হালদা ভ্যালি চা বাগান ম্যানেজারের কারাদণ্ড

টিলা কেটে পুকুর খনন ।। নাদের খানের বিরুদ্ধে মামলা

ফটিকছড়ি প্রতিনিধি | সোমবার , ৩০ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৬:০৮ পূর্বাহ্ণ

বন ও পরিবেশ আইন উপেক্ষা করে পাহাড় ও মাটি খনন করার দায়ে পেডরোলো গ্রুপের কর্ণধার নাদের খানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল রবিবার রাতে ভূজপুর থানায় মামলাটি দায়ের হয় বলে নিশ্চিত করেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন ফারুকী এবং তিনি নিজেই মামলাটি তদন্ত করবেন। মামলার বাদী নারায়ণহাট ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু বক্কর। এর আগে দুপুরে নাদের খানের মালিকানাধীন হালদা ভ্যালি টি এস্টেটের সহকারী ম্যানেজারকে এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

ফটিকছড়িতে অবৈধভাবে টিলা কেটে পুকুর খনন করায় এই দণ্ড দেওয়া হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত মহসিন হোসেন (৩০) চা বাগানে সহকারী ব্যবস্থাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি চাঁদপুরের উত্তর চর ভৈরবী গ্রামের আবদুল হাসেমের ছেলে। খনন কাজে নিয়োজিত এস্কেভেটর চালক স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম দাশকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডও দেওয়া হয়।

গতকাল দুপুরে উপজেলার নারায়ণহাট ইউনিয়নের হালদা ভ্যালি চা বাগানে অভিযান চালান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাব্বির রহমান সানি।

জানা গেছে, হালদা ভ্যালি চা বাগানের অভ্যন্তরে বাদুড়খিল নামক স্থানে টিলা কেটে অবৈধভাবে পুকুর খনন করছিল বাগান কর্তৃপক্ষ। এই সময় টিলা কাটায় জড়িত থাকায় বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক মহসিন হোসেনকে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া খনন কাজে নিয়োজিত এস্কেভেটর চালক স্থানীয় বাসিন্দা গৌতম দাশকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে বাগান এলাকায় সরকারি রাস্তার ওপর গেট নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করায় মোবাইল কোর্ট চলাকালীন তা উন্মুক্ত করে গেটটি সার্বক্ষণিক খোলা রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়। অভিযান পরিচালনায় সহায়তা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এটিএম কামরুল ইসলাম, ভূজপুর থানা পুলিশের একটি দল ও স্থানীয় বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

সুত্রজানায়, ২০১৭ সালে রামগড়সীতাকুণ্ড সংরক্ষিত বনাঞ্চলে অনুপ্রবেশ করে দখলের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় হালদা ভ্যালির ব্যবস্থাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সহকারী ব্যবস্থাপক রাজিব আহম্মদ জেল কাটেন। বন বিভাগের জমি জবর দখল ও মাটি কাটার জন্য নারায়ণহাট রেঞ্জের বন কর্মকর্তা অন্তত ২১ মামলা করেছিল এই চা বাগানের বিরুদ্ধে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলে সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধে বনে অনুপ্রবেশে ২০১৭ সালে স্থিতাবস্থা জারি করেন আদালত। তবে আদালতের নির্দেশ অমান্য করেই বনের পাহাড় কাটার অভিযোগ উঠেছে হালদা ভ্যালি টি এস্টেট কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

ইউএনও সাব্বির রহমান সানি সাংবাদিকদের বলেন, আনন্দপুর (হালদা ভ্যালি) চা বাগানের অভ্যন্তরে বাদুড়খিল নামক স্থানে টিলার পাদদেশে অবৈধভাবে একটি লেক খনন করায় বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০ এর ধারা ৪ () লংঘন করার অপরাধে একই আইনের ধারা১৫ অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। টিলা কাটে পরিবেশের ক্ষতিসাধনে জড়িত থাকায় বাগানের সহকারী ম্যানেজার ও এস্কেভেটর চালককে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধব্যবসায় বড় বাধা দুর্নীতি
পরবর্তী নিবন্ধআবার সুযোগ পেলে বিএনপি দশ ‘বাংলা ভাই’ বানাবে : তথ্যমন্ত্রী