স্মৃতির পাতায় সিজিএস

সাফকাত জাহান | রবিবার , ৮ জানুয়ারি, ২০২৩ at ৮:১৭ পূর্বাহ্ণ

মানুষের জীবনে অনেক কিছু স্মৃতি থাকে যা সে সারা জীবনে ধারণ করতে ভালোবাসে। আজকে আমি আমার কিছু স্মৃতি পাঠকদের সাথে শেয়ার করবো, যা আমি আমার মনের গহীন কোণে ধারণ করে থাক। কিছু মধুর স্মৃতি। প্রফেশনাল লাইফে আমি একজন টিচার। ২৮ বছরের দীর্ঘ শিক্ষকতার জীবন আমার। আর এই ২৮ বছরের মধ্যে ২০ বছরে আমি শিক্ষকতা করেছি চট্টগ্রাম গ্রামার স্কুলে। কিছুদিন আগে হোয়াটস্‌্‌অ্যাপে একটা ফোন পেলাম। এখানে বলে রাখি আমি সিজিএস ছেড়েছি আট বছর আগে। ফোন এর ওপর এ ফারহাত আপা। আমার সিজিএস ডিরেক্টর। উনি বললেন, স্কুল এর ৩০ বছর প্রোগ্রাম। আমাকে দাওয়াত দিতে ফোন করেছেন। আমার মনটা ভরে গেল। অনেক পুরানো স্মৃতি মনে পড়ে গেল।

তখন আমার ২১ বছর, সালটা ১৯৯৪। অগাস্ট মাসে অনার্স ১ম বর্ষ ফাইনাল পরীক্ষা দিয়ে ঘরে বসে আছি। আমার কাজিন এর এক ননদ আমাদের বাসায় বেড়াতে এসে আম্মাকে বললো উনি যেই স্কুলে আছেন, সেখানে কিছু দিনের জন্যে একজন টিচার লাগবে। রাতে আমি আম্মাকে বললাম আমি তো বসেই আছি, আমি কাজটা করি। আম্মা বললো দেখো টিচিং করতে পারবে কিনা। পরের দিন বুধবার। দিনটা আমার খুব মনে আছে। কারণ আমার মা লেডিস ক্লাব করতেন। আর প্রতি বুধবার আম্মরা ক্লাব এ যেতেন। আমি আম্মাকে ক্লাব এ নামিয়ে দিয়ে সিজিএস গেলাম। সে সময় সার্সন রোডে স্কুল ছিল। তখন স্কুল এ কোনো ফিক্স প্রিন্সিপাল ছিলো না। চারজন ডিরেক্টর রবি থেকে বিষ্যুদ রোটেট করে হেড এর অফিস করতেন। ওই দিন ছিলেন ফারহাত আপা। আমার সাথে কিছু কথা বলে বললেন কাল থাকে জয়িনিং করতে। সেই আমার চাকরি শুরু ২১ বছর বয়সে। সিজিএস ১৯৯২ সালে শুরু হলো আর আমি জয়েন করলাম ১৯৯৪ এ। তখন স্কুল ছিল ক্লাস ত্রি থেকে ও’লেভেল পর্যন্ত। আমি ক্লাস নিতাম ত্রি থেকে ক্লাস সিক্স। সে তো সময় চলে গেল। ১৯৯৬ এর জানুয়ারি মাসে শুরু হলো লোয়ার ক্লাস। যেহেতু আমি অনার্স পড়তেই অল্পসময়ের জন্যে লোয়ার স্কুল এ জয়েন করলাম স্কুল করে অনার্স ক্লাস করতাম। ১৯৯৮ এ ক্লাস টিচার হলাম। ২০০০এ মাস্টার্স শেষ করলাম। আমার আব্বুর ইচ্ছা ছিল আমি ব্যাংকে জয়েন করি। কিন্তু আমার বাচ্চাটি হলো একই বছর, মা হয়েই ভাবলাম বাচ্চা কী করে মানুষ করবো ৯টা৫টা জব করলে, বাচ্চা মানুষ কিভাবে হবে। তাই রয়েই গেলাম স্কুলে। ২০০২ হলাম ক্লাস কোঅর্ডিনেটর ২০০৩ তে হলাম ওভার অল কোঅর্ডিনেটর। সেই আরও স্কুলের সাথে জড়িয়ে গেলাম। ২০১০এ সিজিএস ঘঈ হলো। মিডল স্কুল থাকে ফরিদা আপা গেলেন হেড হয়েই আর আমাকে পাঠানো হলো ডেপুটি হেড করে লোয়ার স্কুল থেকে। ২০১৪ পর্যন্ত আমি আমার ডিউটি করি সে এনসিতে।

সিজিএসএ আমার স্মৃতি নিয়ে আমাকে একটা বই লিখতে হবে। আজকে সিজিএসএর ৩০ বছর উপলক্ষে আমার এই লেখা। দীর্ঘ বিশ বছর আমি অনেক অনেক ভালোবাসা পেয়েছি স্কুল এ। আজ যাদের কথা না লিখলেই নয় তারা হলেন আমার ৩ ডিরেক্টর। মিসেস সেরীন ইস্পাহানি, মিসেস ফারহাত খান, এবং মিসেস বিলকিস দাদা। যাদের কারণে আজকের আমি সাফকাতএর একজন শিক্ষিকা হয়েই উঠা। আমি চির কৃতজ্ঞ তাদের কাছে। সিজিএসএর গত ৩০ বছর এর সকল ডিরেক্টর, হেডস, ডেপুটি হেডস, অ্যাডমিন, টিচার্স, সাপোর্ট স্টাফ, স্টুডেন্টস, পেরেন্টসদের জানাই শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। সামনের দিন গুলো সিজিএসএর আরো ভালো কাটুক এই প্রত্যাশাই শেষ করলাম। সবাই ভালো থাকবেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধধূসর কুয়াশা
পরবর্তী নিবন্ধদেশ হতে দেশান্তরে