সীতাকুণ্ডে ছোট ছোট পাহাড় ধসে বড় বিপর্যয়ের আশংকা

ধসে পড়েছে চন্দ্রনাথ পাহাড়ের টিলা

সীতাকুণ্ড প্রতিনিধি | রবিবার , ১১ জুলাই, ২০২১ at ৫:১৩ পূর্বাহ্ণ

গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টিতে সীতাকুণ্ডের পাহাড়ি এলাকায় ছোট ছোট পাহাড় ধসে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশংকা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে সীতাকুণ্ড চন্দ্রনাথ পাহাড়ের ২নং পুল নামক স্থানে পাহাড়ের টিলার একটা অংশ চলাচলের রাস্তার উপর ধসে পড়েছে। উপজেলার বিভিন্ন পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকি নিয়ে বসবাসকারীদের অন্যত্র সরে যেতে ইতোমধ্যে মাইকিং করা হয়েছে।
সীতাকুণ্ড পাহাড়ের ছোট ছোট টিলায় ও ঢালুতে প্রায় ২০ হাজার মানুষ মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। এখানে বিভিন্ন সময়ে লোকজন পাহাড় কেটে বসতি স্থাপন করেছে। পাহাড় ধসে পড়ায় এখন তাদের মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। টানা বর্ষণে ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড়গুলোর মাটি দুর্বল হয়ে পড়েছে। দিনরাত থেমে থেমে চলা হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাতে পাহাড়গুলোতে এখন বড় ধরনের ধসের আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। সেই সাথে শুরু হয়েছে পাহাড়ে অবৈধভাবে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে বসবাসকারী পরিবারগুলোর উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। যেকোনো মুহূর্তে পাহাড় ধসে প্রাণহানির আশঙ্কা করছেন প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
জানা যায়, জঙ্গল সলিমপুর, সোনাউছড়ি, কুমিরা, বাঁশবাড়িয়া, বারৈয়াঢালা, লতিফপুর, ছোট দারোগারহাট ও বাড়বকুণ্ড আশ্রয়ন প্রকল্প, সীতাকুণ্ড সদর এলাকায় পাহাড়ের টিলায় ও ঢালুতে বসতি স্থাপন করে বসবাস করছে লোকজন। এদের অধিকাংশই দিনমজুর, রিকশাচালক, স্থানীয় জুটমিল-টেঙটাইল মিলগুলোতে চাকরি এবং ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবনযাপন করছে। সীতাকুণ্ড পার্বত্য এলাকায় প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক আদিবাসী পরিবারের বসবাস রয়েছে। প্রতিনিয়ত তারা মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে বসবাস করে আসছে। তবে ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ে বসবাসরত বাসিন্দারা সেখান থেকে উঠতে চায় না। পাহাড় ছেড়ে তারা কোথায় যাবে? প্রশাসনের সে ব্যাপারে কোনো মাথা ব্যথা নেই।
বারৈয়াঢালা, সীতাকুণ্ড পৌর সদর, কুমিরা, সলিমপুর, সোনাইছড়ি এলাকায় ১৬ হাজার ২৪৪ একর বনভূমি রয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে পাঁচ হাজার একর জায়গা বেদখলে। অবৈধ দখল হওয়া জায়গার ওপর প্রায় পাঁচ হাজার পরিবারের ২০হাজার লোকজন ঘরবাড়ি তৈরি করে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস করছে।
সীতাকুণ্ড পৌর মেয়র বদিউল আলম জানান, বর্ষণের কারণে সীতাকুণ্ডে পাহাড় ধসের ঝুঁকি বেড়েছে। পাহাড়ের বসবাসকারী বাসিন্দাদের এ বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন জানান, এখন বর্ষা মৌসুম। বৃষ্টি হবেই, টানা বৃষ্টি হলে পাহাড় ধসের সম্ভাবনা রয়েছে। ইতিমধ্যে এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে। কিন্তু কেউ বসতঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে আসতে চাইছে না। তবে পাহাড়ি অঞ্চলের লোকজন এই মুহূর্তে সরে যাওয়া উচিত। বর্ষণে পাহাড়ের টিলাগুলো যে কোনো সময় ভেঙে পড়তে পারে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধবাঁশখালীর সাধনপুরে ইউএনও’র অভিযানে ৪শ ঘনফুট বালু জব্দ
পরবর্তী নিবন্ধ১শ টাকার লোভ দেখিয়ে ৭ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগ