স্টিমার সার্ভিস বাড়ছে চট্টগ্রাম-হাতিয়া রুটে

চালু হচ্ছে এমভি বার আউলিয়া, চরের কারণে বন্ধ চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ রুটে জাহাজ চলাচল

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ২৩ নভেম্বর, ২০২১ at ৬:০১ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম হাতিয়া রুটে স্টিমার সার্ভিস বাড়ানো হচ্ছে। দীর্ঘদিন অচল থাকা এমভি বার আউলিয়া সচল করার পর চট্টগ্রাম-হাতিয়া রুটে স্টিমার সার্ভিসে যাত্রী পরিবহনে নতুন পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে এই রুটে বিদ্যমান দুই দিনের স্থলে সপ্তাহে তিনদিন স্টিমার চলাচল করবে। এর মধ্যে প্রতি শনিবার, সোমবার ও বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সদরঘাট হতে জাহাজ ছাড়বে এবং শনিবার রোববার ও মঙ্গলবার সকাল ১০টায় হাতিয়া থেকে চট্টগ্রামের পথে জাহাজ ছেড়ে আসবে। আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত সময়ের জন্য এই সিডিউল ঘোষণা করা হয়েছে।
এই রুটের সাথে সন্দ্বীপ যুক্ত করতে পারলে যাত্রী সংখ্যা অনেক বৃদ্ধি পেতো, কিন্তু চ্যানেলে চর জাগার কারণে চট্টগ্রাম-হাতিয়া রুটের জাহাজ সন্দ্বীপে ভিড়তে পারে না। অবশ্য সীতাকুণ্ডের কুমিরা দিয়ে সন্দ্বীপের গুপ্তাছড়ায় প্রতিদিনই স্টিমার সার্ভিস রয়েছে। বিআইডব্লিউটিসি সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম শহরসহ সন্নিহিত অঞ্চলের সাথে দ্বীপাঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে স্টিমার সার্ভিস। এক সময় চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন দ্বীপাঞ্চল এবং উপকুলীয় এলাকায় বিভিন্ন রুটে স্টিমার সার্ভিস চালু থাকলেও দিনে দিনে তা সংকোচিত হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে গেছে চট্টগ্রাম থেকে বিভিন্ন উপকূলীয় এবং দ্বীপাঞ্চলে স্টিমার সার্ভিস। চট্টগ্রাম বরিশাল রুট একসময় বেশ জমজমাট থাকলেও জাহাজের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এই রুট চালুর ব্যাপারে বিভিন্ন সময় পরিকল্পনা গ্রহণ করা হলেও তা কার্যকর হয়নি। চট্টগ্রাম-সন্দ্বীপ রুটে প্রচুর যাত্রী চলাচল করলেও এই রুটও বন্ধ রয়েছে। চর জেগে উঠায় চট্টগ্রাম থেকে যাওয়া কোন জাহাজ সন্দ্বীপে ভিড়তে পারে না। এতে চট্টগ্রাম থেকে সরাসরি সন্দ্বীপ যাতায়ত সম্ভব হয় না। যাত্রীদের চট্টগ্রাম শহর থেকে সীতাকুণ্ডের কুমিরা হয়ে গুপ্তাছড়া যেতে হয়। একইভাবে সন্দ্বীপের গুপ্তাছড়া থেকে যাত্রী নিয়ে স্টিমার সীতাকুণ্ডের কুমিরায় ভিড়ে। ওখান থেকে যাত্রীদের আলাদাভাবে শহরে আসতে হয়। এমভি আইভী রহমান নামের একটি স্টিমার প্রতিদিনই এই রুটে যাত্রী পরিবহন করে।
চট্টগ্রাম হাতিয়া রুটে এমভি তাজউদ্দীন আহমেদ ও এমভি বার আউলিয়া নামের দুইটি জাহাজ চলাচল করতো। দীর্ঘদিনের পুরনো জাহাজ দুইটি বিভিন্ন সময় সাগরে নষ্ট হয়ে আটকে থাকে। এক পর্যায়ে এমভি বার আউলিয়াকে বহর থেকে বের করে নেয়া হয়। প্রায় এক হাজার যাত্রী পরিবহনে সক্ষম জাহাজটি অচল হয়ে পড়ায় বিআইডব্লিউটিসি সংকটে পড়ে। চট্টগ্রাম হাতিয়া রুট সীমিত করে শুধুমাত্র একটি স্টিমার দিয়ে পরিচালনা করা হয়। ৭৫০ যাত্রী বহনে সক্ষম এমভি তাজউদ্দিন আহমেদ সপ্তাহে দুইদিন চলাচল করতে থাকে। জাহাজটিতে প্রতি ট্রিপে গড়ে এক দেড়শ’ জনের বেশি যাত্রী পাওয়া যেতো না। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, চট্টগ্রাম হাতিয়া রুটে সাধারণ আসনে ২৫৫ টাকা এবং কেবিনে দুইজনের জন্য ১৮শ’ টাকা ভাড়ায় চট্টগ্রাম থেকে হাতিয়া কিংবা হাতিয়া থেকে চট্টগ্রামে যাতায়ত করা যাবে।
উক্ত রুটে জাহাজ চলাচল বাড়ানোর বিষয়ে গতকাল বিআইডব্লিউটিসির চট্টগ্রাম কার্যালয়ের ডিজিএম গোপাল চন্দ্র মজুমদার বলেন, এটি গুরুত্বপূর্ণ একটি রুট। এমভি বার আউলিয়াকে নতুনের মতো করে তৈরি করা হয়েছে। লোকসান হলেও দ্বীপাঞ্চলের মানুষের কথা বিবেচনা করে সরকার এ রুটে সুবিধা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
বিআইডব্লিউটিসির সহ- মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য যাত্রী ও কার্গো) ফয়সল আলম চৌধুরী বলেন- এমভি বার আউলিয়া বেশ সুন্দরভাবে তৈরি করা হয়েছে। তাই আমরা এ রুটে সপ্তাহে তিনদিন স্টিমার পরিচালনার উদ্যোগ নিয়েছি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকুমিল্লায় অফিসে ঢুকে কাউন্সিলরসহ দুজনকে গুলি করে হত্যা
পরবর্তী নিবন্ধএনজিওর নামে নিম্নআয়ের ১৪ হাজার মানুষের ২৮ লাখ টাকা আত্মসাৎ