স্বপ্নই মানুষকে এগিয়ে নেয়

ফ্রোবেল একাডেমিতে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে এম এ মালেক ।। মনোরম ও দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাসের প্রশংসা

আজাদী প্রতিবেদন | শুক্রবার , ২৭ মে, ২০২২ at ৫:২৮ পূর্বাহ্ণ

ফ্রোবেল একাডেমির দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস দেখে মুগ্ধতা প্রকাশ করেছেন সাংবাদিকতায় একুশে পদকপ্রাপ্ত দৈনিক আজাদী সম্পাদক এম এ মালেক। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত গণিত অলিম্পিয়াডে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মুগ্ধতার কথা জানান। গতকাল দুপুরে স্কুল প্রাঙ্গণে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে এম এ মালেক বলেন, আমি অভিভূত। পরিবেশটাও এমন মনোরম, সত্যিই মুগ্ধতা জাগানিয়া একটি ক্যাম্পাস। আমার নাতনি মাত্র স্কুলে যাওয়া শুরু করেছে। ফ্রোবেলের মতো এমন একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান দিয়েই তার শিক্ষা জীবন শুরু করতে পেরেছে দেখে আমার খুবই ভালো লাগছে।
আমন্ত্রণের মাধ্যমে এমন মনোরম ও দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস দেখার সুযোগ করে দেয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদও জানান দৈনিক আজাদী সম্পাদক।

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আব্দুল কালামের উদ্ধৃতি দিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এম এ মালেক বলেন, মানুষ ঘুমিয়ে যেটা দেখে সেটি স্বপ্ন নয়। স্বপ্ন সেটি, যা তোমাকে ঘুমোতে দেয় না। তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যেকের স্বপ্ন থাকতে হবে। স্বপ্নই মানুষকে এগিয়ে নেয়। নিজের একটি মাত্র স্বপ্ন ছিল জানিয়ে একুশে পদকপ্রাপ্ত এম এ মালেক বলেন, আমার স্বপ্নটি ছিল, আমার বাবার নিজ হাতে গড়া পত্রিকাটিকে প্রতিষ্ঠিত করা। আমি সেটা করতে পেরেছি। আমার স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। তবে এটি করতে গিয়ে অনেক বছর আমি হকারের মতো পত্রিকাও বিলি করেছি। আজ দৈনিক আজাদী মানে আমার কাছে একটি গর্বের নাম। অনেকেই আমার কাছে জানতে চান- আজাদী কেন জাতীয়ভাবে ঢাকা থেকে প্রকাশ করি না। আমি বলি, আমার বাবা আজাদী বের করেছেন চট্টগ্রামের জন্য। চট্টগ্রামের মানুষের কথা বলার জন্য। তাই এটি ঢাকা থেকে বের করার কোনো ধরনের ইচ্ছে আমাদের নেই।

মা-বাবা ও শিক্ষক, এই তিনজন মানুষকে কখনো অসম্মান না করার উপদেশ দিয়ে আজাদী সম্পাদক বলেন, কেবল এই তিনজন মানুষই কোনো কিছুর বিনিময়ের আশা না করে অকাতরে সব করে যান। তাই এই তিনজনকে সব সময়ই মনে রাখতে হবে, খেয়াল রাখতে হবে।

অনুষ্ঠানে স্কুলের শিক্ষার্থীদের আঁকা চিত্রকর্ম, গাছের চারা ও ক্রেস্ট দিয়ে এম এ মালেককে সম্মাননা জানান বিএসআরএম-এর চেয়ারম্যান আলীহুসাইন আকবর আলী। স্কুল প্রধান নুসরাত খানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দৈনিক আজাদীর পরিচালনা সম্পাদক ওয়াহিদ মালেক ও নির্বাহী সম্পাদক শিহাব মালেক। বিশেষ অতিথিদেরও চিত্রকর্ম, গাছের চারা ও ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা জানানো হয়।

স্বাগত বক্তব্যে ফ্রোবেল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ হাওরা তেহসিন জোহাইর বলেন, ইনক্লুসিভ এডুকেশনের মাধ্যমে স্কুলে শিক্ষার্থীদের সবকিছু শেখানো হচ্ছে। শুধু বই থেকে শেখা না, জীবন-যাপন থেকে শুরু করে নৈতিকতা ও বাস্তবতা সবই তারা শিখছে। গণিত অলিম্পিয়াডে বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়ে তিনি
বলেন, পুরস্কার পাওয়াটাই বড় কথা নয়, প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়াটাই বড় কথা। শিক্ষা ও সমাজের প্রয়োজনীয়তার নিরিখে দৈনিক আজাদী আরো সচেতনতা সৃষ্টি করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন ফ্রোবেল একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ হাওরা তেহসিন জোহাইর। পরে গণিত অলিম্পিয়াডে বিজয়ী শিক্ষার্থীদের হাতে পদক ও সনদপত্র তুলে দেন অতিথিরা। অন্যান্যের মাঝে বিএসআরএম-এর পরিচালক ও সিইও সাবিন আমিরসহ স্কুলের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে অতিথিদের পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখানো হয়। গতকাল (২৬ মে) বিশ্ব বার্গার দিবস উপলক্ষে বার্গার তৈরির আয়োজনও রাখা হয় অনুষ্ঠানে। শিক্ষার্থীদের রান্নার মৌলিক দক্ষতা শেখাতে ‘ফ্রোবেল মাস্টারশেফ’ নামে অত্যাধুনিক একটি রন্ধনশালাও চালু করা হয়েছে স্কুলে। যেখানে সপ্তাহব্যাপী রান্না উৎসব উদযাপন করা হয়েছে বলে জানান আয়োজকরা। অতিথিরা এই রন্ধনশালা ঘুরে দেখেন এবং বার্গার তৈরির প্রক্রিয়া উপভোগ করেন। এই রন্ধনশালায় সহায়তাকারী অভিভাবকদের মধ্যে শানামা আজিম, তাহমিনা নুর চৌধুরী, তানিয়া রহমান সুমি এবং উম্মে আয়শা সিদ্দিকা প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস :
ফ্রোবেল একাডেমি, ক্যামব্রিজ ও এসটিইএম সনদপ্রাপ্ত চট্টগ্রাম শহরের একটি স্বনামধন্য ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। আধুনিক শিক্ষা-সহায়ক প্রযুক্তি ও শিক্ষাবান্ধব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্কুলটি নগরীর অনন্যা আবাসিক এলাকায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে। কুয়াইশ প্রান্ত দিয়ে অনন্যা আবাসিকে ঢুকতেই হাতের ডানে ফ্রোবেল একাডেমির দৃষ্টিনন্দন ক্যাম্পাস। ৫ তলা ভবনটিতে রয়েছে সুপরিসর খোলা জায়গা, খোলামেলা শ্রেণিকক্ষ, ইনডোর খেলাধুলার ব্যবস্থা, মাল্টিপারপাস বাস্কেটবল কোর্ট, খেলার মাঠ ও সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার। মেকারস্পেস তো আছেই। এ ছাড়াও রয়েছে সহশিক্ষা কার্যক্রমের আরো নানাবিধ সুযোগ-সুবিধা। আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার সব দিক বিবেচনায় নিয়ে ক্যাম্পাসটির এই দৃষ্টিনন্দন নকশা করা হয়েছে বলে জানান স্কুল সংশ্লিষ্টরা।

শিক্ষাব্যাবস্থায় ব্যতিক্রমধর্মী নানা উদ্যোগের মাধ্যমে ফ্রোবেল একাডেমি শিশুদের ব্যক্তিত্ব বিকাশ, চিন্তাপদ্ধতির উন্নয়ন, সিদ্ধান্ত গ্রহণের সক্ষমতা, সময়ানুবর্তীতা শিক্ষার পাশাপাশি গণিত, বিজ্ঞান, ইংরেজি, বাংলা, আইসিটি, ধর্মীয় শিক্ষা এবং ভূগোলসহ ক্যামব্রিজ অনুমোদিত সকল প্রাথমিক বিষয়গুলোর সঠিক ও ব্যবহারিক পাঠদান নিশ্চিত করছে বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ হাওরা তেহসিন জোহাইর। স্কুলটিতে বর্তমানে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত চালু রয়েছে। তবে খুব শীঘ্রই ‘ও’ লেভেল পর্যন্ত চালু করা হবে বলে স্কুল সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধপাচার হওয়া অর্থ ফেরাতে দায়মুক্তির ঘোষণা আসছে : অর্থমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধ৭৮৬