশোধন করা হয়। সে হিসাবে আগামী অর্থবছরের মূল এডিপির আকার চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ২৭ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা বেশি। নতুন মূল এডিপিতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৯ কোটি ৯১ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে ৮৮ হাজার ২৪ কোটি ২৩ লাখ টাকার যোগান দেওয়া হবে।
মন্ত্রী জানান, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের বরাদ্দের মধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে ৬ হাজার ৭১৭ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে ৪ হাজার ৭৫১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা যোগান দেওয়া হবে। আগামী অর্থবছরের জন্য মূল এডিপির আওতায় চলমান রয়েছে এক হাজার ৪২৬টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রকল্প রয়েছে ৮৯টি। অর্থাৎ সব মিলে এক হাজার ৫১৫টি প্রকল্পে অর্থায়ন করা হবে।
এম এ মান্নান জানান, প্রকল্পগুলোর মধ্যে এক হাজার ৩০৮টি বিনিয়োগ প্রকল্প, কারিগরি সহায়তা প্রকল্প ১১৮টি এবং স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা/করপোরেশনের নিজস্ব অর্থায়নে ৮৯টি প্রকল্পসহ সর্বমোট প্রকল্প দাঁড়াবে ১ হাজার ৫১৫টি।
নতুন এডিপিতে সর্বোচ্চ ৬১ হাজার ৬৩১ কোটি টাকা বা মোট বরাদ্দের ২৭ দশমিক ৩৫ শতাংশ পরিবহন ও যোগাযোগ খাতে দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার ৮৬৮ কোটি টাকা বা মোট বরাদ্দের ২০ দশমিক ৩৬ শতাংশ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে।
এরপর যথাক্রমে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে গৃহায়ণ ও কমিউনিটি সুবিধা খাতে প্রায় ২৩ হাজার ৭৪৭ কোটি টাকা; ১০.৫৪%। শিক্ষা খাতে প্রায় ২৩ হাজার ১৭৮ কোটি টাকা; ১০.২৯%। স্বাস্থ্য খাতে প্রায় ১৭ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা; ৭. ৬৮%। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়নে প্রায় ১৪ হাজার ২৭৪ কোটি; ৬.৩৪%। পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন ও পানিসম্পদ খাতে প্রায় ৮ হাজার ৫২৬ কোটি টাকা; ৩.৭৮%। কৃষি খাতে প্রায় ৭ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা; ৩.৪০%। শিল্প ও অর্থনৈতিক সেবা খাতে প্রায় ৪ হাজার ৬৩৮ কোটি টাকা; ২.০৬%। বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি খাতে প্রায় ৩ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা; ১.৫৯%।
এনইসি সভায় চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় ৯ শতাংশ বেড়ে ২ হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার হওয়ার তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। গত অর্থবছরে মাথা পিছু আয় ছিল ২ হাজার ২৪ মার্কিন ডলার। এ সময় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির অন্যান্য খাতসহ পুরো প্রতিবেদনের বিষয়ে জানতে চাইলে পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. ইয়ামিন চৌধূরী বলেন, জিডিপি প্রবৃদ্ধির পুরো প্রতিবেদনটি সরকারের অনুমোদনের পর প্রকাশ করা হয়। প্রতিবেদনটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি বলে প্রকাশ করা হয়নি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআ. লীগ নেতার প্রত্যয়নে জামিন রাস্ট্রপক্ষের বিরোধিতায় বাতিল
পরবর্তী নিবন্ধঈদে মামা বাড়ি বেড়াতে এসে নদীতে ডুবে শিশু নিখোঁজ