সরকারের গম নিয়ে চার দিন ধরে বসে আছে জাহাজ

ড্রাফট সার্ভে করতে না দেওয়ায় খালাস হচ্ছে না

আজাদী প্রতিবেদন | সোমবার , ১১ অক্টোবর, ২০২১ at ৫:৫৪ পূর্বাহ্ণ

সরকারের গম নিয়ে আসা একটি মাদার ভ্যাসেল চার দিন ধরে অলস বসে আছে। একই সাথে জাহাজটি থেকে গম খালাস করতে যাওয়া তিনটি লাইটারেজ জাহাজও বহির্নোঙরে ভাসছে। জাহাজটিতে ড্রাফট সার্ভে করতে না দেওয়ায় কাজ শুরু করা সম্ভব হচ্ছে না। এদিকে আজ ও আগামী বুধবার ৭৭ হাজার টন গম নিয়ে রাশিয়া থেকে আরও দুটি মাদার ভ্যাসেল চট্টগ্রামে আসছে। সময়মতো এসব গম খালাস না হলে জটলা হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
সূত্র জানিয়েছে, রাশিয়া থেকে সরকারিভাবে আমদানিকৃত গম নিয়ে এমভি আকিজ মুন নামের একটি মাদার ভ্যাসেল গত ৬ অক্টোবর চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পৌঁছে। জাহাজটিতে ৫৪ হাজার ৫০ টন গম রয়েছে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে কত টন গম রয়েছে তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কাস্টমস, সরবরাহকারী ও জাহাজের এজেন্টের পক্ষ থেকে তিনজন সার্ভেয়ার গিয়ে যৌথভাবে ড্রাফট সার্ভে করেন। সার্ভে থেকে নিশ্চিত হওয়া যায় জাহাজে কত টন পণ্য রয়েছে। ঘোষণা অনুযায়ী পণ্য রয়েছে নাকি কম রয়েছে তা নিশ্চিত হতে এই সার্ভের বিকল্প নেই। এমভি আকিজ মুনে প্রকৃতপক্ষে কী পরিমাণ গম রয়েছে তা নিশ্চিত না হওয়ায় গম খালাস করছে না খাদ্য বিভাগ।
জাহাজের ক্যাপ্টেনের পক্ষ থেকে বলা হয়, জাহাজটি লোডিং পোর্টে সার্ভে করা হয়েছে। ওই সার্ভে রিপোর্ট প্রদান করা হয়। কিন্তু তাতে দেখা যায়, জাহাজটিতে ২৬১ টন গম কম রয়েছে। অর্থাৎ জাহাজে গম রয়েছে ৫৩ হাজার ৭৮৯ টন। কিন্তু একাধিক সার্ভেয়ার নাম প্রকাশ না করার শর্তে লোডিং পোর্টের সার্ভে রিপোর্ট নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে বলেন, প্রকৃতপক্ষে একটি পণ্য বোঝাই জাহাজকে বিভিন্ন পয়েন্টে সার্ভে করতে হয়। কুতুবদিয়া পৌঁছার পর সার্ভে করে কী পরিমাণ পণ্য এনেছে তা দেখা হয়। এরপর আউটারে পণ্য লাইটারিং করা হলে সেখানে আবার সার্ভে করা হয়। সাইলোতে পণ্য খালাসের ব্যাপার থাকলে সেখানেও সার্ভে করা হয়। অথচ এমভি আকিজ মুন জাহাজটি চট্টগ্রামে আসার পর সার্ভে করতে দেওয়া হচ্ছে না। ফলে জাহাজটি থেকে গম খালাস করতে যাওয়া এমভি হালিম স্বপন-২, এমভি খান বাহাদুর জিয়াসামস ও এমভি আল আশুয়াদ নামের তিনটি লাইটারেজ জাহাজ তিন দিন ধরে অলস ভাসছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা গতকাল আজাদীকে জানান, এমভি আকিজ মুন জাহাজে কাজ শুরু হয়নি। আজ ৪২ হাজার টন গম নিয়ে এমভি প্যানরমর্টিজ এবং আগামী ১৩ অক্টোবর এমভি ব্রেসলেট নামের অপর একটি জাহাজ ৩৫ হাজার টন গম নিয়ে বহির্নোঙরে পৌঁছবে। ১ লাখ ২০ হাজার টনেরও বেশি গম নিয়ে আসা তিনটি জাহাজ থেকে দ্রুত গম খালাস করা না হলে জটলা তৈরি হবে।
এ প্রসঙ্গে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের (ডব্লিউটিসি) একজন কর্মকর্তা বলেন, জাহাজটিতে সার্ভে করতে না দেওয়ায় গম খালাস করা হচ্ছে না। আমাদের তিনটি জাহাজ নিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে ড্রাফট সার্ভে সম্পন্ন হলে গম খালাস শুরু হবে।
খাদ্য বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, দেশে বর্তমানে গমের চাহিদা অনেক বেশি। মজুদও কমে আসছে। এই অবস্থায় দ্রুত গম খালাস করে তা বিভিন্ন খাদ্যগুদামে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু জাহাজটির গম খালাসে বিলম্ব হওয়ায় সবকিছুতে সংকট তৈরি হচ্ছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধকৌতুক কণিকা
পরবর্তী নিবন্ধমৌসুমেও সস্তায় বিপিসির বিটুমিন