স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন চেয়ে ২০১ শিক্ষকের চিঠি

চবি হলুদ দল

চবি প্রতিনিধি | রবিবার , ১৩ নভেম্বর, ২০২২ at ৭:৫৩ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) আওয়ামী লীগ পন্থী শিক্ষকদের আদর্শিক প্লাটফর্ম হলুদ দল। বিশ্ববিদ্যালয়ে আদর্শিক সব ধরনের সিদ্ধান্তের জন্য নীতিনির্ধারণী পর্ষদ হলো সেই দলের স্ট্যান্ডিং কমিটি। দুই বছর পর পর এর নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও হলুদ দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন হয়েছিল ২০১৭ সালে। তিন বছর ধরে চলছে মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি দিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো নির্বাচন এলে সেখানে দলের মনোনয়নের পাশাপাশি বিদ্রোহীদের ছড়াছড়ি দেখা যায়। তাই আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে স্ট্যান্ডিং কমিটির নির্বাচন চেয়েছেন হলুদ দলের ২০১ জন শিক্ষক। এ ব্যাপারে তারা গতকাল শনিবার আহ্বায়ককে চিঠি দিয়েছেন।

চিঠিতে সদস্যরা বলেন, স্ট্যান্ডিং কমিটি গঠিত হয় দুই বছরের জন্য। সে হিসাবে ২০১৭ সালে নির্বাচিত কমিটির মেয়াদ ২০১৯ সালেই শেষ। পাশাপাশি নির্বাচিত ১৫ জন সদস্যের মধ্যে ৬ জন সদস্যের অবসর গ্রহণ, লিয়েন, শিক্ষা ছুটি প্রভৃতি কারণে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না। অপরদিকে, অনেক নবীন শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন, যাদের প্রায় সবাই হলুদ দলের ভাবাদর্শী।
মনোনয়নে দলীয় পছন্দের অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না অভিযোগ তুলে চিঠিতে বলা হয়, মেয়াদোত্তীর্ণ স্ট্যান্ডিং কমিটি হলুদ দলের বর্তমানে কর্মরত শিক্ষকদের প্রতিনিধিত্বশীল নয়, যার প্রমাণ সাম্প্রতিক সময়ে তাদের দেয়া মনোনয়নের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রার্থীর নির্বাচনে ভরাডুবি। অনেক প্রার্থী স্ট্যান্ডিং কমিটির পছন্দের প্রার্থীর বিরোধিতা করেও জয় লাভ করেছেন, যা প্রমাণ করে এই কমিটির প্রতি সাধারণ সদস্যদের আস্থা নেই।

চিঠিতে আরো বলা হয়, আগামী বছরের শেষের দিকে দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। দেশে বর্তমানে বিএনপি ও জামায়াতসহ ধর্মান্ধ প্রতিক্রিয়াশীল রাজনৈতিক গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তিকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য পুনরায় নানা ধরনের অপতৎপরতায় লিপ্ত। এদের সাথে পাকিস্তানসহ প্রতিক্রিয়াশীল বিদেশি শক্তিও সক্রিয় রয়েছে। এ অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী আদর্শিক শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করার জন্য প্রয়োজন আস্থাশীল নতুন কমিটি।

এ ব্যাপারে হলুদ দলের স্ট্যান্ডিং কমিটির বর্তমান সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর বলেন, ৩ বছর হয়ে গেল কমিটির মেয়াদ শেষ। কিন্তু তারা নির্বাচন না দিয়ে নিজেদের ইচ্ছামতো প্রার্থী বিভিন্ন পর্ষদে মনোনয়ন দিয়েছেন। লজ্জার ব্যাপার হলো, তাদের হার হয়েছে, যা প্রমাণ করে এই কমিটির উপর আওয়ামী পন্থী শিক্ষকদের আস্থা নেই। সামনে অনেকগুলো পর্ষদের নির্বাচন হবে। মেয়াদহীন স্ট্যান্ডিং কমিটি যদি সেখানেও খামখেয়ালিভাবে মনোনয়ন দেয় তাহলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হবে। তাই দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য আমরা আহ্বায়ককে চিঠি দিয়েছি।
চিঠিতে স্বাক্ষর করা আরেক শিক্ষক ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন বলেন, ২ বছরের কমিটি ৫ বছর ধরে চলছে। নতুন অনেক শিক্ষক এসেছে, যারা আওয়ামী ভাবাদর্শের। তাদের সাথেও এই কমিটির সমন্বয় নেই। তাছাড়া এই কমিটির ৬ জনই এখন দায়িত্ব পালন করেন না। তাই নির্বাচন হওয়া জরুরি।

এ ব্যাপারে স্ট্যান্ডিং কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. সিকান্দর চৌধুরী বলেন, চিঠি পেয়েছি। নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে আমাদেরও চিন্তাভাবনা রয়েছে। তবে সদস্য সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করতে হবে। স্বাক্ষরকারী ২০১ জনের মধ্যে কয়েকজন আমাদের সংগঠনের নয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধদেওয়ানহাটে ‘চাঁদা না দেয়ায়’ যুবককে ছুরিকাঘাত
পরবর্তী নিবন্ধস্কুলের শ্রেণি কক্ষে দেশীয় অস্ত্রের মজুদ