১০০ টনের দুটি ক্রেন যুক্ত হচ্ছে আগামী মাসে

আসছে ৯০০ কোটি টাকার ইক্যুইপমেন্টের প্রথম চালান

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২১ মে, ২০২১ at ৫:৪২ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বন্দরে প্রথমবারের মত যুক্ত হচ্ছে ১০০ টন ধারণক্ষমতার ক্রেন। আগামী মাসে যুক্ত হচ্ছে এরকম দুটি ক্রেন। এছাড়া আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে ক্রমান্বয়ে এসে যুক্ত হবে চারটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ ১০৪টি ইক্যুইপমেন্ট। ৯০০ কোটি ব্যয়ে বিশ্বের নানা দেশ থেকে কেনা হচ্ছে এসব ইক্যুইপমেন্ট। বন্দরের বিদ্যমান ইক্যুইমেন্টের অনেকগুলোর আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে যাওয়ায় নতুন এসব ইক্যুইপমেন্ট কেনা হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। পাশাপাশি নতুন এসব ইক্যুইপমেন্ট বন্দরের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তারা।
চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, দেশের আমদানি রপ্তানি বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার চট্টগ্রাম বন্দরে বর্তমানে ১৪টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ সর্বসাকুল্যে ১২৫টি ইক্যুইপমেন্ট রয়েছে। এসব ইক্যুইপমেন্টের অনেকগুলোর আয়ুষ্কাল ফুরিয়ে গেছে। বহু ইক্যুইপমেন্ট কাজের সময় বিগড়ে গিয়ে বিপত্তি ঘটাচ্ছে। এতে বন্দরের সার্বিক কার্যক্রমে নানা সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। কিন্তু বর্তমানে বন্দরের কার্যক্রম বাড়ার সাথে সাথে ইক্যুইপমেন্টের প্রয়োজনীয়তা এবং গুরুত্ব প্রতিদিন বাড়ছে। এই অবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চারটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ সর্বমোট ১০৪টি ইক্যুইপমেন্ট কেনার বড় একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। চারটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন ছাড়াও এই প্রকল্পের আওতায় ২টি মোবাইল ক্রেন (১০০ টন), ২টি মোবাইল ক্রেন (৫০ টন), ২টি মোবাইল ক্রেন (৩০ টন), ১২টি মোবাইল ক্রেন (২০ টন), ২৩টি মোবাইল ক্রেন (১০ টন), ১১টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি), ২১টি ফোর-হাই স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, ৬টি টু-হাই স্ট্র্যাডেল ক্যারিয়ার, ৪টি রীচ স্টেকার (লোড) ৪টি, ২টি কন্টেনার মোভার, ৪টি ভেরিয়েবল রীচ ট্রাক (৪৫ টন), ২টি লগ হ্যান্ডলার-স্টেকার, ৪টি ফর্ক লিফট ট্রাক (২০ টন) ১টি ম্যাটেরিয়াল-মাল্টি হ্যান্ডলার (৩৫ টন), ২টি লো বেড ট্রেইলার, ২টি হেভি ট্রাক্টর-পাওয়ার রয়েছে। উক্ত ১০৪টি ইক্যুইপমেন্টের মধ্যে শুধুমাত্র ৪টি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন কেনার জন্যই খরচ হবে আড়াইশ কোটিরও বেশি টাকা। এই চারটি গ্যান্ট্রি ক্রেন বন্দরের বহরে যুক্ত হলে নিউমুরিং কন্টেনার টার্মিনাল (এনসিটি) পুরোপুরি গ্যান্ট্রি ক্রেনের আওতায় চলে আসবে। বন্দরে কন্টেনার হ্যান্ডলিং এর ক্ষেত্রে কী গ্যান্ট্রি ক্রেনই সর্বাপেক্ষা আধুনিক এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি হিসেবে বিবেচিত।
বন্দন সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্তমানে চট্টগ্রামে বন্দরে প্রতিটি ৮৪ টন ধারণক্ষমতার ৩টি মোবাইল ক্রেন রয়েছে। এগুলোই বন্দরের ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা বেশি ধারণক্ষমতার ক্রেন। তবে নতুন ১০৪টি ইক্যুইপমেন্ট সংগ্রহ প্রকল্পের আওতায় দুটি ১০০ টন ধারণক্ষমতার ক্রেন কেনা হচ্ছে। এগুলো আগামী মাসের মধ্যেই বন্দরের ইক্যুইপমেন্ট বহরে যুক্ত হবে। এছাড়া নতুন প্রকল্পের অধিকাংশ ইক্যুইপমেন্টেরই ওয়ার্ক অর্ডার ইতোমধ্যে প্রদান করা হয়েছে। ক্রমান্বয়ে সবগুলো ইক্যুইপমেন্ট বন্দরের বহরে যুক্ত হবে। চারটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনের নির্মাণ কাজ চলছে। এগুলো বন্দরের সার্বিক অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য রেখে নির্মাণ করতে হয় বিধায় ৯ মাসেরও বেশি সময় লাগে। আগামী জুনের মধ্যে এই চারটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ সবগুলো ইক্যুইপমেন্ট বন্দরে এসে পৌঁছবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চিফ ইঞ্জিনিয়ার (যান্ত্রিক) মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম বলেন, ১০৪টি ইক্যুইপমেন্ট কেনার সবকিছু চূড়ান্ত হয়েছে। আগামী মাসের মধ্যেই একশ টন ধারণক্ষমতার ২টি মোবাইল ক্রেন বন্দরে এসে পৌঁছবে। ক্রমান্বয়ে অন্যান্যগুলোও এসে পৌঁছবে। এগুলো বন্দরে এসে পৌঁছলে সার্বিক কার্যক্রমে গতিশীলতা সৃষ্টি হবে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্ল্যানিং এন্ড এডমিন) মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, নির্দিষ্ট সময়েই প্রকল্পটি সম্পন্ন হবে। আগামী বছরের জুনের মধ্যে চট্টগ্রাম বন্দরের ইক্যুইপমেন্ট বহর অনেক বেশি সমৃদ্ধ হবে। যা বন্দরের কন্টেনার কিংবা খোলা পণ্য হ্যান্ডলিং এর ক্ষেত্রে অভাবনীয় ভূমিকা রাখবে। তিনি নতুন চারটি কী গ্যান্ট্রি ক্রেন বন্দরের নিউমুরিং কন্টেনার টর্ার্মিনালকে সমৃদ্ধ করবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাহাড়তলীতে স্বামী স্ত্রীসহ গ্রেপ্তার ৩
পরবর্তী নিবন্ধস্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ভুলে টিকা পেতে দেরি : মোমেন