হৃদরোগ চিকিৎসার সক্ষমতা এখন ৯৮ শতাংশ : প্রধানমন্ত্রী

| শনিবার , ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৫:১১ পূর্বাহ্ণ

দেশের স্বাস্থ্যখাতে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সবার কাছে এ সেবা পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি হৃদরোগ চিকিৎসায় ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছে তার সরকার। তিনি বলেছেন, তার সরকার স্বাস্থ্যসেবাকে আরও সাশ্রয়ী করেছে এবং এটিকে সবার দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার পাশাপাশি হৃদরোগের চিকিৎসায় বাংলাদেশকে প্রায় স্বনির্ভর করে তুলেছে। বাংলাদেশ এখন হৃদরোগের চিকিৎসায় প্রায় স্বাবলম্বী। হৃদরোগের ৯৫ থেকে ৯৮ শতাংশ চিকিৎসার সক্ষমতা রয়েছে এবং এ লক্ষ্যে দেশে দক্ষ জনশক্তি, আধুনিক প্রযুক্তি এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি রয়েছে। খবর বিডিনিউজের।

বাসস জানায়, ঢাকার সোনারগাঁও হোটেলে গতকাল বাংলাদেশ কার্ডিওভাসকুলার রিসার্চ ফাউন্ডেশন আয়োজিত তৃতীয় বৈজ্ঞানিক সম্মেলনে ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগের রেকর্ড করা ওই বার্তায় দেশের চিকিৎসা খাতের বিভিন্ন উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরে তিনি জানান, বাংলাদেশে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার প্রায় ২৭ শতাংশ। প্রতি হাজারে ১০ জন শিশু হৃদরোগে আক্রান্ত হচ্ছে এবং প্রতি পাঁচজন যুবকের মধ্যে একজন হৃদরোগের ঝুঁকিতে রয়েছে। প্রতি বছর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে এক কোটি ৭৯ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। সারা বিশ্বে মানুষের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হলো হৃদরোগ। প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণের পরিকল্পনা অনুযায়ী ইতোমধ্যে চারটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

চিকিৎসার পাশাপাশি প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার ওপর নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, খাদ্যাভ্যাস, শারীরিক ব্যায়ামের অভাব, ধূমপান ও ডায়াবেটিসের কারণে হৃদরোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। দেশের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকরা এখন সফলভাবে হৃদরোগের চিকিৎসা দিচ্ছেন, যার সুফল জনগণ পাচ্ছে এবং এর ফলে দেশের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হচ্ছে। এছাড়া শিশুদের জন্য একটি কার্ডিয়াক ইউনিট স্থাপনের কাজ চলছে বলে জানান তিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫০০ শয্যার একটি বিশ্বমানের কার্ডিওভাসকুলার অব সায়েন্স অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট স্থাপন করা হয়েছে।

সীমাবদ্ধতার পরও অগ্রগতি : বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা থাকার পরও গত ১৪ বছরে স্বাস্থ্যখাতে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ পর্যন্ত ১১টি স্নাতকোত্তর সুপার বিশেষায়িত হাসপাতাল, কার্ডিওভাসকুলার হাসপাতাল, বক্ষব্যাধি হাসপাতাল, ক্যান্সার হাসপাতাল, নিউরোসায়েন্স হাসপাতাল এবং অন্যান্য হাসপাতাল স্থাপনের পাশাপাশি সারা দেশে ৬০০এর বেশি হাসপাতাল নির্মাণ করা হয়েছে। গ্রামের মানুষের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে আমরা ১৮ হাজার ৫০০ কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেছি। হাসপাতাল থেকে ৩০ ধরনের ওষুধ বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়া মা ও শিশুদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ৩০ হাজার স্যাটেলাইট ক্লিনিক রয়েছে। সারা দেশে ৪৩টি হাসপাতালে টেলিমেডিসিন সেবা চালু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

পাঁচ লাখ অটিস্টিক শিশুকে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ১০৩টি সেবাকেন্দ্র রয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) আমাদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে বাংলাদেশকে পোলিও ও ধনুষ্টংকার (টিটেনাস) মুক্ত দেশ ঘোষণা করেছে।

প্রতিটি জেলায় একটি করে মেডিকেল কলেজ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালের ৫০টি মেডিকেল ছিল, যা এখন ১১৫টি হয়েছে। এছাড়া মেডিকেল কলেজে ওই সময়ের আসন সংখ্যা ২০৫০ থেকে বর্তমানে ১০ হাজার ৭৮৯তে দাঁড়িয়েছে। ডেন্টাল মেডিকেল কলেজ ও ইউনিটের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৭টি, যা ২০০৯ সালে ছিল মাত্র ১৩টি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবিএনপি ভারতবর্ষেও অশান্তি সৃষ্টির অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল : তথ্যমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধছুটির দিনে ভিড়