সাবেক সিভিল সার্জন সরফরাজ খান কারাগারে

এমআরআই মেশিন ক্রয়ে অর্থ আত্মসাৎ মামলা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৯ আগস্ট, ২০২২ at ৬:২২ পূর্বাহ্ণ

বাজার মূল্যের অধিক টাকায় এমআরআই মেশিন ক্রয়ে অর্থ আত্মসাৎ ঘটনায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ও অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। গতকাল মহানগর দাযরা জজ জেবুন্নেছা শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। এর আগে আত্মসমর্পণ করে স্থায়ী জামিনের আবেদন করলে বিচারক তা নাকচ করে দেন। দুদক পিপি কাজী ছানোয়ার আহমেদ লাভলু আজাদীকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘বাজার মূল্যের অধিক টাকায় এমআরআই মেশিন ক্রয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেছেন তিন ঠিকাদার। তাদের সহযোগিতা করেছেন চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ও অবসরপ্রাপ্ত সাবেক সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীসহ চার চিকিৎসক।’ চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের যন্ত্রপাতি ক্রয়ে দায়ের হওয়া দুর্নীতির মামলায় এ সব উল্লেখ করে গত মার্চ মাসে সাত জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদক প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল হক। চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন, জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন) ডা. মো. আবদুর রব, জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো-সার্জারি) ডা. মো. মইন উদ্দিন মজুমদার, সিনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারি) ডা. বিজন কুমার নাথ, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঢাকার বেঙ্গল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড সার্জিকেল কোং এর স্বত্বাধিকারী মো. জাহের উদ্দিন সরকার, মেসার্স আহমদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মুন্সী ফারুক হোসেন এবং এএসএলএর ব্যবস্থাপনা পরিচালক আফতাব আহমেদ।
আদালত সূত্র জানায়, একটি এমআরআই মেশিনের বাজার মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা হলেও চট্টগ্রাম
জেনালের হাসপাতাল সেটি কিনে ৬ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকায়। একইভাবে চারটি কালার ড্রপলার কেনা হয় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকায়। যদিও এই মেশিনের দাম মাত্র ৯৮ লাখ টাকা। এ ভাবে বাজার মূল্যের চেয়ে দুই-তিনগুণ বেশি দাম দেখিয়ে মোট ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা সরকারি অর্থ আত্মসাত করেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ও অবসরপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. সরফরাজ খান চৌধুরীসহ ৪ চিকিৎসক। এ কাজে তাদের সহযোগিতা করেছেন তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। দুদকের দীর্ঘ অনুসন্ধানে এ সংক্রান্ত প্রমাণ মিললে ২০১৯ সালের ২৫ নভেম্বর তাদের বিরুদ্ধে দুদক, চট্টগ্রাম-১ এ মামলাটি করেন দুদক প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম। মামলার এজহারে বলা হয়, ২০১৪ সালের ২৯ মে থেকে ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত তিনটি আলাদা কার্যাদেশের মাধ্যমে হাসপাতালের ভারী যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অধিক মূল্য দেখিয়ে পরস্পর যোগসাজশে বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা ছাড়াই জালিয়াতির মাধ্যমে বিভিন্ন
সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ভুয়া প্যাড, সিল-স্বাক্ষর ব্যবহারের মাধ্যমে উক্ত ৯ কোটি ১৫ লাখ ৩০ হাজার ৪২৫ টাকা আত্মসাৎ করা হয়।

পূর্ববর্তী নিবন্ধস্বেচ্ছায় এলাকা ছাড়ছে অবৈধরা
পরবর্তী নিবন্ধমিয়ানমারের দুটি মর্টার শেল পড়ল নাইক্ষ্যংছড়িতে