হাসপাতালে শিশু ও বয়স্ক রোগীর চাপ

গরমের প্রভাব অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে মানতে হবে কিছু নিয়ম : বিশেষজ্ঞ

জাহেদুল কবির | বুধবার , ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ at ৫:৫৮ পূর্বাহ্ণ

নগরজুড়ে বয়ে যাচ্ছে তাপদাহ। দিনভর অতিরিক্ত গরমে নাভিশ্বাস উঠছে জনজীবনে। এর ফলে গরমজনিত নানা রোগের প্রকোপও বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা ডায়রিয়া, জ্বর, নিউমোনিয়া, ব্রঙ্কিউলাইটিস ও শ্বাসযন্ত্রের নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল, আন্দরকিল্লা জেনারেল হাসপাতাল, চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতাল এবং ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় রোগীর চাপ বেড়েছে দেড় গুণ পর্যন্ত। এছাড়া হাসপাতালের বহির্বিভাগেও রয়েছে রোগীদের দীর্ঘ সারি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গরমজনিত অসুস্থতা থেকে রক্ষা পেতে হলে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে বাইরের আখের রস কিংবা লেবুর শরবত টাইপের পানীয় পান করা যাবে না। তীব্র গরমে শরীর থেকে প্রচুর লবণ বের হয়ে যায়। তাই ওর‌্যাল স্যালাইন ও ডাব খেতে হবে। অনেকে বাইরের রোদ থেকে বাসায় গিয়ে ফ্রিজের পানি পান করে কিংবা ঠান্ডা পানিতে গোসল করে। এটি কখনোই করা যাবে না। বাসায় পৌঁছে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়ে তারপর গোসল কিংবা পানি পান করতে হবে। না হলে মাথা ব্যথা, সর্দি ও জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। গরমের সাথে মানানসই কাপড় চোপড় পরতে হবে। বাইরে বের হওয়ার সময় অবশ্যই ছাতা নিতে হবে। চমেক হাসপাতালে আসা চন্দনাইশের বাসিন্দা আছিয়া আকতার বলেন, গত তিন দিন ধরে বাচ্চা প্রচণ্ড জ্বরে আক্রান্ত। জ্বরের একদিন পর থেকে বমির সঙ্গে ডায়রিয়া শুরু হলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ডাক্তার পরীক্ষানিরীক্ষা হাসপাতালে ভর্তি করে দেন।

গতকাল সরেজমিনে চমেক হাসপাতালের মেডিসিন ও শিশু স্বাস্থ্য ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট বেডের বাইরে মেঝেতেও রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। গরমের কারণে অনেক শিশুকে কান্নাকাটি করতে দেখা যায়। চিকিৎসকরা জানান, ঈদের পর পর রোগীদের চাপ বেড়েছে।

চমেক হাসপাতালের মেডিসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আবদুর রব আজাদীকে বলেন, মেডিসিন ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগীর চাপ বেড়েছে। প্রচুর জ্বরের রোগীও পাচ্ছি। এছাড়া অনেক বয়স্ক রোগী শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হচ্ছে।

চমেক হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের কনসালটেন্ট ডা. সুপর্না দাশ বলেন, গরমের সময় শিশুরা বিভিন্ন ধরনের রোগের ঝুঁকিতে থাকে। এ সময় সাধারণ সর্দি, জ্বর, কাশি, নিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কিউলাইটিসে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা থাকে। আমাদের ওয়ার্ডে ক’দিন ধরে এ ধরনের রোগীর চাপ বেড়েছে।

ফৌজদারহাট বিআইটিআইডি হাসপাতালের ক্লিনিক্যাল ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. মামুনুর রশীদ আজাদীকে বলেন, আমাদের হাসপাতালে ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা কয়েক গুণ বেড়েছে। এছাড়া ডেঙ্গু, জ্বর, কাশি ও নিউমোনিয়ার রোগী তো আছেই।

চট্টগ্রাম মা ও শিশু জেনারেল হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের রেজিস্ট্রার ডা. সেঁজুতি সরকার আজাদীকে বলেন, গরমের প্রভাবে হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোর দুই জায়গাতে রোগীর চাপ বেড়েছে। আমরা রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে যাচ্ছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভোজ্যতেলের দাম বাড়াতে চান মিলাররা, প্রতিমন্ত্রী বলছেন সুযোগ নেই
পরবর্তী নিবন্ধচর বাকলিয়ায় বিদ্যুৎ প্রকল্প