স্বেচ্ছায় এলাকা ছাড়ছে অবৈধরা

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ২৯ আগস্ট, ২০২২ at ৬:২১ পূর্বাহ্ণ

বাজারের ব্যাগে কি কি আছে, তাও দেখছে পুলিশ। পানির সংযোগ নেই, বিদ্যুৎ সেবাও সীমিত করা হয়েছে। ঢুকতে দিচ্ছে না যানবাহন। এখানে মনে হয় আর বেশি দিন থাকা যাবে না। অন্যত্র চলে যেতে হবে। ভোলার বাসিন্দা জঙ্গল সলিমপুরে গিয়ে ছিন্নমূল বনে যাওয়া নুরুল হক নুরু গতকাল আজাদীকে এ সব কথা বলেন। শুধু নুরুল হক নুরু নয়, তার মতো আরো অনেকের মনের কথা এটি। তাদের মধ্যে তৈরি হচ্ছে স্বেচ্ছায় জঙ্গল সলিমপুর ছাড়ার প্রবণতা। প্রতিদিন কেউ না কেউ অন্যত্র সরে যাচ্ছে। প্রশাসনের কঠোর নজরদারির মধ্যে তাদের পক্ষে জঙ্গল সমিলপুর এলাকায় আর অবৈধভাবে থাকা সম্ভব হচ্ছে না। সীতাকুণ্ডের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহাদাত হোসেন আজাদীকে বলেন, জঙ্গল সলিমপুরে আড়াই থেকে তিন হাজার পরিবার বসবাস করে। এ সব পরিবারে প্রায় ২০ হাজার মানুষ রয়েছে। যাদের মধ্যে ভোটার রয়েছে ৭ হাজার। এলাকাকে ঘিরে সরকারের নেয়া মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ইতিমধ্যে ২৫০ টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। স্বেচ্ছায় অন্যত্র চলে গেছে ৫০ টিরও বেশি পরিবার। আমরা আশা করছি, অবৈধভাবে বসবাস করা বাকিরাও স্বেচ্ছায় চলে যাবে। অবৈধভাবে তারা তো সরকারের জায়গায় থাকতে পারেন না। তাদের মধ্যে যারা প্রকৃত ভূমিহীন তাদেরকে পুনর্বাসন করা হবে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জঙ্গল সলিমপুরের বাসিন্দাদের জীবনযাপনের চিত্র পাল্টে গেছে। আগে তারা স্বাধীনভাবে চলে ফেরা করে আসলেও বর্তমানে তারা সেটি পারছেন না। এলাকায় প্রবেশ করতে হলে পুলিশের চেকপোস্টের মুখোমুখি হতে হচ্ছে নিয়মিত। দৈনিক বিদ্যুৎ থাকছে ১২-১৩ ঘণ্টা। পানিরও পর্যাপ্ত উৎস নেই। চারদিকে শুধুই আতংক। এ অবস্থায় কী করবে তা ভেবে পাচ্ছে না লোকজন। তারা বলছেন, ভূমিমন্ত্রী গিয়ে বলেছেন, তারা যেখানে আছেন সেখানে থাকবেন। তাদেরকে সেখানেই পুনর্বাসন করা হবে। এর আগে তাদেরকে উচ্ছেদ করা হবে না। অথচ এখন তাদেরকে নানাভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। ষাটোর্ধ্ব নজরুল মিয়া বলেন, এ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছি। এখন কোথায় যাব আমরা। প্রশাসন হঠাৎ এমন আচরণ করছে কেন? প্রশাসন আমাদের সাথে অন্যায় করছে। জীবনযাপন করতে আমাদের খুব কষ্ট হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধডিজেল ও চাল আমদানিতে শুল্ক কমাল সরকার
পরবর্তী নিবন্ধসাবেক সিভিল সার্জন সরফরাজ খান কারাগারে