সরদার জয়েন উদ্দীন : সমাজমনস্ক কথাশিল্পী

| মঙ্গলবার , ২২ ডিসেম্বর, ২০২০ at ১০:২৭ পূর্বাহ্ণ

বাংলা সাহিত্যে সরদার জয়েন উদ্দীন বিশিষ্ট কথাশিল্পী হিসেবে সুপরিচিত। কর্মজীবনে তিনি নানান পত্র-পত্রিকার সাথে যুক্ত ছিলেন। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলা একাডেমি, জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্র এবং বাংলাদেশ টেস্ট বুক বোর্ডসহ বেশ কিছু বিদ্বৎ প্রতিষ্ঠানের উচ্চপদস্থ পদে। আজ কথাশিল্পীর ৩২তম মৃত্যুবার্ষিকী।
সরদার জয়েনউদ্দীন জন্মেছেন ১৯১৮ সালে পাবনা জেলার কামারহাটি গ্রামে। পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে প্রথমে সেনাবাহিনির হাবিলদার পদে যোগ দেন। কিন্তু সামরিক বাহিনির কঠোর অনুশাসনের প্রথাবদ্ধ জীবন ভালো লাগে না। সেখান থেকে অব্যাহতি নিয়ে ঢাকায় নতুন কর্মজীবন শুরু হয় পত্রিকা অফিসে। পাকিস্তান অবজারভার, দৈনিক সংবাদ এবং দৈনিক ইত্তেফাকে তিনি বিজ্ঞাপন বিভাগে কাজ করেছেন। পরবর্তীকালে বাংলা একাডেমির বিক্রয় ও প্রকাশন শাখার সহকারী অফিসার, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের রিসার্চ অফিসার এবং বাংলাদেশ টেকস্ট বুক বোর্ডের ঊর্ধ্বতন বিশেষজ্ঞের দায়িত্ব পালন করেন। কর্মজীবনেই তিনি রচনা করেছেন বেশ কিছু উপন্যাস, ছোটগল্প ও শিশু-কিশোর গ্রন্থ। উপন্যাসগুলোর মধ্যে রয়েছে: ‘আদিগন্ত’, ‘পান্নামতি’, ‘নীল রং রক্ত’, ‘অনেক সূর্যের আশা’, ‘বেগম শেফালী মীর্জা’, ‘শ্রীমান তালেব আলী ও শ্রীমতী কখ’ এবং ‘বিধ্বস্ত রোদের ঢেউ’। ‘অনেক সূর্যের আশা’ উপন্যাসের জন্যে জয়েনউদ্দীন ১৯৬৭ সালে আদমজী পুরস্কার লাভ করেন।
উল্লেখযোগ্য ছোটগল্প: ‘নয়নঢুলি’, ‘বীরকন্যার বিয়ে’, ‘খরস্রোত’, ‘বেলা ব্যানার্জীর প্রেম’, ‘অষ্টপ্রহর’। আর শিশু সাহিত্যের মধ্যে রয়েছে: ‘অবাক অভিযান’, ‘উল্টো রাজার দেশ’, ‘আমরা তোমাদের ভুলব না’ ইত্যাদি। তাঁর রচনার প্রধান উপজীব্য ব্যক্তি ও সমাজ, জীবন সংগ্রাম, সমকালীন সমাজ সংকট, জমিদার ও মহাজনদের শোষণ, সর্বোপরী গ্রামের অবহেলিত মানুষের বেদনা আর বঞ্চনার চিত্র।
তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার পান ১৯৬৭-তে। ১৯৮৬ সালের ২২ ডিসেম্বর সরদার জয়েনউদ্দীন প্রয়াত হন।

পূর্ববর্তী নিবন্ধএই দিনে
পরবর্তী নিবন্ধপদ্মা সেতু পাল্টে দেবে দেশের অর্থনীতি