হাসপাতালের বারান্দা-মেঝেতেও ঠাঁই মিলছে না রোগীদের

বোয়ালখালীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ

বোয়ালখালী প্রতিনিধি | শুক্রবার , ১২ মে, ২০২৩ at ৫:৩১ পূর্বাহ্ণ

বোয়ালখালীতে ডায়রিয়ার প্রকোপ চরম আকার ধারণ করেছে। এতে চাপ বাড়ছে উপজেলা হাসপাতালের উপর। প্রতিদিন যে হারে রোগী আসছে তাতে সিঁড়ি ও বারান্দায় শয্যা পেতেও সঙ্কুলান হচ্ছে না ৫০ শয্যার এ হাসপাতালটিতে। এ অবস্থায় রোগীকে সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেয়ে যেতে হচ্ছে নার্স ও চিকিৎসদের।

হাসপাতালের নার্স ইনচার্জ জোৎস্না আকতার বলেন, প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী আসছে আমাদের এখানে। কিছু ভর্তি হচ্ছেন, অনেককে আবার ব্যবস্থাপত্র দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। তারপরও স্থান সংকুলান হচ্ছে না। এক প্রকার হিমশিম খেয়ে যেতে হচ্ছে আমাদের। তবে এ মুহূর্তে ডায়রিয়ার স্যালাইন ও অন্যান্য চিকিৎসা সামগ্রীর সংকট নেই বলে জানান তিনি।

চিকিৎসকরা বলছেন, তীব্র গরমে ও খাবারে অনিয়মের কারণে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ছে। এদিকে সংস্কারের অজুহাতে শিশু ওয়ার্ডটি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রাখায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে। কারণ দীর্ঘদিন এ ওয়ার্ডটি বন্ধ থাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিশু চিকিৎসা। মহিলা ওয়ার্ডের ফ্লোরে ও বারান্দায় অবস্থান নিয়ে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে তাদের। এতে বেশ দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে উপজেলার দূরদূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা এসব শিশু ও তাদের অভিভাবকদের।

গতকাল বিকেলে সরেজমিনে হাসপাতালটি ঘুরে দেখা গেছে, এর ভেতরেবাইরে তিল ধারণের জায়গা নেই। পুরুষ, মহিলা ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগীতে ঠাসা। অনেককেই হাসপাতালের মেঝেতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। শিশু ওয়ার্ডটি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় দূরদূরান্ত থেকে আসা শিশু রোগী ও অভিভাবকরা হাসপাতালের মহিলা ওয়ার্ডে অবস্থান নিয়েছেন।

জানা গেছে, গত দেড় মাস ধরে শিশু ওয়ার্ডে সংস্কার কাজ চলছে। এ কারণে সেটি বন্ধ। হাসপাতালের বাইরে চাকচিক্য দেখা গেলেও ভেতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক ময়লা। রোগীদের বেডের আশপাশে ময়লা আবর্জনায় ভরপুর। নোংরা এ পরিবেশে চিকিৎসা নিচ্ছে শিশুরা। বারান্দায় ফ্যান না থাকায় গরমে রোগীদের কাহিল অবস্থা। বারান্দায় স্ট্যান্ড না থাকায় এক শিশু রোগীর পিতাকে স্যালাইন শেষ না হওয়া পর্যন্ত হাতে স্যালইন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। এ দুর্যোগ মুহূর্তে সংস্কারের চাইতে রোগীর সেবাকে বড় করে দেখা উচিত বলে মনে করেন রোগীর স্বজনরা। ডায়রিয়া আক্রান্তদের মধ্যে বয়স্কদের চাইতে শিশুর সংখ্যা কম নয় দাবি করে জরুরি ভিত্তিতে শিশু ওয়ার্ডটি খুলে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।

এ নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে শিশু ওয়ার্ডটির সংস্কার কাজ শেষ না হওয়ায় ঠিকাদার বুঝিয়ে দিচ্ছেন না জানিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. প্রতীক সেন বলেন, এ মুহূর্তে সবাইকে একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। ডায়রিয়া প্রতিরোধে বাইরের খাবার ও বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। ডায়রিয়া যেহেতু পানিবাহিত রোগ তাই নিরাপদ বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসীতাকুণ্ডে দুইদিনে দুই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবকের মৃত্যু
পরবর্তী নিবন্ধখাগড়াছড়ির সাবেক সার্ভেয়ারের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা