সীতাকুণ্ডের চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ মামলার অন্যতম প্রধান ও ১০ মামলার আসামি দেলোয়ার হোসেনকে আটক করেছে র্যাব-৭ । দক্ষিণ সোনাইছড়ি এলাকা থেকে গত শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে তাকে আটক করা হয়।
র্যাব জানায়, কারাবন্দী এক ব্যক্তির স্ত্রী তার দুই সন্তান নিয়ে সীতাকুণ্ড হাশেমনগরে একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। স্বামী জেলে থাকায় তিনি সন্তানদের নিয়ে বাবার বাড়ি সীতাকুণ্ড মুরাদপুরে চলে যান। গত ২৮ জুলাই সন্ধ্যায় সংবাদ পান যে, কতিপয় দুর্বৃত্ত তার বাসায় ঢুকে মালামাল বের করে নিয়ে যাচ্ছে। এ খবরে তিনি এসে দেখেন দরজা খোলা এবং মালামাল এলোমেলো অবস্থায় আছে। দুর্বৃত্তরা তার বাসা থেকে আনুমানিক দেড় লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। ছিনিয়ে নেয়া মালামাল আনার জন্য ভিকটিম তার ভাগিনা ও ফুফাতো ভাইয়ের ছেলেসহ ২৮ জুলাই রাত সোয়া ১২টার দিকে বাড়বকুণ্ড ইউনিয়ন পরিষদ সংলগ্ন রাস্তার ওপর পৌঁছালে দুষ্কৃতিকারীরা ভিকটিম, তার ভাগিনা ও ফুফাতো ভাইয়ের ছেলেকে মারধর করতে করতে বাড়বকুণ্ড মকবুল রহমান জুট মিল সংলগ্ন রেল লাইনের একটি ঝুপড়ি ঘরে নিয়ে আটক রাখে। এ সময় ভিকটিমকে ধর্ষণ করে। দুর্বৃত্তরা ধর্ষণের ছবি তাদের মোবাইলে ধারণ করে। পালিয়ে যাওয়ার আগে দুর্বৃত্তরা তাদের তিনটি মোবাইল ফোন এবং নগদ ১০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ভিকটিমের বড়ভাই ঘটনাটি জেনে তাকে উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন। এ ঘটনায় ভিকটিম বাদী হয়ে সীতাকুণ্ড মডেল থানায় ৪ জন নামীয় এবং অজ্ঞাতনামা একজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলা রুজুর পর থেকে এজাহারনামীয় আসামিদের গ্রেপ্তারের লক্ষে র্যাব-৭, চট্টগ্রাম গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে। এ সময় একটানা অভিযান চালিয়ে ১৩ ঘণ্টার মধ্যে মামলার প্রধান আসামি সাদ্দাম হোসেন ও ৩নং আসামি জাহেদ প্রকাশ মোস্তফা জাহেদকে গত ৩০ জুলাই রাতে গ্রেপ্তার করে। বাকী আসামিদের গ্রেপ্তার অভিযানের ধারাবাহিকতায় র্যাব জানতে পারে, মামলার ২নং আসামি দেলোয়ার হোসেন সীতাকুণ্ড দক্ষিণ সোনাইছড়ি এলাকায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব শুক্রবার রাত ২ টা ২০ মিনিটে অভিযান পরিচালনা করে আসামি বাড়বকুণ্ডের মৃত রুহুল আমিনের পুত্র দেলোয়ার হোসেনকে (৩৮) আটক করতে সক্ষম হয়।
সিডিএমএস পর্যালোচনা করে জানা যায়, ধৃত দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে সীতাকুণ্ড থানায় গণধর্ষণ, ডাকাতি, অস্ত্র, বিস্ফোরক, বিশেষ ক্ষমতা আইন, মারামারি, চুরি ও সরকারি কাজে বাধাদানসহ সর্বমোট ১০টি মামলা রয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তাকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।