সার্ভিস জেটিতে আসবে সুফল

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১ at ৬:৩৪ পূর্বাহ্ণ

প্রায় ৮৩ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য একটি সার্ভিস জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। বন্দরের জরিপ জাহাজ, পাইলট বোট এবং টাগবোটসহ বিভিন্ন জাহাজের চলাচল এবং রক্ষণাবেক্ষণে এই জেটি বৈপ্লবিক একটি পরিবর্তন আনবে। চট্টগ্রাম বন্দরের শত বছরের ইতিহাসে এই প্রথম সার্ভিস জেটি নির্মাণ করা হলো। এতদিন পন্টুনসহ বিভিন্ন ধরনের সুবিধার মাধ্যমে সার্ভিস জেটির প্রয়োজন মেটানো হতো। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী প্রায় ৭২২ ফুট লম্বা এই জেটি উদ্বোধনের জন্য আগামী ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম আসছেন।
সূত্র বলেছে, বিশ্বমানের যে কোনো বন্দরে সার্ভিস জেটি থাকে। ওই জেটিতে বন্দরের নিজস্ব বিভিন্ন ধরনের জাহাজ অবস্থান করে। যাতে যে কোনো প্রয়োজনে এসব জাহাজ ওই জেটি থেকে দ্রুত গন্তব্যে ছুটতে পারে। বিশেষ করে উদ্ধারকারী জাহাজ টাগবোট, জরিপ জাহাজ, আউটার থেকে বন্দরের বার্থিং এ বিদেশী জাহাজগুলোকে আনার দায়িত্বে থাকা পাইলটদের বোট, ফায়ার ফাইটিং বোট, পানিবাহী ভ্যাসেলসহ প্রয়োজনীয় জাহাজগুলো এই ধরনের জেটি ব্যবহার করে। চট্টগ্রাম বন্দরের শত বছরের ইতিহাসে এই ধরনের কোনো জেটি ছিল না। বন্দর কর্তৃপক্ষের এই ধরনের বিশ ত্রিশটি জাহাজ থাকলেও এগুলো অন্যান্য জেটি থেকে চলাচল করতো। আবার বিভিন্ন সময় পন্টুন দিয়েও এসব জাহাজে উঠানামা করানো হতো। এতে জাহাজগুলোর রক্ষণাবেক্ষণসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা হতো। এই সংকট ঘুচাতে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বছর তিনেক আগে বন্দরের ১ নম্বর জেটির উজানে সার্ভিস জেটি নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ৮৩ কোটিরও বেশি টাকা ব্যয়ে গ্রহণ করা হয় একটি প্রকল্প। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রতনু-ওহাব-এ বারিক (জেভি) ২২০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ২০ মিটার প্রস্থের সার্ভিস জেটিটি নির্মাণ করে। এটির ড্রাফট সাড়ে ৫ মিটার। জেটিতে অনায়াসে ২২০ মিটার লম্বা জাহাজ ভিড়তে পারবে। ছোট জাহাজ হলে বেশ কয়েকটি একসঙ্গে ভিড়ানো যাবে।
সূত্র বলেছে, বন্দরের নিজস্ব জাহাজগুলো নোঙর এবং রক্ষণাবেক্ষণ কাজে সার্ভিস জেটি ব্যবহৃত হলেও জরুরি প্রয়োজনে পণ্য খালাসের সুবিধাও এই জেটিতে রাখা হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলেছে, জেটি ছাড়াও দুই হাজার ৬৫০ বর্গফুটের তিনতলা একটি অফিস ভবন, ৩ হাজার বর্গফুটের স্টিল কাঠামোর একটি ওয়্যার হাউস, ২ হাজার ১০০ কিউবিক মিটারের একটি আন্ডারগ্রাউন্ড পানির রিজার্ভার, ২২২ মিটার লম্বা ৮ ফুট উঁচু রিটেইনিং ওয়াল, রিভার ব্যাংক ও শোর প্রোটেকশন, ড্রেনেজ সিস্টেম, ৫০০ কেভির বৈদ্যুতিক সাব স্টেশন, ১০০ ফুট উঁচু সিগন্যাল টাওয়ারও নির্মিত হয়েছে। আগামী ১৮ ডিসেম্বর এই জেটি উদ্বোধন করা হবে। নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ এমপি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। জেটি উদ্বোধনের পাশাপাশি ওইদিন বন্দরের উদ্ধারকারী জাহাজের বহরে কাণ্ডারী-৭ নামের নতুন একটি জাহাজও অন্তর্ভুক্ত হবে। দেশীয় ওয়েস্টার্ণ মেরিন শিপ বিল্ডার্স এই জাহাজটি নির্মাণ করেছে বলেও সূত্র জানিয়েছে।
এই ব্যাপারে গতকাল বন্দর সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সার্ভিস জেটির অভাব ছিল। বন্দরের এই অভাব ঘুচে যাচ্ছে। তিনি এই ধরনের জেটি বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রমের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেও মন্তব্য করেন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমানুষের কান্না-হাসির অংশীদার হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধমেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় বাবাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ