সময়ের শব্দ পারভীন রব্বানী

| বৃহস্পতিবার , ১৯ মে, ২০২২ at ৮:১৫ পূর্বাহ্ণ

হৃদয়ে ক্রমাগত জল পতনের শব্দ শুনতে পাই। কখনো নায়াগ্রা জলপ্রপাতের দুর্দান্ত অস্থির রূপে, কখনো বা জমে থাকা জল হয়ে চুপি চুপি ফোঁটা ফোঁটা নোনতা সুখে। দিন যায়, রাত আসে.. রাত যায়, দিন আসে.. সময়ের সাথে সাথে বয়সও পা বাড়ায়। শরীর ও মস্তিষ্কে চলে নানারকম লুকোচুরি খেলা। প্রাকৃতিক নিয়মে একটি শিশু আস্তে আস্তে শৈশব, কৈশোর, যৌবন পেরিয়ে বার্ধক্যে উপনীত হয়। যৌবন ও বার্ধক্যের সুখদুঃখ, চাওয়াপাওয়ার ফারাক ভিন্ন। যৌবনে যা খোলামকুচির মতন উড়িয়ে দেওয়া যায়, বয়স হতে হতে তা আঁকড়ে ধরার প্রচেষ্টা চলে। যদিও বয়স কেবলই সংখ্যা মাত্র। মনের তারুণ্য ও উচ্ছ্বাস বয়সের মলিনতা, বিবর্ণতা ভুলিয়ে দেয়। ১৮ বছর বা ২৫ বছরের স্পর্ধা, ঔদ্ধত্য ৭০ বছরে মানায় না ঠিকই কিন্ত মনের উঠোন জুড়ে ভোরের স্নিগ্ধতাও হারায় না। যত্নেঅযত্নে বয়স তরতরিয়ে বাড়তে থাকে। তা নিয়ে

দুর্ভাবনার প্রয়োজন নাই। প্রতিটা বয়সের একটা নিজস্বতা আছে, ভঙ্গি আছে। আলাদা সৌন্দর্য আছে, আলাদা মাধুর্য আছে। কিছু হারানোর, কিছু পাওয়ার, অসীম ধৈর্যের সুখানুভূতিও কম নয়। বয়স হতে হতে পরিবার যেমন বড় হতে থাকে, তেমনি পরিবারের প্রতি দায়িত্বও বাড়ে। সেই দায়িত্বের মধ্যে যেমন আছে দুঃশ্চিন্তা, দুর্ভাবনা তেমনি আছে আনন্দ, পূর্ণতা। রোগ, শোক, জ্বরা, ব্যাধিযে কোন বয়সেই হতে পারে। তাই বয়সের দোহাই দিয়ে নিজেদেরকে হতাশাগ্রস্ত করে সমস্ত আনন্দ আয়োজন থেকে নিজেকে বঞ্চিত করার মানে নাই। প্রাকৃতিক নিয়মে বয়স হতে হতে বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের কার্য ক্ষমতা কিছুটা কমে যায়। কিন্ত প্রাণশক্তি, প্রাণপ্রাচুর্য এই কমতি কে পরাস্ত করতে বাধ্য করে। মনের যৌবন অন্য মনেও সঞ্চালিত হয়। তাই যতই বয়স বাড়তে থাকুক, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয় স্বজন নিয়ে হৈ হুল্লোড় করে জীবনকে উপভোগ করুন। বয়সের সাথে সাথে নিজেকে সাজান, নিজেকে নতুন ভাবে আবিষ্কার করুন, চারিপাশের পরিবেশকে বদলে ফেলুন। রবীন্দ্রনাথের কথার সাথে সুর মিলিয়ে বলি, ‘বাহির হলেম আমি আপন ভিতর হতে,/ নীল আকাশে পাড়ি দেব খ্যাপা হাওয়ায় স্রোতে।’

পূর্ববর্তী নিবন্ধভাবনাকে এগিয়ে নিতে হবে স্বপ্নপূরণের পথে
পরবর্তী নিবন্ধবঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ শেখ হাসিনা : সত্যের সারবত্তা