সেই মহিলার পাশে জেলা প্রশাসন

আজাদী প্রতিবেদন | মঙ্গলবার , ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ at ৬:২৭ পূর্বাহ্ণ

ঘরে খাবার না থাকায় ওএমএসের ট্রাকে উঠে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা চাল কুড়িয়ে নেন পঞ্চাশোর্ধ্ব গীতা বিশ্বাস। হৃদয়বিদারক ঘটনাটি নজরে পড়ার পর সেই গীতা বিশ্বাসের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। গতকাল ২০ কেজি চাল, ১০ কেজি ডাল, ১০ লিটার তেল, ৪ কেজি আলু, ২ কেজি লবণ, ২ কেজি চিনি, সাবান, শ্যাম্পুসহ প্রায় ২ মাসের নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি এবং নগদ ৫ হাজার টাকা তার হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত। গতকাল জেলা প্রশাসকের নির্দেশে নগরীর আগ্রবাদের চৌমুহনী এলাকার মিয়া বাড়ির নীচতলায় গীতা বিশ্বাসের বাসায় হাজির হন ম্যাজিস্ট্রেট। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গীতা বিশ্বাসের বয়স প্রায় ৫০।

স্বামী উজ্জ্বল বিশ্বাস প্রতিবন্ধী এবং মানসিক ভারসাম্যহীন। নিঃসন্তান এই দম্পতির বাড়ি মীরসরাই উপজেলার শ্রীপুর গ্রামে। কিন্তু স্বজনদের অত্যাচারে ১০ বছর আগে বাড়ি ছাড়েন তিনি। বর্তমানে আগ্রাবাদের চৌমুহনী এলাকার মিয়া বাড়ির নীচতলায় থাকেন। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত আজাদীকে এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গীতা বিশ্বাসের ট্রাক থেকে চাল কুড়িয়ে নেয়ার ঘটনাটি গত রোববার আগ্রাবাদের কমার্স কলেজের সামনে ঘটে। দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে চালের জন্য কান্নাকাটিও করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত চালের জন্য ট্রাকে উঠে পড়েন এবং ট্রাকের মধ্যে ছড়িয়েছিটিয়ে থাকা চাল থলের মধ্যে ঢোকাতে লাগলে তার থেকে থলে কেড়ে নেওয়া হয়। পরে তিনি কুড়িয়ে প্রায় দেড় কেজি চাল সংগ্রহ করেন। এই খবর মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ অন্যান্য সোস্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। খবরটি দৃষ্টি এড়ায়নি জেলা প্রশাসকের। তৎক্ষনাৎ গীতা বিশ্বাসের সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতে নির্দেশ দিলে আজ (গতকাল) আমরা তার বাসায় যায় এবং নগদ টাকাসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি তুলে দেয়া হয়। গীতা বিশ্বাসের নিজ বাড়ি মীরসরাইয়ে। জায়গা জমি সংক্রান্ত সমস্যা বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতার আশ্বাসও দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, এছাড়া আগ্রাবাদের স্থানীয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম বাহাদুর গীতা বিশ্বাসকে ১৫ দিন পরপর চাল ডালসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছেন। মীরসরাইয়ের ইউএনওকে গীতা বিশ্বাসের বিষয়টি মানবিক ভাবে দেখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। তাকে বয়স্ক ভাতার কার্ড বা ওএমএসের কার্ড করে দেয়া যায় কিনা সেটিও দেখবেন ইউএনও।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসুস্থ সমাজ প্রতিষ্ঠায় কুরআন-সুন্নাহ চর্চার বিকল্প নেই
পরবর্তী নিবন্ধসরকার মাদ্রাসা শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করছে