সেক্রেটারিসহ অধিকাংশ পদে এগিয়ে আ. লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন

আজাদী প্রতিবেদন | বৃহস্পতিবার , ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ at ৫:২৪ পূর্বাহ্ণ

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির ২০২১ এর নির্বাচনে সভাপতি পদে এগিয়ে রয়েছেন বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের প্রার্থী এনামুল হক। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে বিশাল ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এএইচএম জিয়া উদ্দিন। এছাড়া বাকিপদগুলোর অধিকাংশতেই এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরা। গতকাল রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত আইনজীবী মিলনায়তনে চলা ভোট গণনার সর্বশেষ খবরে এই তথ্য জানা যায়। এর আগে সকাল ৯টায় আইনজীবী মিলনায়তনে উৎসবমুখর পরিবেশ ও বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ বিকাল ৪টায় শান্তিপূর্ণভাবে সমাপ্ত হয়।
জানা গেছে, নির্বাচনে ৯টি সাংগঠনিক পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের প্যানেলের প্রার্থীরা সাধারণ সম্পাদকসহ সাতটি পদে এগিয়ে রয়েছেন। বাকি দুইটি পদের এগিয়ে রয়েছেন বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদ প্যানেলের প্রার্থীরা। অন্যদিকে ১০টি নির্বাহী সদস্য পদে বেশিরভাগই এগিয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ প্যানেলের প্রার্থীরা।
রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত সর্বশেষ ভোট গণনার ফলাফলে জানা গেছে- সভাপতি পদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের মো. এনামুল হক আড়াই শতাধিক ভোটের ব্যবধানে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের এম এ (আবু মোহাম্মদ) হাসেম থেকে এগিয়ে রয়েছেন। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে বিশাল ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের এ এইচ এম জিয়াউদ্দিন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা হলেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ও সমমনা আইনজীবী সংসদের তৌহিদুল মুনির চৌধুরী টিপু। এছাড়া সিনিয়র সহ সভাপতি পদে বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছেন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের মো. সেকান্দার চৌধুরী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের সৈয়দ আনোয়ার হোসেন।
সহ সভাপতি পদে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের আলী আশরাফ চৌধুরী বিপুল ভোটে এগিয়ে রয়েছেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের মোহাম্মদ আবু তাহের থেকে। সহ সম্পাদক পদে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের মোহাম্মদ আব্দুল আল মামুন তার প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী আইনজীবী ঐক্য পরিষদের আরশাদুর রহমান রিটু ও সাধারণ আইনজীবী কল্যাণ পরিষদের গাজী মো. সাদেকুল আলমের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন।
অর্থ সম্পাদক পদে এগিয়ে রয়েছে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের এস এম অহিদুল্লাহ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন আইনজীবী ঐক্য পরিষদের ইমতিয়াজ আহম্মেদ জিয়া। পাঠাগার সম্পাদক পদে এগিয়ে রয়েছে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের নজরুল ইসলাম। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আইনজীবী ঐক্য পরিষদের রবিউল হোসেন নয়ন। সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে এগিয়ে রয়েছেন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের মো. মনজুরুল আজম চৌধুরী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী রয়েছেন আইনজীবী ঐক্য পরিষদের মো. নাজমুল হাসান সিদ্দিকী। তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে এগিয়ে রয়েছেন বিএনপি সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদের মাহমুদুল আলম চৌধুরী মারুফ। তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের হাদী মো. হাম্মাদ উল্লাহ।
এছাড়া ১০টি নির্বাহী সদস্য পদে এগিয়ে রয়েছে আওয়ামী প্যানেলের প্রার্থীরা। এদের মধ্যে চার নারী প্রার্থীদের সবাই বিপুল ভোটে প্রতিপক্ষের চেয়ে এগিয়ে রয়েছেন। এ পদে প্রার্থীরা হলেন, আব্দুল সবুর, আবু নাসের রিহান, ফাতেমা নার্গিস হেলনা, গাজী মো. আইয়ুব খান, গাজী মো. শওকত হোসাইন, কাজী সোয়েব উর রশীদ সিদ্দিকী, খায়রুনন্নেসা, মারুফ মো. নজিবুল আলম, মো. আব্দুল হালিম, মো. আবদুল্লাহ আল মামুন, আব্দুল্লাহ আল নোমান, মো. আখতার হোসেন, মো. সরোয়ার হোসেন লাভলু, মোমিনুর রহমান, নূর কামাল, রহিম উদ্দিন, সাহেদা বেগম, এসএম আরমান মহিউদ্দিন, শামসুদ্দোহা মো. মাহতাব হাসান পাভেল ও জহুরা সুলতানা মুনিয়া।
আইনজীবী সমিতির ১৯টি পদে চারটি সংগঠনের ৪০ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগ সমর্থিত সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ এবং বিএনপি ও জোট সমর্থিত আইনজীবী ঐক্য পরিষদ ১৯টি পদে পৃথকভাবে পূর্ণ প্যানেলে প্রার্থী দেন। এছাড়া দলনিরপেক্ষ আইনজীবীদের সংগঠন সমমনা আইনজীবী সংসদের পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদকের একটি পদে এবং সাধারণ আইনজীবী কল্যাণ পরিষদের পক্ষ থেকে যুগ্ম সম্পাদকের একটি পদে প্রার্থী দেন।
বিকাল ৫টা নাগাদ মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হুমায়ন আকতার জানান, এবার নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৪ হাজার ৩৬০ জন। এরমধ্যে ৩ হাজার ৪২৩টি ভোট কাস্ট হয়েছে। তিনি জানান, করোনোর কারণে গতবারের নির্বাচনের চেয়ে এবার কিছুটা কম ভোট কাস্ট হলেও ভোটারদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ছিল। জানা গেছে, গতবারের নির্বাচনের চেয়ে এবার ৩৭৭টি ভোট কম পড়েছে।
নির্বাচন পরিচালনায় পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনিবাহী কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এতে মুখ্য নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ হুমায়ন আকতার। নির্বাচন কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন অ্যাডভোকেট রফিক আহমদ, মুজিবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট কাজী মুহাম্মদ নজমুল হক ও অ্যাডভোকেট মো. নুরুদ্দিন আরিফ চৌধুরী।
গত ২০ জানুয়ারি নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়। একইদিন প্রার্থীদের মনোনোয়নপত্র সংগ্রহের তারিখ ঘোষণা শুরু হয়। ২৩ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিল। ২৪ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র বাছাই ও বৈধ প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ, ২৭ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন এবং ২৮ জানুয়ারি প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। এবার ভোটগ্রহণে নতুন মাত্রা যোগ করা হয়েছিল লিন ও ভোটার নং অনুযায়ী ভোটাররা নির্ধারিত পোলিং অফিসারের টেবিল থেকে টোকেন সংগ্রহ করার বিষয়টি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধচট্টগ্রামে দুইদিনব্যাপী ভ্যাট মেলা শুরু
পরবর্তী নিবন্ধএবার সিরিজ বাঁচানোর লড়াই টাইগারদের